আসন্ন ঈদুল ফিতরে ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য রেল ও সড়ক পরিবহন খাতে নানা তৎপরতা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রেলওয়ে অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রাথমিক তারিখ নির্ধারণ করেছে ১৪ মার্চ। বাসে এখন আনুষ্ঠানিকভাবে টিকিট বিক্রির তারিখ নির্ধারণ করা হয় না। তবে কয়েকটি বড় বাস কোম্পানি চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে ঈদের টিকিট বিক্রি করবে। সরকারের পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি বিশেষ সেবা ‘ঈদ স্পেশাল’ চালু করবে মার্চের শেষ সপ্তাহে।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, সংস্থাটি এবার ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরুর তারিখ প্রাথমিকভাবে ১৪ মার্চ ঠিক করেছে। ১ এপ্রিল ঈদুল ফিতর হবে ধরে নিয়ে তারা এই তারিখ নির্ধারণ করেছে। আগামীকাল রোববার দুপুরে ঈদ উপলক্ষে ‘সড়ক ও রেলপথে যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন’ করার লক্ষ্যে সভা ডেকেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত ওই সভা থেকেই রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। ওই বৈঠক থেকে বেসরকারি বাস সেবা এবং বিআরটিসির বাস চলাচলের বিষয়েও কিছু সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমানে যাত্রার ১০ দিন আগে আন্তনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়। ঈদ যাত্রার টিকিটও ১০ দিন আগে বিক্রি করা হবে। এ ছাড়া এবারও ঈদের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। কাউন্টারে কোনো ঈদের টিকিট বিক্রি করা হবে না। ফলে এবার বাড়তি আয়োজন নেই।

ঈদ প্রস্তুতির লক্ষ্যে ৪ মার্চ রেলের মহাপরিচালক আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই আসন্ন ঈদে টিকিট বিক্রির সম্ভাব্য তারিখ, বিশেষ ট্রেন পরিচালনা এবং অন্যান্য প্রস্তুতি নিয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রোববার তা ঘোষণা করতে পারেন।

রেলের নেওয়া প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুসারে, আন্তনগর ট্রেনের ২৪ মার্চের টিকিট বিক্রি করা হবে ১৪ মার্চ; ২৫ মার্চের টিকিট বিক্রির জন্য নির্ধারিত তারিখ ১৫ মার্চ; ২৬ মার্চের টিকিট বিক্রি করা হবে ১৬ মার্চ; ২৭ মার্চের টিকিট পাওয়া যাবে ১৭ মার্চ; ২৮ মার্চের টিকিট বিক্রি পাওয়া যাবে ১৮ মার্চ; ২৯ মার্চের টিকিট বিক্রি হবে ১৯ মার্চ এবং ৩০ মার্চের টিকিট পাওয়া যাবে ২০ মার্চ।

রেলের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তারা ১৪ মার্চ টিকিট বিক্রি শুরুর সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করেছেন। রোববারের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তিনি আরও বলেন, এবার ঈদযাত্রায় বিভিন্ন পথে ৫ জোড়া বা ১০টি বিশেষ ট্রেন চালুর পরিকল্পনা আছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত বছর ঈদুল ফিতরে ঢাকা থেকে আন্তনগর ট্রেনের কমবেশি ৩০ হাজার আসনের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। এবার আসন সংখ্যা ৩৫ হাজারের বেশি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ট্রেনে বাড়তি কামরা যুক্ত করা হবে। উত্তরবঙ্গের পথে লাইনের সক্ষমতা না থাকায় বিশেষ ট্রেন চালানো কঠিন। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ওই দিকে নতুন ট্রেনও চালু হয়নি। এবার ঈদে উত্তরের পথের ট্রেনগুলোতে বাড়তি কামরা যুক্ত করে আসনসংখ্যা বাড়ানো হবে।

বাসের যাত্রা

ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বেশি যাত্রী যাতায়াত করে বাসে। মূল ভরসা বেসরকারি পরিবহন। অতীতে সরকার ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠন মিলে একটি নির্দিষ্ট দিন থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হতো। এতে হট্টগোল, বাড়তি ভাড়া আদায়সহ নানা অভিযোগ পাওয়া যেত। এখন সরকার আর বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রির তারিখ নির্ধারণ করে না। ফলে কিছু কোম্পানি ঘটা করে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করে, কেউ কেউ অন্যান্য সময়ের মতোই টিকিট বিক্রি করে। ছোট কোম্পানি এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন অনেক বাসের মালিকেরা অগ্রিম টিকিট বিক্রিই করেন না। তাঁরা শেষ মুহূর্তে টিকিট বিক্রি করেন। এতে যেসব দিনের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে, সেসব টিকিট বাড়তি দামে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।

পরিবহনমালিকদের সূত্র বলছে, এখন অনেক বড় বাস কোম্পানি অনলাইনে বেশির ভাগ টিকিট বিক্রি করে ফেলে। এ জন্য তারা ঘটা করে ঈদের অগ্রিম টিকিট কাউন্টারে বিক্রি করে না।

সোহাগ পরিবহনের স্বত্বাধিকারী ফারুক তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, নির্দিষ্ট দিন ঘোষণা করে টিকিট বিক্রি করতে গেলে অনলাইন হোক আর কাউন্টার—সর্বত্রই চাপ পড়ে যায়। ফলে সুবিধার চেয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগই বেশি হয়। তারা অন্য সময়ের মতো স্বাভাবিকভাবেই ঈদের টিকিটও বিক্রি করবেন। তিনি বলেন, সব সময়ই ঈদেই আগের দু-তিন দিনের টিকিটের চাপ থাকে। ঘোষণা না দিলেও শেষের দিকের টিকিটের চাহিদাই বেশি থাকে।

এদিকে সরকারের পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি ২৭ মার্চ থেকে ‘ঈদ বিশেষ সেবা’ চালুর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঈদযাত্রার বাসের অগ্রিম টিকিট ২০ মার্চ থেকে বিক্রির পরিকল্পনা আছে সংস্থাটির।

বিআরটিসির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) অপারেশন শুকদেব ঢালী প্রথম আলোকে বলেন, বিআরটিসি যেসব রুটে বাস পরিচালনা করে তা অব্যাহত থাকবে। কিছু বাস বাড়ানো এবং নতুন কিছু রুটে বাস চালুর চিন্তা আছে। ঈদ সেবায় সব মিলিয়ে ৮০০–এর বেশি বাস চলাচল করবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ১৪ ম র চ ব আরট স পর বহন র লওয় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে। 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে  বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ