সভাপতি-সম্পাদকসহ ৯ পদে বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থীদের জয়
Published: 23rd, February 2025 GMT
কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কার্যকরী কমিটির ১৭টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ ৯টি পদে বিএনপি–সমর্থিত আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা জয়লাভ করেছেন। অন্যদিকে সিনিয়র সহসভাপতিসহ ৬টি পদে জয় পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী–সমর্থিত ল ইয়ার্স কাউন্সিল প্যানেল। সহসাধারণ সম্পাদকসহ দুটি পদে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নির্বাচনে ভরাডুবি ঘটায় হতাশ জামায়াত–সমর্থিত আইনজীবীরা।
গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত জেলা আইনজীবী সমিতি ভবন ও চকরিয়া আদালত ভবনে ভোট গ্রহণ চলে। রাত ১১টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ বাকের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ নুরুল হুদা, মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফেরেদাউস প্রমুখ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ বাকের বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির ৯১৮ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৮৬৭ জন। ১৭টি পদে বিএনপি ও জামায়াত–সমর্থিত দুটি প্যানেলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এবার আওয়ামী লীগ–সমর্থিত আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নেননি।
১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৭ জনের কার্যকরী কমিটিতে চকরিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলা চৌকি আইনজীবী সমিতি থেকে একজন করে মোট তিনজন প্রতিনিধি রাখা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কার্যকরী কমিটির ১৭টি পদের মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৪টি পদে বিএনপি-জামায়াত–সমর্থিত (যৌথ প্যানেলের) প্রার্থীরা জয় পেয়েছিলেন। অন্যদিকে সিনিয়র সহসভাপতিসহ তিনটি পদে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্যানেল সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ থেকে।
কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মো.তাওহীদুল আনোয়ার
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত আইনজ ব সমর থ ত ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
রাজধানীর রমনা থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম ও এস এম গোলাম মোস্তফা আজাদকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।
পিপি ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত এনায়েত করিম চৌধুরী ও এস এম গোলাম মোস্তফাকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মাসুদ ও মোস্তফাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে এনায়েত করিম ওরফে মাসুদ করিমকে গত সোমবার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বাস্তবে তিনি র-এর (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) এজেন্ট। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার মিশন নিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। বর্তমান সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দুটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। সেটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হলে তাঁর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আরও অনেক নতুন তথ্য জানা যাবে। এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিমসহ আর কারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, সেটি জানার জন্য তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
অপরদিকে এনায়েত করিম চৌধুরীর পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনি ৬ সেপ্টেম্বর দেশে এসেছেন, তাঁর আমেরিকায় ফিরে যাওয়ার কথা ১৪ সেপ্টেম্বর। তিনি বাংলাদেশে এসে গুলশানে অবস্থান করছিলেন।
এনায়েত করিম চৌধুরীর আইনজীবী ফারহান এমডি আরাফ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর মক্কেল কোনোভাবেই জড়িত নন। তিনি একজন মার্কিন নাগরিক। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তিনি কোনোভাবে যুক্ত নন।
এর আগে গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরীকে (৫৫) সন্দেহভাজন হিসেবে আটকের পর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার সকালে রাজধানীর মিন্টোরোড থেকে এনায়েত করিম চৌধুরীকে আটক করা হয়। তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, তিনি মার্কিন নাগরিক।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, এনায়েত করিম নিজেকে মাসুদ করিম নামে পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের প্রধান বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। এই পরিচয়ে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখান। ২০১৮ সালের ভোটের আগেও তিনি একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে দেশের বাইরে বৈঠক করেন।
পুলিশ বলছে, গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরী প্রাডো গাড়িতে করে মিন্টোরোড এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। গাড়ি থামিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করার বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে তাঁকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পাশাপাশি সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এনায়েত করিম বলেছেন, বর্তমান সরকার পরিবর্তন করে নতুন জাতীয় সরকার গঠনে কাজ করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর দাবি, তিনি বিশেষ একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার খুব নাজুক অবস্থায় আছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গেও এই সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে বর্তমান সরকারকে পরিবর্তন করতে বাংলাদেশে এসেছেন। সরকারি উচ্চ ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।