বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “আগামী দিনের বাংলাদেশের যে সংস্কার কার্যক্রম হবে সেটি হতে হবে সংসদে, সুতরাং এখন সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করবেন না। সারাদেশে ধানের শীষের জোয়ার উঠে গেছে, এ জোয়ার কেউ রুখতে পারবে না। কেউ যদি মনে করে ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখবে, এমন কোন শক্তি নেই। হাসিনা-এরশাদ চেষ্টা করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এই বিএনপি মানুষ হৃদয়ে ধারণ করেছে। আমাদের অস্থা জনগণের উপর। যাদের আস্থা নেই তাদের বলছি, মাঠে গিয়ে আস্থা ফেরাতে চেষ্টা করুন।”

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লক্ষ্মীপুর আউটার স্টেডিয়ামে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “অন্য মতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে, উচ্ছৃঙ্খলতা চলবে না, রাজনীতিতে সহনশীলতা ও সম্মানবোধ থাকতে হবে শুধূ সংস্কার দিয়ে রাজনীতি বদলানো যাবে না, রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলাতে হবে, তা যদি না বদলায় তাহলে সংস্কার দিয়ে কিছু হবে না। সহ্যের, ধৈর্যের, সহনশীলতার এবং অপরের প্রতি সম্মানবোধসহ তারেক রহমানের ৩১ দফাকে ধারণ করে সকলের জন্য সমান বাংলাদেশ গঠনের বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই।” 

তিনি আরো বলেন, “বর্তমান সরকার হচ্ছে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত বাংলাদেশ একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে নিয়ে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। তার বাইরে তাদের আর কিছু করার ক্ষমতা নেই। যেসব বিষয়ে ঐক্যমত রয়েছে সেগুলো করতে এক সময়ের বেশি সময় লাগবে না। সুতরাং এসমস্ত কথা বলে বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার যে ষড়যন্ত্র করছেন সে ষড়যন্ত্রকে আমাদের রুখে দিতে হবে।”

সমাবেশে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ (ভিপি হারুন) ও ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নুর নবী প্রমুখ।


নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষনা, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোনায়েম মুন্না। 

জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু ও যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন আহমদ ও কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

যুগ্ম মহাসচিব এ্যানি বলেন, “অদৃশ্য শক্তি আমাদের দিনের আলোতে হত্যা করতে চায়, থাবা মারতে চায়। কোন কারণে যদি নির্বাচন না হয়, তাহলে আমাদের সব আন্দোলন সংগ্রাম বৃথা যাবে। জনগণের টার্গেট নিয়ে আমরা যে ১৬-১৭ বছর আন্দোলন করেছি, সব শেষ জুলাই বিপ্লবে। সব কিছু শেষ হয়ে যাবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবুল খায়ের ভুঁইয়া বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে, আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে, কারা করেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।”

এসময় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষকদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলের জেলা- উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিটের অর্ধ লক্ষাধিক নেতা-কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।

ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’

কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?

এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।

আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন ১৮ কোটি মানুষের দাবি: জামায়াত
  • ‘ভোটারদের আস্থা নিশ্চিত করা বিএনপির দায়িত্ব’
  • পটুয়াখালীতে সালিস বৈঠকে অংশ নিলে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএনপি
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • ‘স্বৈরাচারের পতন হলেও ষড়যন্ত্রের অবসান হয়নি’
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি