ট্রফি হাতে হেঁটে বাড়ির সামনে গিয়ে থমকে দাঁড়ান দেয়াশিনী রায়। ফুল দিয়ে সজ্জিত গেট। গেট থেকে ঘর পর্যন্ত পুরো রাস্তা ফুল দিয়ে সাজানো। মূল ফটকের সামনে রয়েছে একটি ফেস্টুন। তাতে লেখা, “স্বাগতম চ্যাম্পিয়ন।”

ফেস্টুনের লেখা দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন দেয়াশিনী। অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় ‘সারেগামাপা’ বিজয়ী এই গায়িকাকে। দেয়াশিনী তার ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, তাতে এমন দৃশ্য দেখা যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন— “সারেগামাপা’ বিজয়ী হয়ে ফেরার পর পাড়ার সকলে আমাকে স্বাগত জানলো বিশাল আয়োজনের সাথে।”

ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলের গানের রিয়েলিটি শো ‘সারেগামাপা-২০২৪’ মৌসুমে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন দেয়াশিনী রায় ও অতনু মিশ্রা। রবিবার (২ মার্চ) রাতে অনুষ্ঠিত হয় এ আসরের গ্র্যান্ড ফিনালে। বিজয়ের ট্রফি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মদনপুরে নিজ বাড়িতে ফিরেন দেয়াশিনী। সেখানে আনন্দ অশ্রুতে ভিজে উঠে তার চোখের পাতা।

আরো পড়ুন:

সারেগামাপা’র বিজয়ীরা কে কত টাকার পুরস্কার পেলেন?

শ্রীময়ী আমাকে সংসারী করেছে: কাঞ্চন মল্লিক

দেয়াশিনী বলেন, “গতকাল ছিল আমাদের সারেগামাপার গ্র্যান্ড ফিনালে। আপনাদের ও ভগবানের আশীর্বাদে চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি। এরপর রাত সাড়ে ১১টায় বাড়ি ফিরি। পরিবারের লোকজন, আত্মীয়সহ গোটা মদনপুরবাসী আমাকে সুন্দরভাবে ওয়েলকাম করেন; সকলে বরণ করে নেন। আমার গাড়ির সামনে সকলে ভিড় করেছিলেন। যে দৃশ্য দেখে খুবই ইমোশনাল হয়ে পড়ি। খুব আনন্দ হচ্ছিল যে, গোটা মদনপুরবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। আমার পাড়ার সকলে খুব খুশি ছিলেন। এটা আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।”

দেয়াশিনীর বিজয়ে ভীষণ আনন্দিত তার গ্রামবাসী। এ তথ্য জানিয়ে এ গায়িকা বলেন, “আমার কাছে এটা ভীষণ খুশির মুহূর্ত, আমার চেয়েও বেশি খুশি আমার বাবা-মা, প্রতিবেশীরা। সেজন্যই আমি আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি। বড় বড় তিনটি কেক রাখা ছিল। তাতে লেখা ছিল— চ্যাম্পিয়ন দেয়াশিনী। বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছিল। এ আয়োজন আমাদের বাড়ির সামনে করা হয়েছিল। আমি বলব, আমাকে এভাবেই সাপোর্ট করবেন, পাশে থাকবেন। যাতে ভালো ভালো গান শোনাতে পারি।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র স মন

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ