বামদের নেতৃত্বে সামাজিক-সাংস্কৃতিক শক্তির ঐক্য দরকার
Published: 23rd, February 2025 GMT
দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অধিক সংকটময় ও অন্ধকারাচ্ছন্ন। শুধু অন্ধকার হলে হয়তো টর্চলাইট ফেলে দেখতে পারা যেত। কিন্তু এ অন্ধকার কুয়াশাচ্ছন্ন ও ধোঁয়ায় ভরা। আলো ফেলে নিকটকেও দেখা যাচ্ছে না। এমন একটি পরিস্থিতিতে পথ চলতে, পা ফেলতে অনেক সতর্ক থাকতে হয়। সামান্য ভুলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে।
কেন বলছি এমন কথা?
জুলাই অভ্যুত্থানের আগে বাংলাদেশের বাস্তবতা ছিল এক রকম। অভ্যুত্থান-উত্তর সে পরিস্থিতি অন্য রকম। তখন বামপন্থিদের সংগ্রামের যে নীতি-কৌশল ছিল, এখন তা বদলে যাওয়াই স্বাভাবিক। এই প্রেক্ষাপটে সংগঠন ও সংগ্রামের নীতি-কৌশল বদল করার বাস্তবতা তৈরি হয়েছে।
কী সেই বাস্তবতা?
তখন সিপিবি-বাসদ ও অন্য বামপন্থিদের নীতি ছিল দ্বিদলীয় ধারা ও পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি বিকল্প ধারা তৈরি করা। কিন্তু এখন একটি প্রধান ধারা আওয়ামী লীগ জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে মাঠে অনুপস্থিত। বিএনপি বিদ্যমান থাকলেও লীগের স্থানে দক্ষিণপন্থি ধর্মান্ধ জামায়াত বসেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমন্বয়কদের প্রস্তাবিত রাজনৈতিক দল। দ্বিদলীয় ধারার স্থানে ত্রিদলীয়/বহুদলীয় ধারা তৈরি হলেও এখানে মধ্যপন্থি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক ধারা অনুপস্থিত। এই শূন্যতা পূরণের দায় এসে পড়েছে বামপন্থিদের ওপর।
সে ক্ষেত্রে কী করতে হবে?
এ ক্ষেত্রে বামপন্থি দলগুলোকে আরও সুসংহত ও সংগঠিত হতে হবে। দলগুলোর মধ্যে সব ধরনের দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে। শুধু তাই নয়; দেশে একটি বৃহত্তর বাম ও মধ্যবাম ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশে বিকল্প রাজনীতির আকাঙ্ক্ষা থাকলেও বাম ও মধ্যপন্থি দলগুলোর শক্তি ও সামাজিক অবস্থার দুর্বলতার কারণে তা হয়ে ওঠেনি। এখন ঐক্যের প্রচলিত ধারার বাইরে সামাজিক শক্তিকে সংগঠিত করার কর্তব্য ও কৌশল সামনে এসেছে।
কেমন হবে সেই ঐক্যের কাঠামো?
প্রচলিত নিছক রাজনৈতিক দলকেন্দ্রিক ঐক্যের ভাবনা থেকে বেরিয়ে একটি দৃশ্যমান কার্যকর ফলভিত্তিক ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সেখানে শুধু রাজনৈতিক দলই থাকবে না; সামাজিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা, জাতি-ধর্ম এবং ব্যক্তি-সংস্থাও থাকতে পারে। এই ধারায় যারা থাকবে তাদের প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
(১) প্রথম ধাপে থাকবে বামপন্থি দলগুলোর ঐক্য। তারা থাকবে বৃহত্তর ঐক্যের কেন্দ্রে এবং এই ঐক্য গঠনের মূল অনুঘটক ও শক্তি।
(২) দ্বিতীয় ধাপে থাকবে মধ্যপন্থি, উদার গণতান্ত্রিক দল ও নীতি-আদর্শের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা-সংগঠন।
(৩) তৃতীয় ধাপে থাকবে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, জাতি-ধর্ম, ব্যক্তি-সংস্থা, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে এই ধাপে যারা যুক্ত হতে পারে; ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সংগঠন, শিক্ষক, ট্রেড ইউনিয়ন, নারী সংগঠন, পরিবেশবাদী, হকার-বেকার, রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক, কৃষক-ক্ষেতমজুর, সৎ ব্যবসায়ী, এনজিও, বিভিন্ন সংস্থা-প্রতিষ্ঠান, বিশিষ্ট ব্যক্তি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব-খেলোয়াড়, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার প্রমুখ।
এই ঐক্যের প্রভাব ও ফলাফল কী হবে?
এ উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজের ব্যাপক সংখ্যক মানুষের সমাবেশ ঘটানো ও সমর্থন আদায় সম্ভব। যেমন আদিবাসী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলাসহ সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা এসব জনগোষ্ঠীর সমর্থন পাওয়া যেতে পারে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ইত্যাদি) কারণে তাদেরও সমর্থন আদায়ের সুযোগ হবে। বিভিন্ন পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যক্তিকে যুক্ত করার মাধ্যমে সমাজে একটি জাগরণ সৃষ্টি সম্ভব। এর বদৌলতে সংসদে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি পাঠানো গেলে তাদের ইতিবাচক ভূমিকা জাতীয় রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে।
এ ধরনের ঐক্যের উদাহরণ কি আছে?
বাংলাদেশে এ ধরনের জোট চর্চার ধারণা অভিনব হলেও অনেক দেশেই তা আছে। শ্রীলঙ্কার কথাই বলা যায়। সেখানকার বামপন্থিরা এই কৌশল অবলম্বন করেই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন বামপন্থি দল ‘জনতা বিমুক্তি পেরামুনা’র নেতা অনুঢ়া কুমারা দিশানায়েকের নেতৃত্বে গঠিত বাম জোটে আছে ‘পাবলিক সার্ভিসের জন্য পাবলিক সার্ভেন্ট জাতীয় ভিক্ষু ফ্রন্ট, জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য ডাক্তার, ইন্টার কোম্পানি এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন, গণ-গাইডিং শিল্পী, জাতীয় বুদ্ধিজীবী সংস্থা, সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রগতিশীল মহিলা সংঘ, অল সিলন এস্টেট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নসহ প্রায় ২২টি সংগঠন।
বৃহত্তর ঐক্যের নীতি ও পরিধি কী হবে?
এই মুহূর্তে বৃহত্তর ঐক্যের ভিত্তি হবে মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে রক্ষা ও সমাজের বিরাজমান সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ। নিপীড়িত শ্রেণি ও জনগোষ্ঠীর মানুষদের মধ্যে ন্যূনতম ইস্যুতে ঐক্য গড়ে তোলা। আমাদের দেশে এ ধরনের ঐক্যের ধারণা নতুন। তাই তা হয়তো এখনই সম্ভবপর হবে না। তবে এর পক্ষে বামপন্থি দলগুলোর ভেতরে-বাইরে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা এবং সংগতিপূর্ণ ক্রিয়া এখনই শুরু করা যায়।
প্রার্থীর সংখ্যা, না নির্বাচিত প্রতিনিধি দরকার?
সম্প্রতি দৈনিক দেশ রূপান্তরে এক সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী নির্বাচনে বামজোট ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে। আমার মনে হয়, বামপন্থিরা নির্বাচনে কতগুলো আসনে প্রার্থী দেবে, তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কয়টি আসনে তারা বিজয়ী হবে। নির্বাচনের জন্য নির্বাচন না করে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে নির্বাচন করার কার্যকর কৌশল অবলম্বন করতে হবে। সেটা করতে হলে বৃহত্তর রাজনৈতিক-সামাজিক মধ্য-বাম ঐক্যের আপাতত কোনো বিকল্প নেই। এমনকি কিছু আসনে স্বাধীনতার শক্তি বিএনপির সঙ্গেও নির্বাচনী বোঝাপড়া হতে পারে। সেটা না হলে নিজেদের শক্তিতে এগিয়ে যেতে হবে। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে ব্যাপকভিত্তিক জাতীয় কনভেনশন আহ্বান সময়ের দাবি।
ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত র জন ত ক দলগ ল র ব মপন থ র জন য ধরন র স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
সকালের সবচেয়ে বরকতময় সময় ব্যবহারের ৭ কৌশল
সকাল মানুষের জীবনের একটি মূল্যবান সময়, যা দিনের বাকি অংশের জন্য সুর নির্ধারণ করে। সকাল আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার, শরীর ও মনকে প্রস্তুত করার এবং দিনের লক্ষ্য অর্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ।
সামাজিক মাধ্যম, কাজের চাপ এবং পারিবারিক দায়িত্ব আমাদের অনেক সময় কেড়ে নেয়, তাই সকালকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে আমরা জীবনকে আরও উৎপাদনশীল করতে পারি।
১. আল্লাহর সঙ্গে দিনের শুরুফজরের নামাজের ১৫-২০ মিনিট আগে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া এবং দোয়া করা জীবনকে আমূল বদলে দিতে পারে। এই সময়টি শান্ত ও পবিত্র, যখন আল্লাহর সঙ্গে কোনো বাধা থাকে না।
কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি রাতে, যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকি থাকে, তখন আমাদের রব নিকটতম আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?”’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫)।
তাহাজ্জুদের সময় আপনার হৃদয়ের কথা আল্লাহর কাছে প্রকাশ করুন। এতে মানসিক শান্তি বাড়বে এবং দিনের জন্য ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। যদি আপনি নতুন হন, সপ্তাহে এক দিন থেকে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে এটি অভ্যাসে পরিণত করুন।
ফজরের আগে অবশিষ্ট সময়ে কোরআন তিলাওয়াত করুন, কারণ কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ভোরে কোরআন পড়া (ফেরেশতাদের) দ্বারা প্রত্যক্ষ করা হয়।’ (সুরা ইসরা. আয়াত: ৭৮)।
আরও পড়ুনইশরাকের নামাজ: সকালের আলোয় আল্লাহর নৈকট্য ০৪ জুলাই ২০২৫২. ফজরের পর ঘুম থেকে দূরে থাকুনফজরের নামাজের পর ঘুমিয়ে পড়া অনেকের অভ্যাস, কিন্তু এটি সকালের বরকতময় সময় নষ্ট করে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১)।
এই সময়ে বড় বড় কাজ সহজে সম্পন্ন করা যায়, কারণ এতে আল্লাহর বিশেষ বরকত রয়েছে।
আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন। মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১ফজরের পর ঘুমের প্রলোভন এড়াতে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। এই সময়ে পড়াশোনা, কোরআন মুখস্থ করা বা কোনো ব্যক্তিগত প্রকল্পে কাজ করা যায়। এটি দিনের বাকি সময়ে অবসরের জন্য সময় বাঁচায় এবং আগামী দিনে আরও তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করে।
বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।
৩. করণীয় তালিকা তৈরি করুনএকটি করণীয় তালিকা তৈরি করা দিনের পরিকল্পনাকে সুসংগঠিত করে। আমরা প্রায়ই মনে মনে কাজের পরিকল্পনা করি, কিন্তু মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা সীমিত। একটি ডায়েরি বা ফোনের নোট অ্যাপে কাজের তালিকা লিখে রাখলে সময় ও শক্তি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়। সম্পন্ন হওয়া কাজগুলো তালিকা থেকে কেটে দেওয়ার একটা আলাদা আনন্দ আছে।
এই তালিকায় দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যও অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন কোরআনের একটি নির্দিষ্ট অংশ মুখস্থ করা বা একটি নতুন দক্ষতা শেখার পরিকল্পনা। এটি আপনাকে দিনের শুরুতে ফোকাসড রাখবে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াবে।
আরও পড়ুনযে ৪টি পরীক্ষা নবীজি (সা.)–এর জীবনকে দৃঢ়তা দিয়েছে২২ জুলাই ২০২৫বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।৪. সকালে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুনসকালের মূল্যবান সময় সামাজিক মাধ্যমে বা ফোনে অযথা স্ক্রল করে নষ্ট করা উচিত নয়। অনেকে সকালে ফোন হাতে নিয়ে ‘শুধু একটু দেখে নিই’ ভেবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হারিয়ে ফেলেন। এটি মানসিক চাপ বাড়ায় এবং সকালের শান্তি নষ্ট করে।
নিয়ম করুন, সকালের নাশতা বা কিছু কাজ শুরু না করা পর্যন্ত ফোন বা সামাজিক মাধ্যমে যাবেন না। সকালে খবর পড়া এড়িয়ে চলুন। কারণ, এটি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারে। যখন ফোন ব্যবহার করবেন, তখন ইতিবাচক ও প্রেরণাদায়ক কনটেন্ট দেখুন, যা আপনার দিনকে উজ্জ্বল করবে।
৫. শরীরচর্চা করুনশরীরচর্চার উপকারিতা আমরা সবাই জানি। বিশেষ করে এই সময়ে, যখন অনেকে বাড়ি থেকে কাজ করছেন, শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। বাড়িতে কাজ করার ফলে ঘাড়ে ও পিঠে ব্যথা, পেশির সমস্যা বাড়ছে।
সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।
ইউটিউবে হাজারো ধরনের ব্যায়ামের ভিডিও পাওয়া যায়, যা বাড়িতে সামান্য জায়গায় করা যায়। যদি বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকে, তবে সকালে ৩০ মিনিট হাঁটুন। লক্ষ্য হলো শরীরকে সচল রাখা এবং শক্তি বৃদ্ধি করা।
আরও পড়ুনসুস্থ জীবন যাপনে মহানবী (সা.)-এর ৯ অভ্যাস২৪ জুলাই ২০২৫সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।৬. পুষ্টিকর নাশতা গ্রহণব্যস্ততার কারণে অনেকে সকালের নাশতা বাদ দেন, কিন্তু গবেষণা বলছে, পুষ্টিকর নাশতা দিনভর মনোযোগ বাড়ায়, অপ্রয়োজনীয় চিনির লোভ কমায় এবং শক্তি জোগায়। নাশতায় উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন ওটস বা মাল্টিগ্রেইন রুটি, স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন অ্যাভোকাডো বা বাদাম, গ্রিক ইয়োগার্ট এবং ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।
সময় কম থাকলে একটি স্মুদি তৈরি করুন—পালংশাক, আপেল এবং হিমায়িত কলা ব্লেন্ড করে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর নাশতা তৈরি করা যায়। এটি দিনের শুরুতে সবুজ শাকসবজি গ্রহণের একটি সহজ উপায়।
৭. নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনবাড়ি থেকে কাজ করার সময় অনেকে ক্যাজুয়াল পোশাকে থাকেন। বরং সকালে সুন্দর পোশাক পরুন, যা আপনার মেজাজ উজ্জ্বল করবে। একটু পছন্দের সুগন্ধি ব্যবহার করলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১নবীজি (সা) বলেছেন, ‘আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১)। নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা শুধু বাহ্যিক নয়, বরং এটি আপনার মানসিক প্রস্তুতি ও দিনের জন্য উৎসাহ বাড়ায়।
সকাল আমাদের দিনের ভিত্তি। ইসলাম আমাদের শেখায় যে সকাল আল্লাহর বরকত নিয়ে আসে। তাহাজ্জুদ, ফজরের পর জাগ্রত থাকা, করণীয় তালিকা তৈরি, স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা, শরীরচর্চা, পুষ্টিকর নাশতা এবং নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন—এই সাতটি অভ্যাস আমাদের সকালকে উৎপাদনশীল করবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সূত্র: দ্য মুসলিম ভাইব ডট কম
আরও পড়ুনরহমতের দুয়ারে হাজিরা১৫ জুন ২০২৪