ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। তাঁর নাম হাদি মাতার। শুক্রবার তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেন নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের চাটাউকুয়া কাউন্টির আদালত।

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ২৭ বছর বয়সী হাদি মাতার নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা। তাঁকে ৩০ বছরের বেশি সময় কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হতে পারে। চাটাউকুয়া কাউন্টির আদালতে দুই সপ্তাহ শুনানির পর তাঁকে রুশদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। আগামী ২৩ এপ্রিল হাদি মাতারের সাজা ঘোষণা তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

২০২২ সালের ১২ আগস্ট নিউইয়র্কের শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে সালমান রুশদির ওপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারী মঞ্চে উঠে রুশদি ও তাঁর সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী ব্যক্তির ওপর হামলা চালান। রুশদির মুখমণ্ডলে ও ঘাড়ে বেশ কয়েকবার ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তিনি এক চোখের দৃষ্টি হারান। তাঁর একটি হাতের কর্মক্ষমতাও চলে গেছে।

হামলার দিন রুশদির সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন হেনরি রিস। হামলায় তিনিও মাথায় আঘাত পান। এই হামলার জন্যও হাদি মাতারকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

রুশদি ১৯৮১ সালে তাঁর লেখা বই ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। কিন্তু ১৯৮৮ সালে তাঁর চতুর্থ বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্য তাঁকে ৯ বছর আত্মগোপনে থাকতে হয়েছিল।‘স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে বলে মনে করেন মুসলিমরা। এটি প্রকাশের পর থেকে সালমান রুশদি হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন।

বইটি প্রকাশের এক বছর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সালমান রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেন। সেই সঙ্গে তাঁর মাথার দাম হিসেবে ৩ মিলিয়ন (৩০ লাখ) ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন

মাকিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে চুক্তি বাতিলকারী দেশগুলোর জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা নিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর তার সেই বার্তাটি হচ্ছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দাঙ্গাবাজ দেশ, যাকে বিশ্বাস করা যায় না।

শুল্ক স্থগিতাদেশের সময় চীন ছাড়া সবদেশকে বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য ট্রাম্প যে ৯০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন, সেই সময়ের মধ্যে চীনা কর্মকর্তারা বিদেশী সরকারগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঠেলে দেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, একবার এই চুক্তিগুলো কার্যকর হয়ে গেলে, তিনি চান মার্কিন মিত্ররা ‘একটি দল হিসেবে চীনের সাথে যোগাযোগ করুক’, যাতে মার্কিন পক্ষ আলোচনায় আরো বেশি সুবিধা পায়।

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যন্ত মার্কিন মিত্ররা নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটনের উপর নির্ভর করে এবং অর্থনৈতিকভাবে ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করার জন্য তাদের উৎসাহ রয়েছে। অবশ্য চীন আরো সমান তালে শুল্ক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্পের শেষ বাণিজ্য যুদ্ধের পর থেকে বেইজিং মার্কিন রপ্তানি থেকে তার অর্থনীতিকে মুক্ত করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশটিতে নিবেদিতপ্রাণ এবং সক্রিয় সৈন্য সংখ্যার বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক বাহিনী রয়েছে।

শি ট্রাম্পের সাথে ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং তার সরকার ‘পাল্টাপাল্টি’ শুল্ক বাতিলের দাবি জানাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলছে যে, অন্য পক্ষ, অর্থাৎ চীনকে উত্তেজনা কমানোর প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে, চীন নিজেকে নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থার একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে উপস্থাপন করছে এবং অন্যান্য দেশকে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে।

সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর আমেরিকান স্টাডিজের পরিচালক উ জিনবো বলেন, “এটি কেবল চীন-মার্কিন সম্পর্কে নয়। এটি আসলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে।”

গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতিবিদদের সাথে দেখা করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া উ জানান, অন্যান্য সরকারেরও বুঝতে হবে বেইজিংয়ের প্রচেষ্টা তাদের উপকার করেছে। 

তিনি বলেন, “যদি চীন আমেরিকার বিরুদ্ধে না দাঁড়াত, তাহলে আমেরিকা কীভাবে তাদের ৯০ দিনের বিরতি দিত।  চীনের উপর শুল্ক আরোপের ফলে ট্রাম্প অন্যান্য দেশের উপর শুল্ক আরোপ বন্ধ করার জন্য আবরণ পেয়েছেন। তাদের এটা উপলব্ধি করা উচিত।”

চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই সোমবার ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ব্রিকস ব্লকের দেশগুলোকে ট্রাম্পের দাবি প্রতিহত করার জন্য বেইজিংয়ের সাথে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। 

তিনি বলেছেন, “আপনি যদি নীরব থাকেন, আপস করেন এবং পিছু হটতে চান, তাহলে এটি কেবল বুলিকে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।”

তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘন্টা পরে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইংরেজি সাবটাইটেলসহ একটি ভিডিওতে ওয়াশিংটনকে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, গত শতাব্দীতে জাপানি রপ্তানি সীমিত করার মার্কিন পদক্ষেপ তোশিবার মতো কোম্পানিগুলোকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

ওয়াং ই বলেছেন, “একজন ধর্ষকের কাছে মাথা নত করা ঠিক তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বিষ পান করার মতো, এটি কেবল সংকটকে আরো গভীর করে তোলে। চীন পিছু হটবে না যাতে দুর্বলদের কণ্ঠস্বর শোনা যায়।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
  • ৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
  • জলবায়ু সংকট ন্যায়বিচার সংশ্লিষ্ট সংকটও বটে: প্রধান বিচারপতি
  • ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ ফিউশন খাবার উপস্থাপনা
  • পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন