Prothomalo:
2025-05-01@03:07:34 GMT

তালুত ও জালুতের কাহিনি

Published: 11th, March 2025 GMT

তালুত ছিলেন বনী ইসরাইল গোষ্ঠীর বাদশাহ। পবিত্র কোরআনে তাঁর কথা উল্লেখ আছে।

বনী ইসরাইলীরা হজরত মুসা (আ.)–এর কাছে আল্লাহর কাছে এমন দোয়া করার আবেদন জানান, যাতে আল্লাহ তাঁদের জন্য একজন বাদশাহ পাঠান। উত্তরে তিনি বলেন, ‘তোমরা তো তাঁর অনুগত হবে না।’ এরপরও তাদের পীড়াপীড়িতে মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। আল্লাহ বনী ইসরাইলিদের জন্য তালুত নামে একজনকে পাঠান।

পবিত্র কোরআনে তালুতের দৈহিক শক্তি এবং জ্ঞানের প্রশংসা করা হয়েছে। তবে নবীর ভবিষ্যদ্বাণী ফলে যায়। তারা ঠিকই তাঁর অনুগত হতে অস্বীকৃতি জানায়। হজরত মুসা (আ.

) তখন তাঁদের বলেন, তালুতের বাদশাহি লাভের প্রমাণ এই যে শত্রুর হস্তগত ‘তাবুতে সকিনা’ অর্থাৎ পবিত্র বস্তুসামগ্রী অচিরেই তালুতের কাছে চলে আসবে। এই ঘটনার প্রমাণ লাভের পর বনী ইসরাইলীরা তালুতের আনুগত্য স্বীকার করে।

আরও পড়ুনফজিলতের আয়াত, আয়াতুল কুরসি২৭ আগস্ট ২০২৩

পরে তালুতের নেতৃত্বে জালুতের, অর্থাৎ বাইবেলের গোলাইয়াথের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রার সময় তালুত তাঁর লোকজনকে এক চুমুকের বেশি নদীর পানি পান না করার নির্দেশ দেন। কিন্তু তারা সে আদেশ অমান্য করলে তাদের পেট ফুলে যায়।

রণাঙ্গনে তালুত ঘোষণা করেন, জালুতকে যে হত্যা করতে পারবে, সে রাজত্বের এক-তৃতীয়াংশ পাবে এবং বাদশাহ হিসেবে তাঁর উত্তরাধিকারী হবে। হজরত দাউদ (আ.) জালুতকে হত্যা করে এই পুরস্কার অর্জন করেন।

পবিত্র কোরআনে সুরা বাকারায় আল্লাহ বলেছেন, ‘তুমি কি তাদেরকে দেখোনি, যারা মৃত্যুভয়ে হাজারে হাজারে নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে গিয়েছিল? তারপর আল্লাহ্ তাদের বলেছিলেন, তোমাদের মৃত্যু হোক। পরে তিনি তাদেরকে জীবিত করলেন। আল্লাহ তো মানুষকে অনুগ্রহ করেন; কিন্তু অনেক মানুষই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।’

আল্লাহ আরও বলেছেন, ‘তুমি কি মুসার পরবর্তী বনী-ইসরাইল প্রধানদের দেখোনি? যখন তারা নিজেদের নবীকে বলেছিল, আমাদের জন্য একজন রাজা ঠিক করো যাতে আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে পারি, সে বলল, যদি তোমাদেরকে যুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়, তবে তোমরা কি মনে কর তখন তোমরা যুদ্ধ করবে না? তারা বলল, যখন নিজেদের ঘরবাড়ি ও সন্তানসন্ততি থেকে দূরে পড়ে আছি তখন কেন আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করব না? তারপর যখন তাদের ওপর যুদ্ধের বিধান দেওয়া হলো, তখন তাদের মুষ্টিমেয় কয়েকজন ছাড়া বেশির ভাগই পৃষ্ঠপ্রদর্শন করল। আর আল্লাহ্ সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালো করেই জানেন।

আরও পড়ুনপ্রকাশ্যে প্রথম কোরআন তিলাওয়াত করা হলো৩০ আগস্ট ২০২৩

‘তাদের নবী তাদেরকে বলেছিল, আল্লাহ্ তালুতকে তোমাদের রাজা নিযুক্ত করেছেন। তারা বলল, আমরা যখন কর্তৃত্ব করার জন্য বেশি যোগ্য তখন সে কেমন করে আমাদের ওপর কর্তৃত্ব করবে, আর প্রচুর ধনসম্পদও তো তাকে দেওয়া হয়নি।

‘সে (নবী) বলল, আল্লাহই তাকে মনোনীত করেছেন আর তিনি তাকে দেহে ও মনে সমৃদ্ধ করেছেন। অবশ্যই আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাঁর কর্তৃত্ব দান করেন। আল্লাহ্ প্রাচুর্যময় তত্ত্বজ্ঞানী। তাঁর কর্তৃত্বের লক্ষণ এই যে তোমাদের কাছে একটা তাবুত (সিন্দুক) আসবে, যাতে তোমাদের জন্য তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে প্রশান্তি ও কিছু জিনিস যা মুসা ও হারুনের বংশধরেরা রেখে গিয়েছে, ফেরেশতারা সেটা বয়ে নিয়ে আসবে। নিশ্চয়ই এতে তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে, যদি তোমরা বিশ্বাস করো।

এর পর আল্লাহ বলেছেন, ‘তারপর তালুত যখন সসৈন্যে অভিযানে বের হলো তখন সে বলল, আল্লাহ একটা নদী দিয়ে তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন। তাই যে-কেউ সেই নদী থেকে পানি পান করবে, সে আমার দলে থাকবে না, আর যে ওই পানি। পান করবে না সে আমার দলে থাকবে। এ ছাড়া যে-কেউ তার হাত দিয়ে এক আজলা পানি নেবে সে-ও। কিন্তু (যখন তারা নদীর কাছে গেল) তাদের অল্প কয়েকজন ছাড়া বেশির ভাগ লোকই তার থেকে পানি পান করল । যখন সে (তালুত) ও তার সঙ্গে যারা বিশ্বাস করেছিল তারা তা পার হলো তখন তারা বলল, আমাদের (এমন) শক্তি ও সাধ্য নেই যে আজ জালুত ও তার সৈন্যের সঙ্গে যুদ্ধ করি। কিন্তু যারা আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বিশ্বাস করেছিল তারা বলল, 'আল্লাহর অনুমতিক্রমে কত ছোট দল বড় দলকে পরাস্ত করেছে। আর আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।

আরও পড়ুনসুরা ওয়াকিয়ায় কেয়ামত সম্পর্কে জানা যায়০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তারা যখন জালুত ও তার সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হলো তখন তারা বলল, হে আমাদের প্রতিপালক। আমাদের ধৈর্য দাও, আমাদের পা অবিচলিত রাখো ও অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করো।

‘সুতরাং তখন তারা আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাদের পরাজিত করল। দাউদ জালুতকে বধ করল ও আল্লাহ্ তাকে কর্তৃত্ব ও হিকমত দান করলেন এবং যা তিনি ইচ্ছা করলেন তা তাকে শিক্ষা দিলেন। আল্লাহ্ যদি মানবজাতির একদলকে অন্য দল দিয়ে দমন না করতেন, তবে নিশ্চয় পৃথিবী ফ্যাসাদে পূর্ণ হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ বিশ্বজগতের প্রতি মঙ্গলময়। এ সবই আল্লাহর নিদর্শন যা আমি সঠিকভাবে তোমার কাছে আবৃত্তি করছি আর তুমি তো রাসুলদের একজন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৪৯–২৫২)

আরও পড়ুনবাদশাহ ও এক বালকের ঘটনা০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য দ ধ কর আল ল হ ব দ র জন য কর ত ত ব র আল ল ব দশ হ আম দ র তখন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় কোটি শ্রমিক রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার বাইরে

দেশের মোট শ্রমিকের ৮৪ দশমিক ১ শতাংশের কোনো দায়দায়িত্ব নেয় না রাষ্ট্র । শ্রমিক হিসেবে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই। কোনো রকম আইনি ও সামাজিক সুরক্ষা নেই। কর্মস্থলের পরিচয়পত্র নেই। কাজের ক্ষেত্রে অন্যায়ের শিকার হলে তাদের শ্রম আদালতে মামলা করার সুযোগও নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী,  অপ্রাতিষ্ঠানিক এই শ্রমিকের সংখ্যা ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার।

বিশালসংখ্যক শ্রমিকের প্রতি রাষ্ট্রের এ রকম অবহেলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সরকারের গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত ২১ এপ্রিল পেশ করা কমিশনের ২৫ সুপারিশের মধ্যে প্রথমে প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সব শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। 

দেশের শ্রম খাতের দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং শ্রমিকের অধিকার ও জীবনমান উন্নয়নে সুপারিশ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে গঠিত ১৯ সদস্যের কমিশনপ্রধান ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। জানতে চাইলে গতকাল তিনি সমকালকে বলেন, ‘আমরা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছি। শ্রম আইনে অন্য সব শ্রমিকের মতো একই অধিকার এবং সুযোগসুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি ক্ষেত্রবিশেষে তাদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছি। সামাজিক সুরক্ষার আওতায় তাদের জন্য ভাতার কথা বলেছি। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকের জন্য এ সুবিধার সুপারিশ করা হয়নি। কারণ, তারা চাকরি শেষে কমবেশি কিছু আর্থিক সুবিধা পান।’ 

কমিশনের এ সব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে নিয়মিত নজরদারি রাখার কথাও জানান তিনি। 

এ বাস্তবতায় আজ বৃহস্পতিবার মহান শ্রমিক দিবস পালন করা হচ্ছে। আজ সরকারি ছুটি থাকবে। এ দিনও কাজ করতে হবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দিবসটি পালনের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। 

বিবিএসের গত নভেম্বরে প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১২ কোটি ৬ লাখ ২০ হাজার। তাদের মধ্যে শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। মোট শ্রমশক্তির ৮৪ দশমিক ১ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। 

দেশে শ্রমশক্তি বলতে ১৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে যারা কর্মে নিয়োজিত এবং বেকার জনগোষ্ঠীর সমষ্টিকে বোঝায়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা–আইএলওর মানদণ্ড অনুযায়ী, যারা সাত দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টার বেতন, মজুরি বা মুনাফার বিনিময় অথবা পরিবারের নিজস্ব ভোগের জন্য পণ্য উৎপাদনের কাজ করেছেন জরিপে তাদের কর্মে নিয়োজিত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আবার যারা কর্মক্ষম কিন্তু কোনো কাজে নিয়োজিত নন, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ খুঁজে বেড়ান এবং ওই সময়ে কাজের সুযোগ পেলে সে কাজ করতে প্রস্তুত তাদের বেকার বলা হয়েছে। এ হিসাবে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৪ লাখ ৬০ হাজার। 

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক কারা 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা–আইএলওর আন্তর্জাতিক শ্রম পরিসংখ্যানবিদের সম্মেলন ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব লেবার স্ট্যাটিসিয়ান্স–আইসিএলসির সংজ্ঞা অনুযায়ী, বেসরকারি অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি বা খানামালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যেগুলোর আইনি সত্তা নেই, পরিপূর্ণ হিসাব নেই, উৎপাদনের হিসাব দিতে হয় না এবং বেসরকারি ও অনিবন্ধিত–এরকম খাতকে অনানুষ্ঠানিক খাত এবং এ খাতের শ্রমিকদের অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক বলা হয়। 

মূলত কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক বেশি। কৃষিতে ৯৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক। শিল্প খাতে ৮২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের বড় অংশই গ্রামে থাকেন। 

বিবিএস বলছে, গ্রামের মোট শ্রমিকের ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। সংখ্যায় তারা ৪ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার। শহরের শ্রমিকদের এ হার কিছুটা কম। ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ। সংখ্যায় এক কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার। নারী শ্রমিকদের ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে থাকেন।

শ্রম আইনে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকেও অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ কমিশনের 

শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, কৃষি, গৃহশ্রমিক, অভিবাসী, স্বনিয়োজিত শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের জন্য শ্রম আইনে সুরক্ষা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে শ্রমিকদের কাজের স্বীকৃতি, পরিচয়পত্র, নিরবচ্ছিন্ন কাজ এবং আয়ের নিশ্চয়তা, মর্যাদাকর শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, এসব শ্রমিকের জন্য রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সব অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলাদা অফিস অথবা ডেস্ক স্থাপন করতে হবে। শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং কল্যাণে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের সব ধরনের তথ্য নিয়ে তথ্যভান্ডার করা, পরিচয়পত্র দেওয়া এবং অবসর ভাতা চালুসহ বেশ কিছু সুপারিশ করে কমিশন। 

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের প্রবীণ শ্রমিকদের জন্য অসরকালীন ভাতার সুপারিশ 

রাষ্ট্রের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের আওতায় বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকেন প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা। অবসরের পরও কিছু সুবিধা পান তারা। তবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা সারা জীবন খাটুনির পর প্রবীণ বয়সে আরও কষ্টে থাকেন। কারণ সামান্যতম কোনো সুবিধা পান না তারা। এ বিবেচনা থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য অসরকালীন ভাতা বা তাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনার সুপারিশ করেছে কমিশন। তাদের অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর নির্ধারণের কথা বলা হয় এতে। দরিদ্র বেকার শ্রমিকদের বয়স্কভাতা এবং তাদের প্রতিদিনের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও অন্যান্য চাহিদা বিবেচনায় বয়স্কভাতার পরিমাণ নির্ধারণের কথা বলেছে কমিশন। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের পেশা ও খাত অনুযায়ী সংগঠিত হওয়া, প্রতিনিধিত্ব করা ও নিয়োগকারী, তাদের সমিতি করার সুযোগ দেওয়ার কথাও বলা হয় কমিশনের সুপারিশে। 

প্রাতিষ্ঠানিকের ৫৫ খাতেও ন্যূনতম মজুরি নেই 

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের চেয়ে কিছুটা ভালো হলেও প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো নয়। এখনও অনেক শিল্প খাতকে ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর আওতায় আনা হয়নি। মালিকপক্ষ যা দেয়, তা মেনে নিয়ে কাজ করেন শ্রমিকরা। এরকম অন্তত ৫৫টি খাতে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়নি। 

শ্রম মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের স্বীকৃত শিল্প আছে ১০২টি। 

টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পের মজুরি বোর্ড হয় সর্বশেষ ১৯৮৩ সালে। অর্থাৎ, গত তিন যুগ ধরে একই মজুরি চলছে এ খাতে। জানতে চাইলে সরকারের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা ইসলাম গতকাল সমকালকে বলেন, ন্যূনতম মজুরি কাঠামোতে বর্তমানে ৪৭টি শিল্প রয়েছে। নতুন করে দুটি শিল্পকে ন্যূনতম মজুরির আওতায় আনা হবে। আরও ২০ শিল্পকে এর আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি জানান, পেট্রোল পাম্পের শ্রমিকদের মজুরি পুনঃনির্ধারণে বোর্ড গঠন হয়েছে। মালিক পক্ষ এ-সংক্রান্ত সভায় আসছে না। এ অবস্থায় করণীয় জানতে শ্রম মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়েছে মজুরি বোর্ড। 

টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পে তিন যুগ ধরে একই মজুরির বিষয়ে জানতে চাইলে রাইসা ইসলাম বলেন, টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পের আর অস্তিত্ব নেই। খাতটি হয়তো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ