বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) টানা ১২তম বারের মতো স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৫ বাংলাদেশ পর্বের উদ্যোগ নিয়েছে।

উদ্যোগের বিষয়ে অবহিত করেন বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির, কমিটির সদস্য (প্রশাসন) ইমরুল কায়েস পরাগ, মোস্তাইন বিল্লাহ ও এ এইচ এম রোকমুনুর জামান রনি। নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ পর্বের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করবেন মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান ও আরিফুল হাসান অপু।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা নাসার উদ্যোগে আয়োজিত হয় নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ। প্রতিযোগিতায় টানা তিনবার ও সব মিলিযে চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস  অ্যাডমিনিস্ট্র্রেশন (নাসা) বহির্বিশ্বের ১৮৫টি দেশের প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, ডিজাইনার, আর্টিস্ট, শিক্ষাবিদ, উদ্যোক্তাদের মতো বিশেষক্ষেত্রে মেধাবী তরুণদের একত্রিত করে বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে এমন উদ্যোগ।

প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের ৯টি শহর (ঢাকা, চট্রগ্রাম সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা) থেকে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে হ্যাকাথনের বাংলাদেশ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বিগত ১১ বছরে সারাবিশ্বে এ প্রতিযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জকে কেন্দ্র করে দেশের কযেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নানাবিধ কার্যক্রম চলবে। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ধারণাকে উৎসাহিত করতে থাকবে কর্মশালা ও বিষয়ভিত্তিক সভা।

অন্যদিকে, অংশগ্রহণকারীদের দক্ষতা ও ডেটা বিশ্লেষণ সক্ষমতা উন্নয়নে অনলাইনে ডেটা বুট ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে। প্রতিযোগিতায় আগ্রহী সব দলের জন্য বিশেষ সুবিধা হিসেবে তাদের প্রকল্প প্রস্তুতিতে সহায়তার জন্য বিশেষজ্ঞ মেন্টরের সঙ্গে যুক্ত করা হবে, যাতে তারা মূল হ্যাকাথনের জন্য নিজেদের প্রজেক্টকে যথাযথভাবে উপস্থাপন  করতে পারে।

অংশ নেওয়া প্রতিটি দলকে প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়া হবে, যা তাদের উদ্ভাবনী ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। আগ্রহীরা (https://nsac.

basis.org.bd) লিঙ্কের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারবেন।

রাফেল কবির বলেন, বাংলাদেশের উদ্ভাবনী শক্তি ও প্রযুক্তি দক্ষতাকে বহির্বিশ্বের মঞ্চে তুলে ধরতে বেসিস প্রতিবারই নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের আয়োজন করে আসছে। আমরা আশাবাদী, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে বিশ্বকে মুগ্ধ করবে। প্রতিযোগিতা থেকে আমরা নতুন অনেক কিছু শিখি। নতুন অনেক উদ্ভাবন বের হয়ে আসে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সব ক্ষেত্রে ভালো করছে। মহাকাশ গবেষণায় আমাদের শিক্ষার্থীরা আগামীতে নেতৃত্ব দেবে বলে বিশ্বাস করি।

মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান বলেন, নাসা স্পেস  অ্যাপস চ্যালেঞ্জে এবার দুই লাখ শিক্ষার্থীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত করার সঙ্গে সরাসরি ও প্রতিযোগিতায় যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। উদ্যোগটি শুধু প্রতিযোগিতা নয় বরং উদ্ভাবনী চিন্তাধারা ও বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের দৃশ্যমান প্ল্যাটফর্ম।

কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠেয় কর্মশালা ও সভা শিক্ষার্থীদের চিন্তাভাবনা ও সমস্যার সমাধানে নতুন পথ প্রদর্শন করবে। অনলাইনে ডেটা বুথ ক্যাম্প ও বিশেষজ্ঞ মেন্টরের সহায়তা তাদের প্রকল্প উন্নয়নে সহায়ক হবে। প্রযুক্তি শিক্ষায় অগ্রগতির মাপকাঠি হিসেবে এ ধরনের প্রতিযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম ইতোমধ্যে বহির্বিশ্বে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। এখন আমাদের সময় এসেছে বিশ্বকে দেখানোর যে, আমরা সৃজনশীলতা ও কারগরি সমস্যার যে কোনো সমাধানে কতটা দক্ষ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

কথিত সংস্কার কাদের জন্য, কিসের জন্য: মাহমুদুর রহমান মান্না

‘এরা সংস্কারের কথা বলে, কিন্তু বাজেটে তার প্রতিফলন নেই। অর্থনীতিতে নেই, পুলিশের কোনো সংস্কার হচ্ছে না, শিক্ষায় নেই, কোথাও নেই। তাহলে এই সংস্কারটা কী?’ এ প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টা নিয়ে আরও প্রশ্ন তুলে মান্না বলেছেন, ‘টাস্কফোর্স আছে, কিন্তু তার কোনো মূল্য নেই। পুলিশ বা প্রশাসনে কী সংস্কার হচ্ছে, সেটাও জানানো হচ্ছে না। কোনো কমিটি পর্যন্ত নেই। তাই প্রশ্ন জাগে, এই কথিত সংস্কার কাদের জন্য, কিসের জন্য?’

আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন মান্না। ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কল্যাণ রাষ্ট্রের ভাবনায় বাজেট ২০২৫-২৬’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।

আলোচনায় বাজেট নিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বৈষম্য নিরসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। বাজেট না হয়ে এটা রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিফলন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে এমন কোনো কথা হয়েছে কি না, যেটা বাইরে বলা যাবে না, সেই প্রশ্ন করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি। এরপরও নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মান্না।

নির্বাচন ছাড়া যাওয়ার কোনো পথ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বা ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি হঠাৎ কিছু ঘটিয়ে দেয়, সেটা বলা যায় না। কিন্তু আমরা তো জানি, সেই ঘটনা ঘটলেও নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ নাই। সেই অর্থে মাইনাস নির্বাচন-এমন ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। নির্বাচন ইস্যুতে বরফ জমে ছিল, এখন সেটি গলতে শুরু করেছে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মান্না বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল ওই তারিখে নির্বাচন হতে পারবে না। সরকার বলেছিল একমাত্র ওই দল বিরোধিতা করছে। এখন যেভাবে কথা হচ্ছে, মনে হচ্ছে বরফ গলছে। আমি এটা ইতিবাচক মনে করি। আমি গণতন্ত্র চাই, সেই জন্যই নির্বাচনের ওপর এত জোর দিচ্ছি।’

পাচার করা অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ঘাটতি দেখছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর যেখানেই যাই কেউ তো আমাদের ফেরত দিচ্ছে না। সবাই আমাদের ডাকছে আসো, তোমাদের কী লাগে সংস্কারের জন্য, কী করতে হবে, দেশটা বদলাবার জন্য কী করতে হবে, একদম সর্বোচ্চ জায়গা থেকে বলা হয়েছে। অথচ দেখলেন এই পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনবার জন্য ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী (যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার) কী আচরণ করলেন। উনি ঠিক করেছেন নাকি আমরা কোনো কথাবার্তা না বলে গেছি?’

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। সেখানে লিখিত বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল বাসার হাওলাদার প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ