মেজর পরিচয় দিয়ে দাপট দেখাতেন। সন্দেহ হলে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি সেনা ক্যাম্পে জানান। এরপর পুলিশ ও সেনাবাহিনী ওই ব্যক্তিকে আটক করার পর জানা গেল তিনি মেজর নন, সেনাবাহিনী থেকে পলাতক সৈনিক।

বাসিদুর রহমান (৩৮) নামের ওই ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রী দাবি করা হামিদা বেগমকে (৪০) আজ সোমবার সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি দল জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের হরিপুর গ্রাম থেকে আটক করে। বাসিদুর কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার আঞ্জাপুর গ্রামের সাইমুল হকের ছেলে। হামিদা বেগম হরিহরপুর গ্রামের প্রয়াত মখলিছ মিয়ার মেয়ে। বাসিদুরের দাবি, হামিদা বেগম তাঁর স্ত্রী। যদিও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বাসিদুর রহমান কয়েক দিন আগে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের হরিপুর গ্রামে আসেন। হামিদা বেগমকে তাঁর স্ত্রী দাবি করে দুজন মিলে হামিদার চাচা লন্ডনপ্রবাসী দানিছ মিয়ার খালি বাড়িতে ওঠেন তাঁরা। হামিদার আগেও বিয়ে হয়েছিল। তাঁর স্বামী, সন্তান আছে, তাঁরা লন্ডনে থাকেন। স্থানীয় লোকদের কাছে বাসিদুর নিজেকে সেনাবাহিনীর একজন মেজর হিসেবে পরিচয় দেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, হামিদা বেগমের পরিবারের সঙ্গে একই গ্রামের রাসেল মিয়ার পরিবারের জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল। একপর্যায়ে হামিদার পরিবারের পক্ষ নিয়ে বাসিদুর রহমান রাসেল মিয়ার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দেন এবং নিজের দাপট দেখান। বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজনের সন্দেহ হলে তাঁরা উপজেলার সেনা ক্যাম্পে যোগাযোগ করে বিস্তারিত বলেন। এরপর আজ সকালে সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি দল ওই গ্রামের গিয়ে বাসিদুর রহমান ও হামিদা বেগমকে আটক করে। এ সময় জগন্নাথপুর উপজেলায় দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর মেজর আল জাবির মোহাম্মদ আসিব ও জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ জানায়, দুজনকে আটকের পর বাসিদুরের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর মেজর পদমর্যাদার এক সেট ইউনিফর্ম, বুট, একটি ড্রোন ক্যামেরা, দুটি পাসপোর্ট, র‍্যাব-৯ লেখাসংবলিত একটি ক্রেস্ট, কিছু প্রসাধনসামগ্রী, দা, ছুরি, চাকু উদ্ধার করা হয়। বাসিদুর রহমান ২০০৪ সালে সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। ২০২০ সালে ৩৭ রেজিমেন্টে করপোরাল হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ছুটিতে এসে তিনি পলাতক।

জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া বলেন, সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয়দানকারী বাসিদুর রহমান ও এক নারীকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত ও আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব স দ র রহম ন র পর ব র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে

মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)। 

চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। 

আরো পড়ুন:

‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’

এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার

শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন। 

সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।  

সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’ 

সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’ 

সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ 

শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’ 

সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’ 

পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে। 

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
  • প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে