বাংলাদেশে ডিজিটাল টিকিটিং পরিবহন ব্যবস্থাকে বদলে দিচ্ছে, যা ভ্রমণকে আরও সহজ, কার্যকরী ও চাপমুক্ত করে তুলেছে। প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে যাত্রীরা এখন বেশি স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও সুবিধাজনক উপায়ে তাদের টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনলাইন টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম সহজ আয়োজিত ‘টিকিটিং টু ট্রান্সফর্ম লাইভস’ শীর্ষক একটি মতবিনিময় সভায় এমনটা জানান সহজ-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ আয়োজনে আলোচকরা তুলে ধরেন, কীভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম দীর্ঘদিনের টিকিট সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধান করছে। বিশেষ করে ঈদ, পূজা এবং জাতীয় ছুটির মতো ব্যস্ত মৌসুমে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা, অনিশ্চয়তা এবং শেষ মুহূর্তের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিচ্ছে অনলাইন টিকিটিং। বহু বছর ধরে উৎসব বা জরুরি ভ্রমণের জন্য টিকেট সংগ্রহ করা ছিল বেশ কঠিন। তবে, অনলাইন টিকিটিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এখন লাখো মানুষ মুহূর্তেই টিকেট বুক করতে পারছেন, আসন খালি আছে কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারছেন এবং নিরাপদ পেমেন্ট করতে পারছেন। ফলে, টিকিটিং ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ ও সহজ হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল টিকিটিং শুধুমাত্র প্রযুক্তির প্রসার নয়, বরং এটি এক ধরণের ক্ষমতায়ন। এটি শহর থেকে গ্রাম, সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করেছে, যাতে ভ্রমণ আরও সহজ ও নিশ্চিন্ত হয়।
বাংলাদেশের আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে অনলাইন টিকিটিং। এই সেশনে আলোচকরা আরও বলেন, ভবিষ্যতে টিকিটিং ব্যবস্থা আরও কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিস্তার অব্যাহত রাখা জরুরি।
‘সহজের’ যাত্রা শুরু হয় ২০১৪ সালে, যার লক্ষ্য-বাংলাদেশিদের জীবনকে সহজ করা। ‘সহজ’ এখন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম, যা মানুষের জীবনকে সহজ করতে এবং তাদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে উন্নত করতে কাজ করছে। প্রথমে অনলাইন বাস টিকিটিংয়ের মাধ্যমে দেশের ভ্রমণ খাতে বিপ্লব ঘটিয়ে, সহজ তার সেবার পরিধি সম্প্রসারণ করেছে ফেরি/লঞ্চ, ইভেন্ট, বিনোদন, রেল এবং বিমান টিকিটিং পর্যন্ত পৌঁছেছে।
সাদামাটা কিন্তু উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে, সহজ দ্রুত বর্ধনশীল এই বাজারে গ্রাহক এবং ব্যবসার জন্য পরিবহন, ই-কমার্স এবং অন-ডিমান্ড পরিষেবাগুলোর সংজ্ঞা নতুনভাবে গড়ে তুলছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সহজ সংগঠনের সিইও মে.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ল য টফর ম ব যবস থ ভ রমণ
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক