চ্যাম্পিয়নস লিগ: শেষ ষোলোর ড্র কাল, কোন দল কার মুখোমুখি হতে পারে
Published: 20th, February 2025 GMT
শেষ ষোলোর শেষ আটটি দলকে পেয়ে গেল উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ। ৩৬ দলের লিগ পর্ব শেষে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ আট দল সরাসরি উঠে যায় শেষ ষোলোতে। নবম থেকে ২৪তম ১৬টি দল খেলে প্লে-অফ। মঙ্গলবার ও বুধবার রাতে প্লে-অফ পর্বের দ্বিতীয় লেগ শেষে আটটি দল উঠে গেছে শেষ ষোলোতে।
এবার শেষ ষোলোর ড্রয়ের অপেক্ষা। অবশ্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না। আগামীকাল শুক্রবারই যে ড্র। সুইজারল্যান্ডের নিওনে হাউস অব ইউরোপিয়ান ফুটবলে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় শুরু হবে ড্র অনুষ্ঠান।
ড্রতে সরাসরি শেষ ষোলোতে ওঠা আট দল বাছাই এবং প্লে-অফ খেলে ওঠা আট দলকে অবাছাই বিবেচনা করা হবে। তবে এবারের ড্র পুরোপুরি উন্মুক্ত নয়। লিগ পর্বের অবস্থান বিবেচনা করেই নকআউট পর্বের কাঠামো সাজিয়েছে উয়েফা। আর এ কারণেই শেষ ষোলোর সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হিসেবে দুটি দলের নাম জেনে গেছে ক্লাবগুলো। ওই দুই দলের কোনটিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাওয়া যাবে ড্রতে, নির্ধারিত হবে সেটিই। এ মৌসুমে এরপর আর কোনো ড্র নেই। এরপর কে কোন পথে ফাইনালে যেতে পারে, তা নির্ধারিত হয়ে গেছে আগেই।
লিগ পর্বের শীর্ষ আট দল (বাছাই, বন্ধনীতে অবস্থান)লিভারপুল (১), বার্সেলোনা (২), আর্সেনাল (৩), ইন্টার মিলান (৪), আতলেতিকো মাদ্রিদ (৫), বায়ার লেভারকুসেন (৬), লিল (৭) ও অ্যাস্টন ভিলা (৮)। প্লে-অফের বিজয়ীরা (অবাছাই, বন্ধনীতে অবস্থান)বরুসিয়া ডর্টমুন্ড (১০), রিয়াল মাদ্রিদ (১১), বায়ার্ন মিউনিখ (১২), পিএসভি (১৪), পিএসজি (১৫), বেনফিকা (১৬), ফেইনুর্ড (১৯) ও ক্লাব ব্রুগা (২৪)।ড্র কোথায় দেখবেনসনি স্পোর্টস টেন ২ চ্যানেলে সরাসরি দেখা যাবে। এ ছাড়া উয়েফার ওয়েবসাইটও সরাসরি সম্প্রচার করবে।
আরও পড়ুনএমবাপ্পে+ম্যানচেস্টার সিটি= ভালোবাসার গল্প৩১ মিনিট আগেকীভাবে ড্র হবে• লিগ পর্বের অবস্থান অনুযায়ী দলগুলোকে চারটি আলাদা ভাগে করা হয়েছে। যেমন ১ ও ২; ৩ ও ৪; ৫ ও ৬ এবং ৭ ও ৮। এর মানে হলো ১ ও ২ নম্বর দলের ফাইনালের আগে মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অন্য তিন জোড়ার জন্যও একই হিসাব।• ১ ও ২ নম্বর লিভারপুল ও বার্সেলোনা সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ১৫ থেকে ১৮তম দল (টিকে আছে পিএসজি ও বেনফিকা)।
• ৩ ও ৪ নম্বর আর্সেনাল ও ইন্টার মিলানের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ১৩, ১৪, ১৯ অথবা ২০তম দল (টিকে আছে পিএসভি ও ফেইনুর্ড)।
• ৫ ও ৬ নম্বর দল আতলেতিকো ও লেভারকুসেনের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ১১, ১২, ২১ ও ২২ নম্বর দল (রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন টিকে আছে)।
• ৭ ও ৮ নম্বর দল লিল ও অ্যাস্টন ভিলার সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ৯, ১০, ২৩ ও ২৪তম দল (টিকে আছে ব্রুগা ও ডর্টমুন্ড)।শেষ ষোলোর লাইনআপলিভারপুল/বার্সেলোনা-পিএসজি
লিভারপুল/বার্সেলোনা-বেনফিকা
লিল/অ্যাস্টন ভিলা-ক্লাব ব্রুগা
লিল/অ্যাস্টন ভিলা-বরুসিয়া ডর্টমুন্ড
আতলেতিকো/লেভারকুসেন-রিয়াল মাদ্রিদ
আতলেতিকো/লেভারকুসেন-বায়ার্ন মিউনিখ
আর্সেনাল/ইন্টার মিলান-পিএসভি
আর্সেনাল/ইন্টার মিলান-ফেইনুর্ডকোয়ার্টার ফাইনাল১ (লিভারপুল/বার্সেলোনা-পিএসজি: লিল/অ্যাস্টন ভিলা-ক্লাব ব্রুগা)
২ (আতলেতিকো/লেভারকুসেন-রিয়াল মাদ্রিদ: আর্সেনাল/ইন্টার মিলান-পিএসভি)
৩ (লিভারপুল/বার্সেলোনা-বেনফিকা: লিল/অ্যাস্টন ভিলা-বরুসিয়া ডর্টমুন্ড)
৪ (আতলেতিকো/লেভারকুসেন-বায়ার্ন মিউনিখ: আর্সেনাল/ইন্টার মিলান-ফেইনুর্ড)সেমিফাইনালকোয়ার্টার ফাইনাল (১)- কোয়ার্টার ফাইনাল (২)
কোয়ার্টার ফাইনাল (৩)- কোয়ার্টার ফাইনাল (৪)কবে কোন পর্ব
শেষ ষোলো: ৪/৫ ও ১১/১২ মার্চ
কোয়ার্টার ফাইনাল: ৮/৯ ও ১৫/১৬ এপ্রিল
সেমিফাইনাল: ২৯/৩০ এপ্রিল ও ৬/৭ মে
ফাইনাল: ৩১ মে (মিউনিখ)
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ল অ য স টন ভ ল ক য় র ট র ফ ইন ল ল গ পর ব ফ ইন র ড আতল ত ক অবস থ ন পর ব র প এসজ প এসভ
এছাড়াও পড়ুন:
কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়
রাজধানীর সবুজবাগের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের সঙ্গে থাকা আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁকে ছয় টুকরা করে লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে কাছের একটি ঝোপের ভেতরে পুঁতে রাখা হয়। এর আগে আজহারুল ইসলাম (গ্রেপ্তার) মুঠোফোনে সবুজবাগের ভাইগদিয়ায় তাঁর ভাড়া বাসায় জাকিরকে (৫৫) ডেকে নেন।
গ্রেপ্তার আজহারুল ইসলাম (৩৯) আজ শুক্রবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আদালত তাঁর জবানবন্দি নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী (৪৪), মো. রাজীব (২৬) ও স্বপনকে (২৫) পাঁচ দিন করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং বাকিরা রংমিস্ত্রি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামছুল আমিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় দুপুরে তাঁদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আজহারুল আদালত জবানবন্দি দেন। অপর তিনজন জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে তাঁদের সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, জাকির হোসেনের সঙ্গে তাঁদের চারজনের (আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন) বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরা একসঙ্গে আড্ডা দিতেন। মাঝেমধ্যে জাকিরের সঙ্গে তাঁর ভাইগদিয়ার ভাড়া বাসায় তাঁরা একসঙ্গে মদ্যপান করতেন। ৪ জুন রাতে জাকির নন্দীপাড়ায় শেখের বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফিরছিলেন। তখন আজহারুল মুঠোফোনে জাকিরকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। ওই বাসায় আজহার একা থাকতেন। আগেই জাকির তাঁদের জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা আছে এবং ডেমরার আমুলিয়া পশুরহাট থেকে কোরবানির জন্য গরু কিনবেন। জাকির তাঁর বাসায় পৌঁছানোর পর ওই টাকার ওপর তাঁদের সবার লোভ জাগে। তাঁরা টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে জাকির বাধা দেন। তখন ইস্পাতের পাইপ দিয়ে জাকিরের মাথায় সজোরে আঘাত করেন আজহারুল। এতে জাকির অচেতন হয়ে যান। এ সময় তাঁর কাছ থেকে এক হাজার টাকার দুটি বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে সেই টাকা শুক্কুর আলীর কাছে জমা রাখেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতকে জানান, জাকিরকে বাঁচিয়ে রাখা হলে তাঁরা সবাই ফেঁসে যাবেন—এমন আশঙ্কায় জাকিরকে হত্যা করে লাশ গুম করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাকিরের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এরপর শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন তাঁর শরীর টুকরা টুকরা করেন। পরে লাশের ছয়টি টুকরা রঙের দুটি পাত্রে ভরে একটি অটোরিকশায় করে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় নিয়ে যান। শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন অন্য পথ দিয়ে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় আসেন। তখন তাঁরা সবাই মিলে বালতিভর্তি লাশের টুকরাগুলো পাশের ঝোপে নিয়ে যান। এরপর সেখানে খুঁড়ে লাশের টুকরাগুলো পুঁতে রাখেন।
আজহারুল আদালতকে বলেন, জাকিরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া টাকা ভাগাভাগি করার আগেই তাঁরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, আজহারুলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাহেরচরে। বাকি তিনজন ঢাকার সবুজবাগের ভাইগদিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা।
প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেন সপরিবার সবুজবাগ থানার ভাইগদিয়া এলাকায় থাকতেন। ৪ জুন জাকির হোসেন নিখোঁজ হন। এরপর স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাননি। পরদিন জাকির নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাঁর স্ত্রী রেখা বেগম সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে জাকিরের খোঁজ না পাওয়ায় তিনি ১০ জুন আজহার আলীসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সবুজবাগ থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এলাকার ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত আজহারুলকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আজহারের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত অভিযোগে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে জাকির হোসেনকে ভাইগদিয়ায় দাফন করা হয়।
সবুজবাগ থানার ওসি ইয়াছিন আলী প্রথম আলোকে বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে জাকিরকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করলেও তদন্তে এখন পর্যন্ত এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাকির হত্যায় আরও একজন জড়িত। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।