ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর মশালমিছিল
Published: 23rd, February 2025 GMT
দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশালমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী। সমাবেশ থেকে খুন, ধর্ষণ ও নিপীড়নের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ঘুরে মিলন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন জুলাই অভ্যুত্থানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠক ও সম্প্রতি বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী সুমাইয়া শিকদার। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী নারীদের অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এমনকি নারীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করা প্রক্টরের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নীতিনির্ধারক হিসেবে এমন নারীবিদ্বেষী ব্যক্তি থাকলে সে রাষ্ট্র নারীবান্ধব হতে পারে না; বরং প্রতিনিয়ত নারীদের জন্য অনিরাপদ পরিস্থিতি তৈরি হয়।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি নূজিয়া হাসিন রাশা বলেন, জুলাইয়ের পর এ দেশের জনগণ একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র চেয়েছিল, কিন্তু সেই আশা এই সরকার ভেঙে দিয়েছে। তার মূল কারণ আওয়ামী লীগ সরকার ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রেণি চরিত্রের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
নূজিয়া হাসিন আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায়, আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন করে, আর এখন আমরা বিভিন্ন স্থানে নারী নির্যাতনের ঘটনা দেখতে পাচ্ছি। বিভিন্ন উগ্রবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা করে সরকার দেশকে অনিরাপদ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অভ্যুত্থানকারী জনগণকে নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। অবিলম্বে গুম, খুন, ধর্ষণ ও নিপীড়নের দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে, অন্যথায় গদি ছেড়ে দিন। জনগণ আওয়ামী লীগের যে পরিণতি করেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষেত্রেও একই পরিণতি ঘটবে।’
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সামি আবদুল্লাহ সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন। এ সময় আরও বক্তব্য দেন ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ও সদস্য ইসরাত জাহান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, “দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কিংবা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।”
আরো পড়ুন:
বরগুনায় জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মামুন
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
রবিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
প্রতিটি নির্বাচনী আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি মানুষকে নিশ্চয়ই মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়। ভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথের সঙ্গী ছিলেন, এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু সংসদীয় সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা এই বাস্তবতাকে মেনে নেবেন।”
জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, “দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।”
বিএনপির বিজয় ঠেকাতে অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।”
শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।”
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান জানান, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তার দল।
তারেক রহমান বলেন, “দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।”
দেশে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সামাজিক উদাসীনতা প্রকট হয়ে উঠছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ সংক্রান্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, “নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপত্তাহীন সমাজ নিশ্চয়ই সভ্য সমাজ হিসেবে গণ্য হতে পারে না।”
সেজন্য তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলসহ বাংলাদেশের সচেতন নারী সমাজকে তাদের দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অনলাইনে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ এবং তার ফি পরিশোধের প্রক্রিয়া নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তাতে বলা হয়, এখন থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে অনলাইনে বিএনপির দলীয় ওয়েবসাইটে গিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করা যাবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ জে ড এম জাহিদ হাসান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ