বনশ্রীতে গুলি করে স্বর্ণ ডাকাতি, ৬ আসামি রিমান্ডে
Published: 9th, March 2025 GMT
রাজধানীর বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ১৬০ ভরি স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার ছয়জনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (৯ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলমের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন— মো. কাউছার, মো. ফরহাদ, মো. খলিলুর রহমান, মো.
এদিন আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার উপ-পরিদর্শক ফরিদুর রহমান। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন ।
এর আগে শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া স্বর্ণের মধ্যে ৪ ভরি ৯ আনা স্বর্ণ, বিক্রিত স্বর্ণের মূল্য বাবদ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত একটি ৭.৬২ এমএম রিভলভার, ৪ রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এই ডাকাত দলে মোট সাতজন ছিলেন। অন্যজনকে ধরতে অভিযান চলছে বলে রামপুরা থানা সূত্রে জানা যায়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, রামপুরার সি ব্লকের অ্যাভিনিউ রোড-৫-এর ‘অলংকার জুয়েলার্স’ দোকানের মালিক মো. আনোয়ার হোসেন। তিনি প্রতিদিনের ন্যায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে দোকান বন্ধ করে ১৬০ ভরি স্বর্ণ যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২ কোটি ৪৭ লাখ ২৪ হাজার টাকা, নগদ এক লাখ টাকাসহ বাসায় ফিরছিলেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে বনশ্রী ডি ব্লক ৭ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ির নিজ ভাড়া বাসার গেটের সামনে পৌঁছামাত্র তিনটি মোটরসাইকেলে করে ছয়-সাতজন দুষ্কৃতকারী আগ্নেয়াস্ত্র, চাপাতিসহ তার গতিরোধ করে। তার কাছে থাকা স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার সময় আনোয়ার বাধা দিলে দুষ্কৃতকারীরা তাকে চার-পাঁচ রাউন্ড গুলি করে। দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া গুলি আনোয়ারের বাঁ হাঁটু ও বাঁ পায়ে ঊরুতে আঘাত করে। এ সময় দুষ্কৃতকারীরা তাদের হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে আনোয়ারের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে তার সঙ্গে থাকা সাইড ব্যাগে রক্ষিত স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী আনোয়ারের স্ত্রী বাদী হয়ে রামপুরা থানায় একটি মামলা করেন।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?