ঢাবি নাটমণ্ডলে রবিঠাকুরের কালজয়ী নাটক ‘রক্তকরবী’
Published: 24th, February 2025 GMT
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাটক ‘রক্তকরবী’ মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমণ্ডল মিলনায়তনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রযোজনায় মঞ্চে আসছে কালজয়ী এ নাটকটি।
থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ জানিয়েছে, আজ থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭টায় এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নাটকটির প্রদর্শনী হবে। রক্তকরবী মঞ্চে নির্দেশনা দিয়েছেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানভীর নাহিদ খান। এতে ৩য় বর্ষের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অভিনয় করছেন।
তানভীর নাহিদ বলেন, “বাংলাদেশে সম্প্রতি এক রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের যে আকাঙ্ক্ষা গড়ে উঠেছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে, রক্তকরবী নাটকটির রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিতা এ প্রযোজনা সৃজনের নেপথ্যে বিশেষ অনুপ্রেরণা সঞ্চার করেছে। জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাট্যভাষ্যরূপে এ প্রযোজনায় নানা চিহ্ন সৃজিত হয়েছে।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘রক্তকরবী’ নাটকটি লিখেছেন শতবর্ষ আগে। ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল নাটকটি রচনার ১০০ বছর পূর্তি হয়। ‘রক্তকরবী’ রচনার শতবর্ষ পূর্তিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নাটকটি মঞ্চস্থ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছের তানভীর নাহিদ।
তিনি বলেন, “রক্তকরবীতে আমরা দর্শক-অভিনেতার নৈকট্য, নিরাভরণ মঞ্চ ও যৎসামান্য দ্রব্যাদি ব্যবহার দ্বারা দেশজ আঙ্গিকে উপস্থাপনের প্রতি মনোযোগ দিয়েছি। ঐতিহ্যবাহী দেশজ নাট্যের আবহে চারপাশে দর্শক পরিবেষ্টিত হয়ে মঞ্চস্থ হবে এই পালা।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রূপক সাংকেতিক নাটক রক্তকরবী। মানুষের প্রবল লোভ কীভাবে জীবনের সৌন্দর্য ও স্বাভাবিকতাকে অস্বীকার করে মানুষকে নিছক যন্ত্রে ও উৎপাদনের উপকরণে পরিণত করে এবং শোষকের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদ কী রূপ ধারণ করে তারই রূপায়ণ ঘটে এ নাটকে।
থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন কাজী তামান্না হক সিগমা বলেছেন, রক্তকরবী এক দ্রোহ, যা শিল্প এবং সৃষ্টি দিয়ে রাজা নয়, রাজনীতির পরিবর্তন আনে; যা অর্থনৈতিক মুক্তির চেয়ে সৃজনের আলোয় মুক্তির পথ দেখায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন টকট
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।