পিছিয়ে যাওয়া সেই সিনেমা কবে আসবে, জানালেন নির্মাতা
Published: 1st, March 2025 GMT
নির্মাতা কাজল আরেফিন অমির ওয়েব সিনেমা ‘হাউ সুইট’। গত ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে এটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। নানা কারণে এর মুক্তি পিছিয়ে গেছে। আসছে ঈদে এটি উন্মুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি। এছাড়া প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বঙ্গ’র পক্ষ থেকেও বিষয়টি জানানো হয়।
সিনেমায় অভিনয় করছেন জিয়াউল হক অপূর্ব ও তাসনিয়া ফারিণ। সিনেমায় একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাঈদুর রহমান পাভেল।
কাজল আরেফিন অমি বলেন, ‘এটি একটি রোমান্টিক কমেডি সিনেমা। রোমান্টিক কোনো গল্প ভাবলেই চোখ বন্ধ করে আমার মাথায় অপূর্বর নাম চলে আসে। ফারিণের সঙ্গে এর আগেও কাজের অনেক অভিজ্ঞতা আছে। তাদের নিয়ে পরিপূর্ণ রোমান্টিক কমেডি সিনেমাটি নির্মাণ করেছি। আশা করছি, এটি দর্শকের ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে দেবে।’
অপূর্ব বলেন, ‘‘অনেক দিন পর অমির সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমি সিনেমার গল্পটা শুনে খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে যাই কবে কাজটি শুরু করব– এটি ভেবে। তাছাড়া দীর্ঘদিন হয়েছে ওটিটিতে ফারিণের সঙ্গে কোনো কাজ নেই। আমি চাচ্ছিলাম এরকম একটি কাজ দিয়ে পর্দায় আসার। সব মিলিয়ে ‘হাউ সুইট’ নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। অমির আগের কাজগুলো দেখে দর্শক যেমন উপভোগ করেছে, এবারও তেমনটা হবে। নাচে, গানে ভরপুর খুব সুন্দর একটি সিনেমা উপহার পেতে যাচ্ছে দর্শক।’’
ফারিণ বলেন, ‘‘অপূর্ব ভাইয়ের সঙ্গে অনেক নাটকে অভিনয় করেছি। ওটিটিতে এটি আমাদের দ্বিতীয় কাজ। আশা করছি ‘হাউ সুইট’-এর মাধ্যমে দর্শক এ জুটিকে নতুনভাবে আবিষ্কার করবেন।’’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা দিচ্ছেন না সোয়া ৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী
আসন্ন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী গতবারের চেয়ে ৮১ হাজার ৮৮২ জন কমেছে। তিন বছরের মধ্যে এবারই পরীক্ষার্থী সবচেয়ে কম। আরও আশঙ্কার বিষয়, দুই বছর আগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির পর রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) করেও সোয়া চার লাখের বেশি শিক্ষার্থী এবার পরীক্ষা দিচ্ছেন না। শতাংশের হিসাবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এই হার বেশি। আর সংখ্যায় তা এইচএসসিতে বেশি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, একসঙ্গে এত বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা না দেওয়াটা উদ্বেগজনক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান খন্দোকার এহসানুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, এমনিতেই দেখা যায় পর্যায়ক্রমে ওপরের শ্রেণিতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বাড়ে। এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ে এই ঝরে পড়ার অন্যতম কারণ হলো দারিদ্র্য এবং শিক্ষার্থীদের বিয়ে হয়ে যাওয়া। এসএসসি পাসের পর অনেক শিক্ষার্থী কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে। এটাও ঝরে পড়ার আরেকটি বড় কারণ। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীদের ওপর একটি জরিপ করতে গিয়ে তাঁরা এ রকম তথ্য পেয়েছেন। এখন উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়েও প্রকৃত কারণ জানার জন্য এ রকম একটি জরিপ করা হবে।
২৬ জুন শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবার নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষার্থী ১০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি। গতবারের তুলনায় এ বছর এইচএসসিতে প্রায় ৭৩ হাজার পরীক্ষার্থী কমেছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন আলিমে পরীক্ষার্থী কমেছে প্রায় দুই হাজার। আলিমে এবার পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজারের বেশি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৯ হাজারের বেশি। কমেছে সাত হাজারের মতো।
এইচএসসি পর্যায়ে পড়াশোনা নানা কারণে ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে, যেটা অনেক অভিভাবকের পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেক শিক্ষার্থী কর্মে প্রবেশ করছে, অনেকেই কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে যাচ্ছে। বিয়েও আরেকটি বড় কারণ। এস এম হাফিজুর রহমান, অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সোয়া ৪ লাখের বেশি পরীক্ষা দিচ্ছেন নাআন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসা-কারিগরিসহ ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে নিবন্ধন করেছিলেন ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৯ জন। তাঁদের মধ্যে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফরম পূরণ করেছেন ১০ লাখ ৫০ হাজারের বেশি। অবশ্য নিয়মিত এসব শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অনিয়মিত শিক্ষার্থী মিলিয়ে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী আরও বেশি।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রমতে, নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আওতায় একাদশ শ্রেণিতে (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ) ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬৭ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৮
লাখ ৭৬ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফরম পূরণ করেছেন। নিয়মিত এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩ লাখ ২০ হাজারের মতো (প্রায় ২৭
শতাংশ) পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফরম পূরণ করেননি। এ রকম শিক্ষার্থী সবচেয়ে বেশি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে, ৭৫ হাজারের বেশি। এই বোর্ডে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পর নিবন্ধন করেছিলেন সোয়া তিন লাখের মতো শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফরম পূরণ করেছেন আড়াই লাখের মতো শিক্ষার্থী।
একই শিক্ষাবর্ষে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের আওতায় আলিম প্রথম বর্ষে ১ লাখ ২৮ হাজার ৭৫৯ শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৭৯ হাজারের মতো শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছেন। নিবন্ধন করা প্রায় ৩৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফরম পূরণ করেননি।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় একাদশ শ্রেণিতে (ভোকেশনালে) প্রায় ১ লাখ ৫৯ হাজার শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৯৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছেন। নিয়মিত এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে সাড়ে ৬৩ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেননি। ফরম পূরণ না করা শিক্ষার্থীর হার প্রায় ৪০ শতাংশ।
বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এসএসসি পাসের পরও এইচএসসি পরীক্ষা না দেওয়ার বিষয়ে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ধারণা করা যায়, দারিদ্র্য একটি অন্যতম কারণ। এইচএসসি পর্যায়ে পড়াশোনা নানা কারণে ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে, যেটা অনেক অভিভাবকের পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেক শিক্ষার্থী কর্মে প্রবেশ করছে, অনেকেই কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে যাচ্ছে। বিয়েও আরেকটি বড় কারণ।
এগুলোর প্রকৃত কারণ বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, এসএসসি পাসের পর বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী মাঝপথে হোঁচট খেল, এটা জাতির জন্য বিরাট ক্ষতি। এমনটা যেন না হয়, সে জন্য সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।