তুরস্কের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ পাচ্ছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইরাসমাস প্লাস স্টুডেন্ট মোবিলিটি প্রোগ্রামের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়টির তিনজন শিক্ষার্থী এক সেমিস্টার অধ্যায়নের সুযোগ পাবেন। আগামী ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আগ্রহী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যান্ড কোলাবোরেশান সেন্টারের অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড.

মো. রোকনুজ্জামান সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত পৃথক তিন বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

নোবিপ্রবিতে ‘বেস্ট উইমেন রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড’ ঘোষণা

নোবিপ্রবিতে চাইনিজ ভাষা অগ্রাধিকার পাবে: উপাচার্য

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- শিভাস ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, অলনিয়া আলাউদ্দিন কায়কোবাদ ইউনিভার্সিটি এবং সাকারইয়া ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নোবিপ্রবি থেকে একজন শিক্ষার্থী এক সেমিস্টার অধ্যয়নের সুযোগ পাবেন। শিভাস ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও সাকারইয়া ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসে মাস্টার্স প্রোগ্রাম এবং অলনিয়া আলাউদ্দিন কায়কোবাদ ইউনিভার্সিটিতে অনার্স প্রোগ্রামে ফল সেমিস্টারে এ বছরের জন্য অধ্যায়নের সুযোগ পাবেন তারা। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার শুরু হবে।

শিভাস ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির জন্য নোবিপ্রবির এসিসিই, এগ্রিকালচার, সিএসটিই, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, ইইই ও আইসিই বিভাগের অনার্স সম্পন্ন করা এবং মাস্টার্সের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

অলনিয়া আলাউদ্দিন কায়কোবাদ ইউনিভার্সিটির জন্য এসিসিই, অ্যাপ্লাইড ম্যাথ, বিজিই, ইইই, অর্থনীতি, ব্যবসায় প্রশাসন, সিএসটিই, আইসিই, এফটিএনএস ও টিএইচএম বিভাগের অনার্সের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

সাকারইয়া ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের জন্য এগ্রিকালচার, ইইই ও টিএইচএম বিভাগের অনার্স সম্পন্ন করা এবং মাস্টার্সের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে।

আবেদনের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৬০, আইএলটিএস স্কোর ৬.০ অথবা টোফেল স্কোর ৫৪৪ থাকতে হবে।

আবেদন ফর্মের সাথে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত সনদ, বিভাগের চেয়ারম্যান/ডিরেক্টর প্রদত্ত রিকমেন্ডেশন লেটার, মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশনের প্রমাণ ও অন্যান্য ডকুমেন্টস (রিসার্চ পেপার,কো-কারিকুলার এক্টিভিটিস) খামে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যান্ড কোলাবোরেশান সেন্টারের পরিচালকের কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন ভ র স ট ন ব প রব র জন য অন র স

এছাড়াও পড়ুন:

বাণিজ্যবিরোধ: ভারত কেন ট্রাম্পের নিশানায়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের বাণিজ্যনীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় পণ্যের ওপর হোয়াইট হাউসের শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তুতি নেওয়ার পর থেকেই এ আক্রমণের মাত্রা বেড়েছে।  

ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর প্রশাসন আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করছে এবং এর পাশাপাশি অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রাম্প যখন বিশ্বের বহু দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছিলেন, তখনই ভারতকে উদ্দেশ করে তাঁর এমন কঠোর অবস্থান সামনে উঠে আসে।

হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

‘ভারতের শুল্ক বিশ্বে অন্যতম সর্বোচ্চ’, গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেন ট্রাম্প। জবাবে ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পের বক্তব্য ‘লক্ষ্য করেছে’ এবং এর ‘প্রভাব মূল্যায়ন’ করবে।

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্যবিরোধ: পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়ে

আজ থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ধার্য করা ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ঘোষিত সম্ভাব্য শুল্ক থেকে মাত্র ১ শতাংশ কম।

এ হার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ শুল্কের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে  চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশ শুল্কের চেয়ে কিছুটা কম।

হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ শুল্ক ভারতের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা আরও জটিল করে তুলতে পারে। একাধিক দফা আলোচনার মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ১২তম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার ভারত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেওয়া অনেক কোম্পানির নতুন গন্তব্য হয়েছে দেশটি। মে মাসে অ্যাপলের সিইও টিম কুক জানান, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য আইফোন এখন ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে; যাতে উচ্চ শুল্ক এড়ানো যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ওটিআর) তথ্যমতে, গত বছর ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাণিজ্যের মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ১২৯ বিলিয়ন (১২ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার। ভারতের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক, রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি ও কৃষিপণ্য।

ট্রাম্প কেন ভারতকে নিশানা করছেন

সম্প্রতি ট্রাম্প একাধিকবার বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভারতের ‘অতি উচ্চ’ শুল্ক আরোপের সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যও রয়েছে।

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, ‘বছরের পর বছর আমরা ভারতের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ, তাদের শুল্ক অত্যন্ত বেশি।’

এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে ভারত কিছু পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ করেছে।

ওটিআরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে পণ্যবাণিজ্যে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন (৪ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের ঘাটতি দেখেছে। এটি আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। তুলনামূলকভাবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে প্রায় ২৯৫ বিলিয়ন (২৯ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের বাণিজ্যঘাটতিতে ছিল।

আরও পড়ুনভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা, ইরানের পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ ৩১ জুলাই ২০২৫

ট্রাম্প আরও ক্ষুব্ধ যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে।

‘এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা’, বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন ট্রাম্প।

ভারতের প্রতিক্রিয়া

এ সপ্তাহে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ভারত সরকার ট্রাম্পের ওই বক্তব্যে তুলনামূলকভাবে মৃদু, তবে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

ভারতের ওপর ধার্য করা শুল্কহার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশের চেয়ে কিছুটা কম।

বুধবার দেওয়া এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কয়েক মাস ধরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।’

আগস্টের শেষ দিকে দুই দেশের মধ্যে আরেক দফা বাণিজ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’৩০ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্কে ভারতের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কী বলছেন অর্থনীতিবিদেরা১৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ