বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, অন্তর্বর্তী সরকারের কারও কারও বক্তব্যে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। আমরা দেখছি, প্রশাসনের বিভিন্ন স্থানে অস্থিতিশীলতা। আমরা কোনো অস্থিতিশীলতা দেখতে চাই না। আমরা পরিষ্কারভাবে আজ (মঙ্গলবার) আবারও এই সম্মেলনের মাধ্যমে বলতে চাই, সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারবে। আমরা আশা করব, এ সরকারের প্রতি মানুষের যে প্রত্যাশা তা তারা পূরণ করবে। নির্বাচন বিলম্ব হলে যাদের সুবিধা হবে তারা আজ নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি শক্তিশালী হবে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তৃণমূলে বিএনপির অবস্থান আরও দৃঢ় হবে। সেজন্য অনেকেই বিএনপির প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচন নিয়ে কালক্ষেপণের ষড়যন্ত্রে মেতেছে।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে কুমিল্লা টাউনহল মাঠে মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, ‘পলাতক স্বৈরাচার বাংলাদেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে গেছে, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে গেছে, প্রশাসনকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। গত ১৫-১৬ বছর গুম খুন, হামলা, মামলা ও আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিএনপিকে যেতে হয়েছে। তাই জনগণের প্রত্যাশা পূরণে বিএনপির চেষ্টা অব্যাহত আছে এবং তা থাকবে। বিএনপি জনগণের দল, বিএনপি জনগণের কথা বলে। অধিকার আদায়ের এ আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে।’ 

তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি আমরা গণতন্ত্র চর্চা করতে পারি, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি এই দেশকে এবং দেশের মানুষকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। যত বেশি গণতন্ত্রের চর্চার রাখতে পারব ততবশি দেশের মানুষকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে নিরাপদ রাখতে পারব।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা চাই অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন রকম কথা বলছেন জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেবার ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে আমরা অস্থিরতা দেখতে চাই না। বাংলাদেশে বহু অস্থিরতা হয়েছিল। সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দ্রুত দেশের এ অস্থিরতা দূর করা সম্ভব।’

তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে মত পার্থক্য থাকবে সেটির দলের ভেতরে হোক বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হোক না কেন, মতপার্থক্য থাকলে আমরা বসব, আলোচনা করব। আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব যা দেশের জন্য শান্তির হবে, যা দেশে মানুষকে নিরাপদ করবে। মানুষকে কোনোভাবেই বিভেদে রূপান্তরিত হতে দিতে চাই না।’ 

এর আগে বিকেল ৩টার দিকে সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী জেল-জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমি নিজেও বাড়িতে এক রাত ঘুমাতে পারিনি। অনেক আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজকে জনগণের বিজয় হয়েছে।’  
বুলু ড.

ইউনুসের উদ্দেশে বলেন, ‘হাসিনা আপনাকে বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন, বিএনপি এই হয়রানির প্রতিবাদ করেছিল। তারেক রহমান আপনার পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। বেগম জিয়া ও তারেক রহমান আপনাকে সম্মান করেন। আপনি দ্রুত নির্বাচন দিয়ে দেশের মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকুন।’

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী আবু। মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপুর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোশতাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, যুগ্ম আহবায়ক আমিরুজ্জামান আমির, সদস্য সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, জসিম উদ্দিন, সাবেরা আলাউদ্দিন প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন ড ইউন স র ব এনপ র ষড়যন ত র ধ ব স কর সরক র র জনগণ র

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণের ঐক্য থাকলে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাকে কবর দিতে পারব: সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘যদি জনগণের ঐক্য থাকে, তাহলে এই দেশে ফ্যাসিবাদ যেমন পালিয়েছে, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাকেও আমরা কবর দিতে পারব। আর যে লুটপাটের রাজত্ব, দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম হয়েছে, সেটাকেও আমরা কবর দিতে পারব।’

আজ শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। সমাবেশের আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ জুলফিকার আহমেদ শাকিলের মা আয়েশা বেগম সমাবেশ উদ্বোধন করেন।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘লুটপাট, দুর্নীতি আমরা বন্ধ করতে না পারলে দেশে নতুন ক্ষমতাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হবে না। শহীদদের স্বপ্নপূরণে নতুন রাজনৈতিক এবং ক্ষমতাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

জোনায়েদ সাকি বলেন, ক্ষমতা দিয়ে টাকাপয়সা ধনসম্পদ আহরণ করা বাংলাদেশে গুম–খুন, অত্যাচার, ত্রাসের রাজত্বের ভিত্তি ছিল ফ্যাসিবাদী শাসন। ক্ষমতা দিয়ে টাকাপয়সা, ধনসম্পদ আহরণ করতে গিয়ে ব্যাংক, বিমা, ব্যবসা-বাণিজ্য, সব উন্নয়ন প্রকল্প—সব খেয়ে ফেলেছিল তারা।

এ সময় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহতদের দায়িত্ব নিতে অন্তর্বর্তী সরকার কেন ব্যর্থ হয়েছে, তার ব্যাখ্যা ৫ আগস্টের মধ্যে জানানোর দাবি জানিয়েছেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক লক্ষণ দেখছি, যেন পুরোনো ব্যবস্থাই আবার আমাদের মধ্যে জায়গা করে নিচ্ছে। আমরা দেখলাম শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এখনো হয়নি। আহতদের চিকিৎসা এখনো হয়নি।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। আজ শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুদ্ধাপরাধী শক্তিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা জুলাই অভ্যুত্থানের সাংঘর্ষিক : কমরেড রতন
  • ফতুল্লায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাও. জব্বারের ব্যাপক গণসংযোগ
  • জনগণের ঐক্য থাকলে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাকে কবর দিতে পারব: সাকি
  • ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে
  • জুলাই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়াবেন না: টুকু
  • সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য
  • হাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার
  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান
  • সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
  • ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে