মাদকাসক্ত ছেলেকে পুলিশে দিলেন বাবা
Published: 3rd, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ১৫টি ইয়াবা বড়িসহ এক যুবককে বসতঘর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই যুবকের বাবার দেওয়া তথ্যে গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ওই যুবকের বিরুদ্ধে তাঁর বাবা বাদী হয়ে লোহাগাড়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মো. মিনহাজ। তিনি উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের হাজীপাড়া এলাকার আমির হোসেনের (৫৪) ছেলে। ইয়াবা সেবনের পাশাপাশি মিনহাজ মাদক বিক্রির সঙ্গেও দীর্ঘদিন ধরে জড়িত রয়েছেন বলে পরিবারের বরাতে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, মিনহাজ দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা সেবনে আসক্ত। পাশাপাশি খুচরায় ইয়াবা বিক্রি করেন। তাঁর অত্যাচারে পরিবারের লোকজন অতিষ্ঠ ছিলেন। ইয়াবা সেবন ও বিক্রিতে বাধা দিলে পরিবারের সদস্যদের মারধরের পাশাপাশি জিনিসপত্র ভাঙচুর করতেন মিনহাজ। গতকাল রাতেও একইভাবে ইয়াবা বিক্রিতে বাধা দেওয়ায় তাঁর মা-বাবাকে মারধর করেন মিনহাজ। এ সময় প্রতিবেশীরা এসে তাঁর মা-বাবাকে উদ্ধার করেন এবং একপর্যায়ে মিনহাজকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরে ইয়াবাসহ মিনহাজকে আটকে রাখার বিষয়টি থানায় জানান তাঁর বাবা আমির হোসেন। এরপর পুলিশ এসে মিনহাজকে গ্রেপ্তার করে।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার ওই তরুণকে তাঁর বাবার করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় আদালতে পাঠানো হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক