Prothomalo:
2025-11-03@05:32:45 GMT

তালুত ও জালুতের কাহিনি

Published: 11th, March 2025 GMT

তালুত ছিলেন বনী ইসরাইল গোষ্ঠীর বাদশাহ। পবিত্র কোরআনে তাঁর কথা উল্লেখ আছে।

বনী ইসরাইলীরা হজরত মুসা (আ.)–এর কাছে আল্লাহর কাছে এমন দোয়া করার আবেদন জানান, যাতে আল্লাহ তাঁদের জন্য একজন বাদশাহ পাঠান। উত্তরে তিনি বলেন, ‘তোমরা তো তাঁর অনুগত হবে না।’ এরপরও তাদের পীড়াপীড়িতে মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। আল্লাহ বনী ইসরাইলিদের জন্য তালুত নামে একজনকে পাঠান।

পবিত্র কোরআনে তালুতের দৈহিক শক্তি এবং জ্ঞানের প্রশংসা করা হয়েছে। তবে নবীর ভবিষ্যদ্বাণী ফলে যায়। তারা ঠিকই তাঁর অনুগত হতে অস্বীকৃতি জানায়। হজরত মুসা (আ.

) তখন তাঁদের বলেন, তালুতের বাদশাহি লাভের প্রমাণ এই যে শত্রুর হস্তগত ‘তাবুতে সকিনা’ অর্থাৎ পবিত্র বস্তুসামগ্রী অচিরেই তালুতের কাছে চলে আসবে। এই ঘটনার প্রমাণ লাভের পর বনী ইসরাইলীরা তালুতের আনুগত্য স্বীকার করে।

আরও পড়ুনফজিলতের আয়াত, আয়াতুল কুরসি২৭ আগস্ট ২০২৩

পরে তালুতের নেতৃত্বে জালুতের, অর্থাৎ বাইবেলের গোলাইয়াথের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রার সময় তালুত তাঁর লোকজনকে এক চুমুকের বেশি নদীর পানি পান না করার নির্দেশ দেন। কিন্তু তারা সে আদেশ অমান্য করলে তাদের পেট ফুলে যায়।

রণাঙ্গনে তালুত ঘোষণা করেন, জালুতকে যে হত্যা করতে পারবে, সে রাজত্বের এক-তৃতীয়াংশ পাবে এবং বাদশাহ হিসেবে তাঁর উত্তরাধিকারী হবে। হজরত দাউদ (আ.) জালুতকে হত্যা করে এই পুরস্কার অর্জন করেন।

পবিত্র কোরআনে সুরা বাকারায় আল্লাহ বলেছেন, ‘তুমি কি তাদেরকে দেখোনি, যারা মৃত্যুভয়ে হাজারে হাজারে নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে গিয়েছিল? তারপর আল্লাহ্ তাদের বলেছিলেন, তোমাদের মৃত্যু হোক। পরে তিনি তাদেরকে জীবিত করলেন। আল্লাহ তো মানুষকে অনুগ্রহ করেন; কিন্তু অনেক মানুষই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।’

আল্লাহ আরও বলেছেন, ‘তুমি কি মুসার পরবর্তী বনী-ইসরাইল প্রধানদের দেখোনি? যখন তারা নিজেদের নবীকে বলেছিল, আমাদের জন্য একজন রাজা ঠিক করো যাতে আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে পারি, সে বলল, যদি তোমাদেরকে যুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়, তবে তোমরা কি মনে কর তখন তোমরা যুদ্ধ করবে না? তারা বলল, যখন নিজেদের ঘরবাড়ি ও সন্তানসন্ততি থেকে দূরে পড়ে আছি তখন কেন আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করব না? তারপর যখন তাদের ওপর যুদ্ধের বিধান দেওয়া হলো, তখন তাদের মুষ্টিমেয় কয়েকজন ছাড়া বেশির ভাগই পৃষ্ঠপ্রদর্শন করল। আর আল্লাহ্ সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালো করেই জানেন।

আরও পড়ুনপ্রকাশ্যে প্রথম কোরআন তিলাওয়াত করা হলো৩০ আগস্ট ২০২৩

‘তাদের নবী তাদেরকে বলেছিল, আল্লাহ্ তালুতকে তোমাদের রাজা নিযুক্ত করেছেন। তারা বলল, আমরা যখন কর্তৃত্ব করার জন্য বেশি যোগ্য তখন সে কেমন করে আমাদের ওপর কর্তৃত্ব করবে, আর প্রচুর ধনসম্পদও তো তাকে দেওয়া হয়নি।

‘সে (নবী) বলল, আল্লাহই তাকে মনোনীত করেছেন আর তিনি তাকে দেহে ও মনে সমৃদ্ধ করেছেন। অবশ্যই আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাঁর কর্তৃত্ব দান করেন। আল্লাহ্ প্রাচুর্যময় তত্ত্বজ্ঞানী। তাঁর কর্তৃত্বের লক্ষণ এই যে তোমাদের কাছে একটা তাবুত (সিন্দুক) আসবে, যাতে তোমাদের জন্য তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে প্রশান্তি ও কিছু জিনিস যা মুসা ও হারুনের বংশধরেরা রেখে গিয়েছে, ফেরেশতারা সেটা বয়ে নিয়ে আসবে। নিশ্চয়ই এতে তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে, যদি তোমরা বিশ্বাস করো।

এর পর আল্লাহ বলেছেন, ‘তারপর তালুত যখন সসৈন্যে অভিযানে বের হলো তখন সে বলল, আল্লাহ একটা নদী দিয়ে তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন। তাই যে-কেউ সেই নদী থেকে পানি পান করবে, সে আমার দলে থাকবে না, আর যে ওই পানি। পান করবে না সে আমার দলে থাকবে। এ ছাড়া যে-কেউ তার হাত দিয়ে এক আজলা পানি নেবে সে-ও। কিন্তু (যখন তারা নদীর কাছে গেল) তাদের অল্প কয়েকজন ছাড়া বেশির ভাগ লোকই তার থেকে পানি পান করল । যখন সে (তালুত) ও তার সঙ্গে যারা বিশ্বাস করেছিল তারা তা পার হলো তখন তারা বলল, আমাদের (এমন) শক্তি ও সাধ্য নেই যে আজ জালুত ও তার সৈন্যের সঙ্গে যুদ্ধ করি। কিন্তু যারা আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বিশ্বাস করেছিল তারা বলল, 'আল্লাহর অনুমতিক্রমে কত ছোট দল বড় দলকে পরাস্ত করেছে। আর আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।

আরও পড়ুনসুরা ওয়াকিয়ায় কেয়ামত সম্পর্কে জানা যায়০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তারা যখন জালুত ও তার সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হলো তখন তারা বলল, হে আমাদের প্রতিপালক। আমাদের ধৈর্য দাও, আমাদের পা অবিচলিত রাখো ও অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করো।

‘সুতরাং তখন তারা আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাদের পরাজিত করল। দাউদ জালুতকে বধ করল ও আল্লাহ্ তাকে কর্তৃত্ব ও হিকমত দান করলেন এবং যা তিনি ইচ্ছা করলেন তা তাকে শিক্ষা দিলেন। আল্লাহ্ যদি মানবজাতির একদলকে অন্য দল দিয়ে দমন না করতেন, তবে নিশ্চয় পৃথিবী ফ্যাসাদে পূর্ণ হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ বিশ্বজগতের প্রতি মঙ্গলময়। এ সবই আল্লাহর নিদর্শন যা আমি সঠিকভাবে তোমার কাছে আবৃত্তি করছি আর তুমি তো রাসুলদের একজন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৪৯–২৫২)

আরও পড়ুনবাদশাহ ও এক বালকের ঘটনা০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য দ ধ কর আল ল হ ব দ র জন য কর ত ত ব র আল ল ব দশ হ আম দ র তখন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ