২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা
Published: 24th, February 2025 GMT
২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘গ’ শ্রেণির প্রতীকী ‘শহীদ সেনা দিবস’ এর বদলে ‘ক’ শ্রেণির ‘জাতীয় শোক দিবস’ ও সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে। সরকার শোক দিবস পালন না করলেও ছাত্র-জনতা পালনসহ রাজু ভাস্কর্যে কালো পতাকা উত্তোলন ও প্রধান উপদেষ্টা বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রার ঘোষণা দিয়েছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে গণঅবস্থানকারী ছাত্র-জনতা এ দাবি জানিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে গণঅবস্থানের সংগঠক ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, “রাত পোহালেই আমাদের সামনে হাজির হচ্ছে শোকাবহ ২৫ ফেব্রুয়ারি। ২০০৯ সালের এ দিনে ভারতীয় হানাদারবাহিনী ও তাদের তাবেদার আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় জাতির সার্বভৌমত্ব রক্ষার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছিল। সেনা পরিবারের মা ও বোনেরা ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল।”
আরো পড়ুন:
কণ্ঠশিল্পী মনির খানের বাবা আর নেই
জাহাজে সাত খুন
মাগুরায় নিহত ২ জনের পরিবারে শোক
তিনি বলেন, “গত ১৬ বছরে সেই নির্মমতার কোন সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত গডফাদার, সরাসরি জড়িত দেশি-বিদেশি খুনী ও তাদের গডফাদারদের বিচার হয়নি। এ বিচার না হওয়ার প্রমাণ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার দায়ে তৎকালীন আওয়ামী রেজিমকে কালেক্টিভ রেসপন্সিবিলিটির জন্য বিচারের আওতায় আনা হয়নি। আওয়ামী লীগ দলগতভাবে বিডিআর হত্যায় জড়িত হলেও দলটির বিচার হয়নি। বিশেষ করে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার সাত মাস পেরিয়ে গেলেও অন্তর্বর্তী সরকার তেমন কোন উদ্যোগ নেয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “সরকারের নানা উপদেষ্টা ও কর্মচারীদের কথায় স্পষ্ট যে, তারা হাসিনা রেজিম ও আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে বাচিক দালালিতে লিপ্ত। তারা সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাকারী ও ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চায় না। বরং আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে পুনরুজ্জীবিত ও পুনর্বাসিত করতে চায়। এ জন্য তারা বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।”
আবদুল ওয়াহেদ অভিযোগ করে বলেন, “ষড়যন্ত্র কিভাবে চলছে তার এক সুস্পষ্ট প্রমাণ হলো, ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্রাজেডির দিনকে ১৬ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যেখানে ‘ক’ শ্রেণির ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালন করার কথা, সেখানে ‘গ’ শ্রেণির ‘শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এ ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রমূলক কাজটি করানো হয়েছে ২ হাজার শহীদের রক্তে অর্জিত জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যবহার করে।”
তিনি বলেন, “‘ক’ শ্রেণির দিবসগুলো যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন/পালন করা বিধি রয়েছে। এসব দিবসে সাধারণ তথা সরকারি ছুটি থাকে। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে ১৮টি দিবসের মধ্যে চারটি দিবসই ছিল হাসিনার বাবা, মা ও ভাইয়ের জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালনের জন্য। হাসিনার ব্যাংক ডাকাত ভাই শেখ কামালের জন্মদিন যেখানে ‘ক’ শ্রেণির দিবস হিসেবে পালিত হতো সেখানে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তার শাহাদাত বার্ষিকী কেন ‘গ’ শ্রেণির দিবস হিসেবে গণ্য হবে?”
গ শ্রেণির দিবসগুলো পালনের বিধান তুলে ধরে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বলেন, “বিশেষ বিশেষ খাতের প্রতীকী দিবসগুলো সীমিত কলেবরে পালন করা হবে। মন্ত্রি/উপদেষ্টাগণ এসব দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিতির বিষয় বিবেচনা করবেন। উন্নয়ন খাত থেকে এসব দিবস পালনের জন্য কোন বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হবে না। এখন প্রশ্ন হলো ‘গ’ শ্রেণির দিবস ঘোষণা করে এ বার্তা দেওয়া হলো কি না, শহীদ সেনা দিবস সীমিত কলেবরে পালন করা হবে?”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ ২৫ ফেব্রুয়ারি শহীদ সেনা দিবসকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করতে চায় এবং সরকারি ছুটি চায়। এ জনআকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে আমরা শহীদ সেনা দিবসকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করব। এ উপলক্ষে আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে রাজু ভাস্কর্যে শোক দিবসের কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের ছবি ও ভিডিও প্রদর্শন করা হবে।”
জুলাই গণহত্যা, পিলখানা ও শাপলা হত্যাযজ্ঞে ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ ও দোসর দলগুলোকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিকাল ৩টায় রাজু ভাস্কর্য থেকে প্রধান উপদেষ্টায় কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি এ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক প্রধান মো.
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২৫ ফ ব র য় র ভ স কর য উপদ ষ ট সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আসামে বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র মামলায় পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
ভারতের আসামে গত বছর একাধিক ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ঘটানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে উলফা (আই) নেতা পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। সংস্থাটি শনিবার গুয়াহাটির আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
পরেশ বড়ুয়া নিষিদ্ধঘোষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (ইনডিপেনডেন্ট ) চেয়ারম্যান এবং স্বঘোষিত কমান্ডার ইন চিফ। চার্জশিটভুক্ত অন্য দুজন হলেন অভিজিৎ গগৈ ও জাহ্নু বড়ুয়া।
গত বছর আসামে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন ব্যাহত করতে গুয়াহাটির দিসপুর লাস্ট গেটে একাধিক আইইডি পুঁতে রাখা হয়েছিল। এর সঙ্গে এই তিনজনের যোগসূত্র পাওয়া গেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এ ঘটনা তদন্তের ভার নেয় এনআইএ।
এনআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হতাহত করা, সম্পত্তি ধ্বংস করা, ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি তৈরি এবং মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে আইইডি স্থাপন করা হয়েছিল।