চুরির অভিযোগে দুই চোখ তুলে ফেলল গ্রামবাসী
Published: 2nd, March 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাসনে চুরির অভিযোগে শাহাজাহান মিন্টিজ (৪০) নামের এক ব্যক্তির দুই চোখ তুলে ফেলেছে স্থানীয়রা। আজ রোববার সকালে দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের চর আরকলমী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে গ্রামপুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আহত মিন্টিজ ওই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের 'ছিডু চোরার' ছেলে। কয়েক বছর আগে কারাগারে ছিড়ুর মৃত্যু হয়।
গ্রামবাসীর দাবি, মিন্টিজ চোর চক্রের সরদার। তবে তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেছেন, সন্দেহজনকভাবে তাঁকে তুলে নিয়ে মারধরের করে হাত-পা ভেঙে দেওয়া ও দুই চোখ তুলে ফেলা হয়েছে। মাঝের চর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা লোকমান হোসেনের ছেলে মো.
স্থানীয়রা জানান, মিন্টিজের পরিবার বহু আগে থেকে চুরি-ডাকাতিতে জড়িত। তাঁর বাবা ছিডু ছিলেন পেশাদার চোর। মিন্টিজ ভোলার দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে চুরি ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে জড়িত। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক বাড়িতে চুরি হয়। রোববার সকালে মিন্টিজকে চর আরকলমী গ্রামের নিজের বাড়িতে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে ধাওয়া করে এবং জাহাঙ্গীর ফরাজির বাড়ি থেকে আটক করে। পরে তাকে ওই গ্রামের বারেক ফরাজির বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়া এবং দুই চোখ তুলে ফেলা হয়। খবর পেয়ে গ্রাম পুলিশ সোরহাব হোসেন কয়েকজনের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে পাঠান।
মিন্টিজের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মাওলানা লোকমান হোসেনের ছেলে সাকিবের নেতৃত্বে লোকজন ধাওয়া করে জাহাঙ্গীর ফরাজির বাড়ি থেকে মিন্টিজকে আটক করে। পরে তাঁকে বারেক ফরাজির বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয় এবং চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে চোখ তুলে ফেলে।' ঘটনার সময় উপস্থিত থাকলেও ভয়ে পরিচয় দিতে পারেননি বলে জানান তিনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে মো. সাকিব বলেন, 'মিন্টিজ পেশাদার চোর এবং চোর চক্রের সরদার। স্থানীয়রা তাকে দেখে ধাওয়া দিয়ে ধরে গণধোলাই এবং চোখ তুলে দিয়েছে বলে শুনেছি।'
চরফ্যাসন হাসপাতালে জরুরি বিভাগের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার রিয়াজ উদ্দিন বলেন, 'মিন্টিজ নামের ওই ব্যক্তির হাত-পা ভেঙে চোখ তুলে ফেলা হয়েছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।'
দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভুঁইয়া বলেন,' খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফর জ র ব ড়
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’