সুরা হাশর পবিত্র কোরআনের ৫৯তম সুরা। এটি মদিনায় অবতীর্ণ। এর ৩ রুকু, ২৪ আয়াত। এই সুরায় ইহুদিদের নির্বাসনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
মদিনা থেকে দুই মাইল দূরে বনু নাজিরের বসবাস। তারা নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে আবদ্ধ ছিল। এ অবস্থায় নবী করিম (সা.) তাদের মহল্লায় গেলে তারা তাঁকে একটি ছাদের নিচে বসতে দেয়। পরে ছাদ থেকে পাথর গড়িয়ে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। আল্লাহ তাআলা ওহির মাধ্যমে তাঁকে এ বিষয়ে জানানো হলে তিনি জায়গাটি থেকে সরে যান। তাদের জানিয়ে দেন, ‘তোমরা চুক্তি ভঙ্গ করেছ। তোমাদের যেখানে ইচ্ছা চলে যাওয়ার জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হলো। এরপর তোমাদের কাউকে পাওয়া গেলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুনসুরা ইব্রাহিমে আছে নবী–রাসুলদের সংগ্রামের চিত্র২৫ জুন ২০২৩সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের বাংলা উচ্চারণউচ্চারণ : হুআল্লা হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়া, আলিমুল গাইবী ওয়াশ শাহাদাদি, হুয়ার রাহমানুর রাহিম। হুআল্লা হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুবহানাল্লাহি আম্মা য়ুশরিকুন। হুআল্লাহুল খালিকুল বা-রিউল মুছাওয়িরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউছাব্বিহু লাহু মা ফিস-সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্; ওয়া হুয়াল আজিজুল হাকিম।সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের অর্থঅর্থ : তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়, পরম দয়াময়। তিনিই আল্লাহ্, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনিই মালিক, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, নিরাপত্তাবিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অহংকারের অধিকারী। ওরা যাকে শরিক করে আল্লাহ্ তার থেকে পবিত্র, মহান। তিনিই আল্লাহ্, সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, রূপদাতা, সব সুন্দর নাম তাঁরই । আকাশ ও পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সমস্তই তাঁর পবিত্র মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, তত্ত্বজ্ঞানী। (সুরা হাশর, আয়াত: ২২থেকে ২৪)
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
জান্নাতের পথ সুগম করবে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত নিয়মিত পাঠ করলে
কী বলা হয় সুরা ফাতিহায়
সুরা ইখলাসের ফজিলত
সুরা বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াত আয়াতুল কুরসি নামে পরিচিত
জুমাবারে সুরা কাহাফ পাঠের ফজিলত
মুনাফিক সরদারের প্ররোচনায় তারা দেশ ত্যাগ করল না। নবী করিম (সা.
সুরাটির শেষ তিন আয়াতে আছে, ‘তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়’।
আরও পড়ুনসুরা বুরুজে বিশ্বাসীর পুরস্কার, অবিশ্বাসীর শাস্তি০৮ এপ্রিল ২০২৩এই সুরায় ইহুদিদের নির্বাসনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ফজিলত
রাসুল (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তি সকাল বেলা সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তিলাওয়াত করবে। আল্লাহ ওই ব্যক্তির জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করেন; যারা উক্ত ব্যক্তির জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকে। আর এ সময়ের মাঝে যদি লোকটি মারা যায়, তাহলে সে শহীদের মৃত্যু লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি এটি সন্ধ্যার সময় পড়বে, তাহলে তার একই মর্যাদা রয়েছে।’ (সুনানে তিরমিজি,হাদিস : ৩০৯০)
আরও পড়ুনপৃথিবীতেই 'বেহেশতের বাগান'২০ জুন ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র র শ ষ ত ন আয় ত আল ল হ য গ কর
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা