যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিকসের (বিএলএস) তথ্য অনুযায়ী আগামী দশকে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত (এসটিইএম) বিষয়ে কর্মসংস্থান অন্যান্য পেশার তুলনায় ২০২৯ সালের মধ্যে 8 শতাংশ বাড়বে। তবে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ ঘটলেও এসব বিষয়ভিত্তিক পেশায় নারীর প্রবেশগম্যতা পুরুষের তুলনায় অনেক কম। বাংলাদেশে এসটিইএমের ক্ষেত্রে নারীর প্রতিনিধিত্ব মাত্র ১৪ শতাংশ। এটি জেন্ডার বৈষম্যের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রের বৈষম্যকেও বিশেষভাবে নির্দেশ করে, যা এসডিজি অর্জন ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বড় প্রতিবন্ধকতা।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত ‘রোল মডেল টক অ্যান্ড প্যানেল ডিসকাশন’ শিরোনামে অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনের কাছ থেকে এমন অভিমত উঠে আসে। শি-এসটিইএম কনসোর্টিয়ামের আওতায় পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনার্স, এটুআই, টেন মিনিটস স্কুল, যুক্তরাজ্যভিত্তিক কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান ডেভ লার্ন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আলোচনায় নারীর এসটিইএমের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া নিয়ে প্রধানত চারটি চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে– সর্বশেষ পাঠ্যক্রম না থাকা, মানসম্মত গবেষণা না থাকা, শিল্প খাতের সঙ্গে  বিশ্ববিদ্যালয়ের কম সংযোগ এবং ছেলেমেয়ে বৈষম্যগত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন যুব, শিক্ষা ও কর্মবিষয়ক দূত জুরিয়ান মিডলহফ, বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন থিস ওদস্ট্রা, লাইটক্যাসল পাটনার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন ইসলাম, ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান, ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.

মোহাম্মেদ নাজিম উদ্দিন, স্কুল অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পরিচালক ও এক্সটার্নাল এনগেজমেন্টের সহকারী অধ্যাপক রওনক আফরোজ প্রমুখ। 
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ভারত, পাকিস্তানের তুলনায় কর্মক্ষেত্রে বাংলোদেশে নারীরা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। তবে এসটিইএমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে নারীর উপস্থিতি এখনও অস্বাভাবিকভাবে কম। এসটিইএমের প্রতি আগ্রহ রয়েছে এমন প্রায় অর্ধেক মেয়েই এ পেশায় কাজ করতে আগ্রহী হন না। অর্থাৎ তারা একসময় বিজ্ঞানী হিসেবে গড়ে উঠতে পারেন– এমনটা ভাবেন না। ফলে এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য রোল মডেলের ঘাটতি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, শি-এসটিইএম হলাে একটি বহু বছরের কনসোর্টিয়াম চালিত কর্মসূচি। এর লক্ষ্য নারীর বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিংভিত্তিক চাকরির সুযোগ তৈরি করা এবং দক্ষভাবে গড়ে তোলা। পাশাপাশি এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের বিশেষ দক্ষতা ও কর্মক্ষেত্র প্রসারে অ্যাডভোকেসি করে থাকে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ