পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তাঁর বাসভবনে আবারও তালা লাগাতে গিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলার পর শিক্ষার্থীরা তালা না লাগিয়ে সেখান থেকে ফিরে যান। আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ কার্যালয়ের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা মিলে ভিসি স্যারের সঙ্গে মিটিং করছিলাম। আমরা শুনলাম, শিক্ষার্থীদের কয়েকজন উপাচার্য স্যারের বাসভবনে তালা দিতে এসেছে। তারা পাঁচ মিনিটের মধ্যে সবাইকে বের হতে আলটিমেটামও দেয়। পরে আমরা গিয়ে তাদের বুঝিয়েছি, এটা আবাসিক ভবন; এখানে তালা দেওয়া যাবে না। পরে তারা চলে গেছে।’

এর আগে গতকাল সোমবার রাতে কুয়েটের উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদ ঢাকা থেকে খুলনা ফিরে বাসভবনে অবস্থান নিয়েছেন এমন সংবাদে ক্ষুব্ধ হন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা উপাচার্যকে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে বাসভবন থেকে বের হয়ে যেতে সময় বেঁধে দেন। একই সঙ্গে উপাচার্যের বাসভবনে আবারও তালা ঝোলানোর ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

আজ দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী তালা ও শিকল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকের সামনে আসেন। তাঁরা সেখানে অবস্থান নিয়ে হ্যান্ডমাইকে উপাচার্যসহ অন্যদের পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাসভবন ত্যাগ করতে বলেন। পাঁচ মিনিট পর আবারও পাঁচ মিনিট সময় বেঁধে দেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে উপাচার্যের বাসভবন থেকে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা বের হয়ে গেটের ভেতরে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাঁদের ওপর হওয়া হামলায় চিহ্নিত ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে উপাচার্যের ওপর তাঁদের অসন্তোষের কথা জানান। ভেতর থেকে শিক্ষকেরা বলতে থাকেন, শিক্ষার্থীরা যদি এতটা আক্রমণাত্মক হয়ে যায়, তাহলে তাঁদের পক্ষে পাঠদান করা সম্ভব হবে না। শিক্ষার্থীদের তালা না মেরে আলোচনায় বসার জন্য আহ্বান করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে চলে যান।

আরও পড়ুনকুয়েট উপাচার্যের বাসভবনে আবারও তালা লাগানোর ঘোষণা শিক্ষার্থীদের৪ ঘণ্টা আগে

এর আগে গত শুক্রবার রাতে পদত্যাগের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।

কুয়েটের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশস টেকনোলজির (আইআইসিটি) পরিচালক ও ইইই বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুল গণি ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রশাসন আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ছাত্র-শিক্ষক সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সুন্দরভাবে ক্যাম্পাসকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। ছাত্রদের দাবিগুলো যৌক্তিক। আমরাও চাই না ক্যাম্পাসে রাজনীতি আসুক। তাদের দাবিগুলোর সঙ্গে আমরা একমত। কিন্তু কিছু কিছু ছাত্র তাদের সীমাটা অতিক্রম করছে। তারা স্যারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে, আমাদের বিভিন্ন সময় গালিগালাজ করছে। এটা আমরা কখনো আশা করিনি। তারা আমাদের বাসায় তালা দেবে, খারাপ ব্যবহার করবে, এটা আমরা পছন্দ করছি না। কুয়েট ভালোভাবে চলুক, এটা আমরা চাই।’
এদিকে গত রোববার ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুনকুয়েটে সংঘর্ষ: আটক ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সময় বাড়ানোর আবেদন তদন্ত কমিটির
১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার সভাপতি কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম এম এ হাসেম। গতকাল তাঁর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, কমিটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে কমিটি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এবং প্রাপ্ত তথ্যাদি গভীরভাবে পর্যালোচনার জন্য সাত কর্মদিবস সময় বৃদ্ধি করার জন্য প্রশাসন বরাবর আবেদন করেছে তদন্ত কমিটি।

আরও পড়ুনকুয়েটে সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের ছবি দিয়ে প্রদর্শনী২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: তদন ত ক স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

অসুস্থ যুবদল নেতা শহিদুলকে দেখতে তার বাসভবনে ছুটে গেলেন সজল ও সাহেদ

\নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য অসুস্থ মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামকে দেখতে তার বাসভবনে ছুটে গেলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদসহ যুবদলের নেতৃবৃন্দ।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১ নম্বার ওয়ার্ডের মিজমিজি বাতেন পাড়াস্থ অসুস্থ যুবদল নেতা শহিদুল ইসলামের বাসভবনে যান মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ। এসময়ে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন এবং তার ও শারীরিক সুস্থতার জন্য দোয়া করেন।

এ সময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক বন ও পরিবেশ সম্পাদক মো. ওসমান গনি, নাসিক ৭ নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. সোহেল, ১নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম ভুট্টু, ৭নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. রুবেল, ১নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. জাহিদ, ১নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. রুবেল, নাসিক ১নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. হাসান, মো. সাগর হোসেনসহ যুবদলের নেতৃবৃন্দ।##

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উন্নয়ন বৈষম্যের প্রতিবাদে সিলেটবাসীর গণঅবস্থান
  • অসুস্থ যুবদল নেতা শহিদুলকে দেখতে তার বাসভবনে ছুটে গেলেন সজল ও সাহেদ