রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের কাইথাকপাড়ার যুগেজ পাহাড়ে প্রসবকালে একটি বন্যহাতি ও তার শাবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে মৃত মা হাতি ও শাবকটি উদ্ধার করে মাটিচাপা দিয়েছেন বন বিভাগের কর্মীরা। 

প্রসবের সময় যন্ত্রণায় কাতর হয়ে মা হাতি ও শাবকটি মারা যায় বলে বন বিভাগ ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় জানিয়েছে।

রাজস্থলীর গাইন্দ্যা ইউনিয়নে গত ১ মাস ধরে ৯টি বন্যহাতি খাবারের সন্ধানে কাইথাকপাড়া, চুশাকপাড়া, ছাইখ্যংমুখপাড়া, তমসেংপাড়া, রেমাছড়া, তুলাছড়ি, হাজিপাড়া, মববইপাড়া, উগারিপাড়া, কাইংটংপাড়াসহ প্রায় ১৫টি পাড়ায় বিচরণ করছিল। এসব এলাকায় স্থানীয়দের বসতঘর, বাগানের ফল ও সেগুনবাগান নষ্ট করে হাতির পালটি। বন্যহাতির আক্রমণে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কইথাকপাড়া এলাকায় উচ্চসিং মারমা নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। হাতির তাণ্ডবে এলাকার লোকজন দিনে কিছুটা নিরাপদে থাকলেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্ক বেড়ে যায়। তারা অনেকটা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

স্থানীয় লোকজন ও বন বিভাগ সূত্র জানায়, গতকাল সকালে ইউনিয়নের কাইথাকপাড়ার লোকজন বাগানে কাজ করতে গেলে যুগেজ পাহাড়ের ওপর হাতিটি মৃত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে বন বিভাগের রাজভিলা রেঞ্জের রেঞ্জ বকর্মকর্তা ফিরোজ আল আমিন, রাজস্থলী উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জেন্ট প্রতিনিধি চিরঞ্জিত চাকমা, গাইন্দ্যা ইউপি চেয়ারম্যান পুচিংমং মারমা, ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার হ্লামংচিংসহ একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। তারা হাতির মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে নির্ণয়ের জন্য ময়নাতদন্ত ও মৃত হাতির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠান। ময়নাতদন্ত শেষে মা হাতি ও শাবককে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় রাজস্থলী থানায় একটি জিডি হয়েছে।

রাজস্থলী পান্উড বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারজ আল আমিন জানান, হাতিটির শরীরে কোনো গুলি বা আঘাতের চিহ্ন নেই। ধারণা করা হচ্ছে, বাচ্চা প্রসবকালে অসুস্থ হয়ে হাতিটি মারা গেছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সহকারী চিকিৎসক চিরনিজৎ চাকমা বলেন, দুই থেকে তিন আগে বাচ্চা প্রসবের সময় যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে মা হাতিটি ও তার বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে। হাতিটির বয়স ২০ বছরের বেশি হতে পারে। ওজন ৩ টন ও দৈর্ঘ্য ১০ থেকে ১২ ফুট। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন কানাই পান্উড বন বিভাগের উপ-বনসংরক্ষক মো.

সাজ্জাদুজ্জামান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ