সারা দেশে নারীর প্রতি অব্যাহত সহিংসতা এবং মব (দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা) বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্যর্থ হয়েছেন দাবি করে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে কক্সবাজারে মশালমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে কক্সবাজার নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মশালমিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে ঘুম গাছতলা এলাকার পুরাতন শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শেষ হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদ সমাবেশ। কর্মসূচিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), উদীচী, খেলাঘর আসর, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, গ্রিন ভয়েস, ডিভা ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি সংগঠনের কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। সভাপতিত্ব করেন জেলা খেলাঘরের সভাপতি সুবিমল পাল পান্না।

সমাবেশে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কক্সবাজার জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ দেব বলেন, ‘এমন বাংলাদেশ আমরা কখনো চাইনি। পোশাকের নামে নারী লাঞ্ছনাকারী ও নারী নিপীড়নকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। সাত মাসে মব জাস্টিসের নামে যেসব বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেসবেরও বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।’

বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন কক্সবাজার জেলা শাখার নেত্রী ফাতেমা আক্তার বলেন, যে পুরুষ ধর্ষণ করে, সে কখনো মানুষ হতে পারে না। সে বিকৃত মস্তিষ্কের পিশাচ। এমন পিশাচের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ