আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে: এবি পার্টি
Published: 9th, March 2025 GMT
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম ও ঢাকায় দেশটির সাবেক উপরাষ্ট্রদূত জন ড্যানিলোভিচের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) নেতারা। বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ প্রশ্নে এবি পার্টির অবস্থান জানতে চান সাবেক দুই মার্কিন কূটনীতিক। উত্তরে এবি পার্টির নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে সবার ঐকমত্যের প্রতি এবি পার্টি গুরুত্ব দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘রাইট টু ফ্রিডম’-এর প্রতিনিধি হিসেবে আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন উইলিয়াম বি মাইলাম ও জন ড্যানিলোভিচ। দলীয় কার্যালয়ে তাঁদের স্বাগত জানান এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। উইলিয়াম বি মাইলাম বেসরকারি সংগঠন ‘রাইট টু ফ্রিডম’-এর প্রেসিডেন্ট আর জন ড্যানিলোভিচ সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বে আছেন।
সাবেক দুই মার্কিন কূটনীতিকের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেন, রাইট টু ফ্রিডম–এর প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন, ভারতের ক্রমাগত বাংলাদেশবিদ্বেষী প্রোপাগান্ডা, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ নিয়ে এবি পার্টির অবস্থান, বর্তমান সরকারের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে এবি পার্টির চিন্তা ও গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নবগঠিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এবি পার্টির সম্পর্ক নিয়ে জানতে চায়।
আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, প্রতিনিধিদলকে তাঁরা বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিয়মিত মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে বিভ্রান্ত না হয়ে বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র গণ–অভ্যুত্থানসহ অন্যান্য বিষয়ে যেভাবে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে, আগামীতেও সেভাবে দেশটি বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ভূমিকা যেন অব্যাহত রাখে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে সবার ঐকমত্যের প্রতি এবি পার্টি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে তাঁরা প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছেন। তাঁরা আরও বলেছেন, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেবে বলে তাঁরা মনে করেন। বিভেদ–বিভাজন ভুলে এখন ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ পুনর্গঠনে অংশ নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসরিন সুলতানা অবিলম্বে নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমদ ভূঁইয়া, আবদুল হক সানী, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ফারাহ নাজ সাত্তার এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সদস্য হাজরা মাহজাবিন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল গ র র জন ত ঐকমত য আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু
ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা আগে যে কাজ করতেন, তাদেরকে সে কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগের ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান।
ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলে আমীর খসরু বলেন, “জোর করে আরেকটি দলের অথবা দুটি দলের বা তিনটি দলের মতামত বাকি দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, তারাও একটি রাজনৈতিক দল। এখানে ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাদের দাবি আমাদের ওপর চাপাতে চাচ্ছে, জনগণের ওপর চাপাতে চাচ্ছে। অথচ, ঐকমত্য কমিশন করার উদ্দেশ্য ছিল, ঐকমত্য যতটুকু হবে, সেটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ঐকমত্য হয়েছে, সই হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে। তাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে এটা হবে, সেটা হবে...। আবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ঐকমত্যের কিছু লোকজন। তাদেরও আবার মতামত আছে। রাজনীতিবিদদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদেরটা চাপাতে চাচ্ছে। আবার ঐকমত্য কমিশনেরও একটা নিজস্ব মতামত আছে। ঐকমত্য কমিশনের মতামতের জন্য তো তাদেরকে সেখানে রাখা হয়নি। এখন তাদেরও মতামত আছে এবং ওটা আমাদেরকে মানতে হবে।”
দেশের মানুষকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, যাদের দাবি রাজনীতিবিদদের ওপর চাপাতে চান, জনগণের ওপর চাপাতে চান; তাদের প্রতি আমার অনুরোধ- আপনারা যে যেই কাজ করতেন আগে, ওই জায়গায় ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দেন। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা স্ব স্ব কাজে ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দয়া করে তাদের ওপরেই ছেড়ে দেন। আপনাদেরকে এই দায়িত্ব কেউ দেয় নাই।”
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তাদের সিদ্ধান্ত দেবে। যেসব দল তাদের দাবি-দাওয়া চায়, তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে তো। জনগণের মতামত নিতে হবে তো। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে তো। মতামত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।”
নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে, অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, “ব্যবসায়ীরা আমাকে প্রতিনিয়ত বলছেন, ফেব্রুয়ারি নয়; পারলে এখনই নির্বাচন করে আমাদেরকে একটু মুক্ত করেন। আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমরা কোনো বিনিয়োগ করতে পারছি না। বিদেশিরা কোনো বিনিয়োগ করছে না। সুতরাং, এই নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায় তাদের স্বার্থের জন্য, এখানে ব্যবসায়ীদেরকে সোচ্চার হতে হবে। দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।”
রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম এর আয়োজন করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান।
ঢাকা/কেয়া/রফিক