ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবার বাজারে নিয়ে এলো তাদের অত্যাধুনিক ট্যাবলেট পিসি ‘ওয়ালপ্যাড ১০এইচ প্রো ম্যাক্স’।

স্টাইলিশ ডিজাইন ও শক্তিশালী পারফরম্যান্সের অনন্য সংমিশ্রণে তৈরি ওয়ালটনের নতুন এই ট্যাব গেমিং, মাল্টিটাস্কিং, বিনোদন, অফিসের কাজ কিংবা অনলাইন ক্লাস—সব ধরনের ব্যবহারের জন্য একদম পারফেক্ট। ডার্ক গ্রে এবং হোয়াইট সিলভার রঙের এই ট্যাবটির মূল্য ২৪,৫৫০ টাকা। ট্যাবের সঙ্গে গ্রাহকরা পাচ্ছেন কিবোর্ড এবং ফ্লিপ কভার একদম ফ্রি।

ওয়ালটন কম্পিউটারের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ জানান, ন্যানো ম্যাটারিয়ালে তৈরি মেটালিক বডির মাত্র ৭.

৮ মিলিমিটারের সুপার-স্লিম ট্যাবটিতে হেয়ারলাইন ফিনিশিং থাকায় ব্যবহারকারী প্রিমিয়াম ফিল পাবেন। নতুন এই ট্যাবে রয়েছে মিডিয়াটেক হেলিও জি৯৯ প্রসেসর এবং মালি-জি৫৭ এমসি২ জিপিইউ, যা গেমিং কিংবা মাল্টিমিডিয়া ব্যবহারে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স প্রদান করে। এর ১০.৩৬ ইঞ্চির আইপিএস ডিসপ্লে এবং ফুলএইচডি (২০০০ বাই ১২০০) রেজুলেশনের কারণে ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা হবে আরো প্রাণবন্ত। এই ডিভাইসটিতে ক্যাপাসিটিভ ১০ পয়েন্ট টাচ এবং ইন-সেল ফুল ল্যামিনেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা টাচ রেসপন্সকে করে তোলে আরো নিখুঁত ও দ্রুত।

আরো পড়ুন:

ওয়ালটন কাপ গলফ টুর্নামেন্ট সোমবার শুরু

ওয়ালটন পণ্য কিনে আবারো মিলিয়নিয়ার হওয়ার সুযোগ

ফটোগ্রাফি ও ভিডিও কলের জন্য এতে রয়েছে ১৩ মেগাপিক্সেল অটোফোকাস ব্যাক ক্যামেরা এবং ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। দীর্ঘ সময় ব্যবহার নিশ্চিত করতে এতে ৮০০০ এমএএইচ লিথিয়াম-আয়ন পলিমার ব্যাটারির সঙ্গে ১৮ ওয়াটের টাইপ-সি পিডি প্লাস ফাস্ট চার্জিং ফিচার রয়েছে, যা গ্রাহকদের দ্রুত চার্জিং এর পাশাপাশি বার বার চার্জ দেওয়ার ঝামেলা থেকে মুক্তি দেবে।

নিরবচ্ছিন্ন কানেক্টিভিটির জন্য এতে রয়েছে ব্লুটুথ ৫.২, ডুয়াল ব্যান্ড ওয়াই-ফাই এবং ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট। হাইব্রিড সিম স্লট থাকায় এতে মোবাইল নেটওয়ার্কের সুবিধাও পাওয়া যাবে। মেমোরি ও স্টোরেজের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের বাড়তি সুবিধা দিতে এতে ৮ জিবি এলপিডিডিআরফোরএক্স র‌্যাম এবং ১২৮ জিবি স্টোরেজের সঙ্গে টিএফ কার্ডের মাধ্যমে ২৫৬ জিবি পর্যন্ত এক্সপ্যান্ডেবল স্টোরেজ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ট্যাবটিতে ৪টি স্পিকার থাকায় দুর্দান্ত অডিও-ভিজ্যুয়াল এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যাবে।

‘ওয়ালপ্যাড ১০এইচ প্রো ম্যাক্স’ এখন ওয়ালটন প্লাজা থেকে ক্রয়ের পাশাপাশি গ্রাহকরা ওয়ালটনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://waltondigitech.com/products/tablet/android-tab/walpad-10h-pro-max) ভিজিট করে অনলাইনে সরাসরি অর্ডার করার সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

ঢাকা/অগাস্টিন সুজন/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা

লরা উলভার্ট- দক্ষিণ আফ্রিকা নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। বয়স মাত্র ছাব্বিশ, কিন্তু মনের দৃঢ়তায় যেন পাহাড়। এবারের ২০২৫ নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন প্রোটিয়া আশার একমাত্র আলোকবর্তিকা। নিজের একক নৈপুণ্যে, এক অসম্ভব সাহসিকতায় দলকে টেনে তুলেছিলেন ফাইনালের মঞ্চে।

সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলে ফেলেছিলেন ১৬৯ রানের অনবদ্য ইনিংস। যেন একক নাটকের একমাত্র নায়িকা তিনি। আর ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন হিমালয়ের মতো দৃঢ় হয়ে। একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন অনবদ্যভাবে। শতরান ছুঁয়ে যখন আকাশে ছুড়লেন ব্যাট, তখন মনে হচ্ছিল, স্বপ্নের ট্রফি যেন হাতের নাগালেই। কিন্তু ক্রিকেটের নির্মম বাস্তবতা! উলভার্ট যখন সাজঘরে ফিরলেন, ঠিক তখনই প্রোটিয়া শিবিরে নেমে এল নীরবতা। জয় হাতছাড়া হলো নিঃশ্বাস দূরত্বে।

আরো পড়ুন:

আরব আমিরাতকে ৪৯ রানে গুঁড়িয়ে ইতিহাস গড়ল যুক্তরাষ্ট্র

মিতালিকে ছাড়িয়ে ইতিহাস গড়লেন মান্ধানা

চোখের কোণে জলের কণা তখনও ঝলমল করছিল। সেটা ঘামের ছিল, নাকি অপূর্ণতার অশ্রু, তা কেউ জানে না। কিন্তু বোঝা যাচ্ছিল, হৃদয়ের গভীরে আগুন জ্বলছে। একটা স্বপ্নের দগ্ধ ছাই হয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা।

তবুও এই ব্যর্থতার মাঝেই উলভার্টের জয় আছে। বিশ্বকাপে তিন ফাইনাল, টানা তিনবার! এবং প্রতিবারই দলের একমাত্র ভরসা ছিলেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপে করেছেন ৯ ম্যাচে ৫৭১ রান, গড়ে ৭১.৩৭। যা নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ। এর আগে অ্যালিসা হিলির ৫০৯ রান ছিল শীর্ষে।

শুরুটা ছিল নিস্তরঙ্গ- প্রথম ম্যাচে মাত্র ৫, পরেরটিতে ১৪। কিন্তু ধীরে ধীরে আগুন জ্বলে উঠল তার ব্যাটে। ভারতের বিপক্ষে ৭০, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৬০, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯০, আর সেমিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬৯। প্রতিটি ইনিংস যেন নিজের সীমাকে ছাপিয়ে যাওয়া একেকটি যাত্রা।

তবে উলভার্টের কীর্তি শুধু এই বিশ্বকাপেই নয়। ২০২৩ ও ২০২৪ দুই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। প্রতিবারই দলকে তুলেছিলেন ফাইনালে। কিন্তু ভাগ্য যেন নিষ্ঠুরভাবে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তার দিক থেকে। তিনটি ফাইনাল, তিনটি পরাজয়।

তবু লরার গল্পটা হারের নয়- এ এক অনমনীয়তার গল্প, এক নিঃসঙ্গ অভিযাত্রার গল্প। যেমন শেরপা অক্সিজেনহীন উচ্চতায় পৌঁছে দেয় অন্যদের। কিন্তু নিজে ফিরে আসে নীরবে, তেমনি উলভার্টও দলের স্বপ্নগুলো কাঁধে তুলে বয়ে নিয়েছেন, একা।

ফাইনাল শেষে ভারতীয় খেলোয়াড়রাও যখন এগিয়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন, তখন বোঝা গেল; এই হার, এই অশ্রু, এই নীরবতা- সবই সম্মানের প্রতীক।

রবিবার ফাইনাল শেষে লরা বলেছেন অনেক কথা। সেখানে হাতাশার কিছু পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেছে প্রেরণা ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস।

“আমি মনে করি, ২০২৩ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (নিউল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত) পর থেকেই আমাদের জন্য অনেক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছিল। সেই সময় থেকেই ঘরোয়া পর্যায়ে কেন্দ্রীয় চুক্তির ব্যবস্থা চালু হয়। আমাদের দলের গভীরতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটা ছিল এক বিশাল পদক্ষেপ।”

“এরপরের (২০২৪ সালের) বিশ্বকাপটা আমাদের দলের নামটা বিশ্ব ক্রিকেটে আরও বড় করে তুলেছে, আমার তাই মনে হয়। এখন আমরা এমন একটি দল, যারা নিয়মিত ফাইনালে পৌঁছাচ্ছে। যেখানে আগে এটা একবারের সাফল্য বলেই ধরা হতো।”

“টানা তিনবার ফাইনালে উঠতে পারাটা সত্যিই গর্বের বিষয়। এটা প্রমাণ করে আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটে এবং দলীয় কাঠামোয় সঠিক দিকেই এগোচ্ছি। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের এই ফলেই আমরা এখানে পৌঁছেছি। আশা করি, আমরা এমন আরও ফাইনাল খেলতে থাকব… আর একদিন, হ্যাঁ, একদিন আমরা অবশ্যই একটা জিতব।”

টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স নিয়ে উলভার্ট বলেন, “আমার মনে হয়, আমাদের এই আসরটা অসাধারণ কেটেছে। ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছানোই একটা বড় সাফল্য। আমরা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ ক্রিকেট খেলেছি। এই বিষয়টা নিয়েই আমি সবচেয়ে বেশি গর্বিত।”

“একপর্যায়ে আমরা টানা পাঁচটা ম্যাচ জিতেছিলাম। যা আমাদের দলের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। দুই দলের মধ্যকার সিরিজগুলোতে আমরা সবসময় এই ধারাবাহিকতা পাই না। তাই বড় মঞ্চে, বড় টুর্নামেন্টে এমন পারফরম্যান্স দিতে পারাটা সত্যিই গর্বের। আমরা প্রমাণ করেছি, বড় আসরে দক্ষিণ আফ্রিকাও এখন বড় দল।” 

সত্যিই তাই। লরার নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন বড় দল। হয়তো একদিন, কোনো এক প্রভাতে, লরা উলভার্ট সেই অধরা ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখবেন। কিন্তু আজকের দিনে, তিনি রয়েছেন বিশ্বকাপের হিমালয়ের চূড়ায়, এক নিঃসঙ্গ শেরপা হয়ে। যিনি নিজের কীর্তিতে চূড়ায় উঠেছেন।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • অ্যালবামের গল্প বলবে ‘পেনোয়া’