কোটি টাকা প্রতারণার মামলায় জেমস গ্রুপের এমডি কারাগারে
Published: 5th, March 2025 GMT
কোটি টাকার প্রতারণার মামলায় জেমস গ্রুপের (জেমস ট্রেডিং লি.) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শাহাদাত হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সম্প্রতি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অধীন ভাটারা আমলী আদালত পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬/৫০৬ নং ধারা অনুযায়ী এই আদেশ দেন। আদালতের আদেশের পর শাহাদাতকে কারাগারে পাঠানো হয়।
শাহাদাত লক্ষ্মীপুর জেলা সদরের ফতেধর্মপুর গ্রামের মো.
আদালতে মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শাহাদাত হোসেন বাদী মোহাম্মদ মাসুদ চৌধুরীর কাছ থেকে একটা ভবনের নিচতলা পাঁচ বছরের জন্য ভাড়া নেন। প্রথম পাঁচ বছর চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আসামিরা ভাড়া দিলেও মেয়াদান্তে নতুন চুক্তি না করে অবৈধভাবে ভবন দখল করে রাখেন এবং বিগত ২০১৯ সাল থেকে আসামিরা বাদীকে কোনো মাসের ভাড়া প্রদান করেননি।
বাদীর অভিযোগ, তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারের দাপট দেখিয়ে গত পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ভবন দখল করে রেখেছেন আসামি। এতে করে তিনি কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এমনকি ভাড়া চাইলে বাদীকে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। উপয়ান্তর না দেখে বাদী ন্যায়বিচারের আশায় গত ২২ ডিসেম্বর আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত সবকিছু আমলে নিয়ে সম্প্রতি আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। শাহাদাত জামিন চাইতে গেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সারাহ ফারজানা জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের ৪৫% রাজনৈতিক
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত ভুল তথ্য ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এ সময়ে যাচাই করা ভুল তথ্যের ৪৫ শতাংশই ছিল রাজনৈতিক। গতকাল বুধবার তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত ভুল তথ্য ছিল ১ শতাংশ। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে তা বেড়ে ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সংখ্যার হিসাবে গত প্রান্তিকে এ ধরনের ভুল তথ্য ছিল মাত্র ১১টি। সেটি এ বছরের প্রথম তিন মাসে সাত গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭টিতে। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ-সংশ্লিষ্ট আটটি ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পেয়েছে ডিসমিসল্যাব।
সংস্থাটির গবেষণায় দেখা গেছে, জানুয়ারি-মার্চ সময়ে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠানগুলো ১ হাজার ২৩৬টি তথ্য যাচাইয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র ভুল তথ্য পাওয়া গেছে ৮৬৭টি, যা আগের প্রান্তিকে রেকর্ড করা ৮১৬টির তুলনায় কিছুটা বেশি। ভুল তথ্যের প্রায় অর্ধেকই (৪৫ শতাংশ) রাজনীতি সম্পর্কিত ছিল। এর পর ছিল ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য (১৩ শতাংশ), যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় সামান্য কম।
অপরাধ-সম্পর্কিত ভুল তথ্য বেড়েছে
বছরের প্রথম তিন মাসে প্রচারিত খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই ও ডাকাতি-সংক্রান্ত খবর ছিল ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ছিল ভারতের, যা বাংলাদেশের বলে ভুলভাবে প্রচার করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে একটি ইউটিউব চ্যানেলে হোটেল থেকে লাফিয়ে পড়া এক ভিডিও প্রচার করে বাংলাদেশের বলে দাবি করা হয়, কিন্তু সেটি ছিল মূলত ইন্দোনেশিয়ার।
রাজনৈতিক ভুল তথ্য
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে যাচাই করা ভুল তথ্যের ৪৫ শতাংশই রাজনৈতিক। আগের বছরও রাজনীতি-সংক্রান্ত ভুল তথ্য প্রচারিত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ (৩৪.৮ শতাংশ) ও অন্তর্বর্তী সরকারকে (২১.৮ শতাংশ) নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। তবে আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে প্রচারিত ভুল তথ্যগুলোর অধিকাংশই (৬৮ শতাংশ) ছিল ইতিবাচক। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, জামায়াত-শিবির ও সমন্বয়কদের নিয়ে ছড়ানো অধিকাংশ ভুল তথ্য ছিল নেতিবাচক।
ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য
ধর্ম-সম্পর্কিত ভুল তথ্যের সংখ্যা সর্বশেষ প্রান্তিকে কিছুটা কমেছে। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্যের পরিমাণ ছিল মোট যাচাইকৃত ভুল তথ্যের ১৮ শতাংশ, যা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ শতাংশে। তবে এর ধরন ছিল একই রকমের। যেমন, পুরোনো বা সম্পাদিত ছবি-ভিডিও সাম্প্রতিক বলে প্রচার করা।
বেড়েছে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্য
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্যের পরিমাণ বাড়তে দেখা গেছে। ২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্য নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল ২৭টি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন। সেখানে এ বছরের প্রথম তিন মাসে এই সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪টিতে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব ভুল তথ্যের ২৪ শতাংশ ছিল রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট।