আগামী জুনের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা সম্ভব নয়, এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের টার্গেট (লক্ষ্য) ডিসেম্বর এবং জাতীয় নির্বাচন।’

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে সিইসি এ কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন আরএফইডির নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আগামী জুনের মধ্যে সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা সম্ভব, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। এ বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘সংস্কার কমিশন পরামর্শ দিয়েছে, জুনে নির্বাচন করা সম্ভব। সেটি সম্ভব হবে যদি ১৬ লাখ মৃত ভোটারকে বাদ দেওয়া না হয় এবং নতুন ভোটারদের বাদ দিয়ে নির্বাচন করা হয়। ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম শেষ হবে আগামী জুন মাসে।’

নাসির উদ্দীন আরও বলেন, ‘স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন যে বক্তব্য দিয়েছে, সেটি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলেছে। তাঁরা (কমিশনের সদস্যরা) বিজ্ঞ ও জ্ঞানী লোকজন। এ বিষয়ে সিইসির কোনো মন্তব্য নেই। এ বিষয়ে একটি রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে। নির্বাচন কমিশন এ বিতর্কে জড়াতে চায় না। আগে ভোটার তালিকা হোক। এখনো ভোটার তালিকা করা সম্ভব হয়নি।’

সিইসি বলেন, তাঁরা আগেভাগে কোনো মন্তব্য করতে চান না। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী তাঁরা নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছেন।

আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হতে হলে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করতে হবে বলে উল্লেখ করেন নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, ভোটার তালিকা তৈরিসহ অন্যান্য প্রস্তুতি তাঁরা নিচ্ছেন। সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের অনেকগুলো আবেদন ঝুলে আছে। আইনি জটিলতার কারণে তাঁরা তা নিষ্পত্তি করতে পারছেন না। এ-সংক্রান্ত আইন সংশোধন করার জন্য তাঁরা ইতিমধ্যে সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন। আরও কিছু বিষয়ে সরকারের কাছে প্রস্তাব দেবে নির্বাচন কমিশন। যদি সংস্কার কমিশন গঠন করা না হতো, তাহলেও এটি করতে হতো। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেসব সংস্কার দরকার বলে কমিশন মনে করে, সেটুকু করার উদ্যোগ তাঁরা নিয়েছেন।

বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব কি না, এমন প্রশ্ন করা হয় সিইসির কাছে। জবাবে তিনি বলেন, তাঁরা মনে করছেন, ডিসেম্বর আসতে আসতে এই পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে। তিনি আশা করেন, সবার সহযোগিতা নিয়ে তাঁরা এমন একটি জোয়ার সৃষ্টি করবেন, যেখানে ভোট ছাড়া মানুষের আর কোনো চিন্তা থাকবে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স থ ন য় সরক র ড স ম বর

এছাড়াও পড়ুন:

উত্তরা হত্যাকাণ্ডে সাবেক মেয়র আতিকসহ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর উত্তরা এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাঁদের ২২ জুন থেকে ২৫ জুন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল সোমবার এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

শুনানিতে প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের তিন দিনে উত্তরায় ৯২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

পরে ট্রাইব্যুনাল জিজ্ঞাসাবাদের সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। ২২ জুন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে উত্তরা পূর্ব থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমানকে। সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ও উত্তরা পূর্ব থানা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহিনুর মিয়াকে ২৩ জুন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এ ছাড়া উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোয়ার ইসলাম চৌধুরী ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে ২৪ জুন। পরদিন ২৫ জুন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বশির উদ্দিন ও ঢাকা মহানগর উত্তরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ