পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ
Published: 11th, March 2025 GMT
পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আসামির স্বজন ও ছাত্রদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
ঈশ্বরগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব রিদওয়ান আহমেদের ভাষ্য, তাদের এলাকা থেকে দু’জন আসামিকে ধরে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে থানা চত্বরে গিয়ে কথা বলতে থাকেন তিনি। কিছুক্ষণ পর পুলিশ সদস্য মিজানুর রহমান গিয়ে তাদের বের হতে বলেন। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্য উচ্চবাচ্য শুরু করেন। এ সময় তিনি নিজেকে ছাত্রদলের সদস্য সচিব পরিচয় দিলে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওই পুলিশ সদস্য।
ছাত্রদলের এই নেতা জানান, পুলিশ সদস্য থানার ভেতরে গিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে আবার বাইরে বের হয়ে আসেন। এ সময় ওই পুলিশ সদস্য নিজের শরীরের পোশাক ছিঁড়ে বলতে থাকেন, ‘আমার পোশাক ছিঁড়লি কেন, গায়ে হাত তুললি কেন।’ ওই সময় থানা চত্বরে থাকা আসামির পরিবারের সদস্যদেরও মারধর করা হয়। পরে তাঁকে (ছাত্রদল নেতা) থানার ওসির কক্ষে নিয়ে যায়। পুরো ঘটনা ওসিকে জানিয়ে পুলিশ সদস্যের বিচার চান তিনি।
পরে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া থানায় গেলে ওসি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন।
আসামির স্বজন শিমরাইল গ্রামের বাসিন্দা লুৎফুন নাহার মারধরের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমার ভাই আমিনুল ইসলামকে গত রাতে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে। মাদকের মামলায় তাঁকে চালান দেয়। ভাইকে আদালতে পাঠানোর সময় থানা চত্বরে অপেক্ষমাণ থাকার সময় আমাকেও মারধর করা হয়। আমি বিচার চাই।’
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে পুলিশ সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে ওসির সঙ্গে কথা বলেন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুর রহমান জানান, পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ছাত্রদলের একজনের কথাকাটাকাটি হয়েছিল। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরে মিটমাট করে দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ ছ ত রদল ন ত ম রধর প ল শ সদস য র ছ ত রদল র র সদস য ম রধর র
এছাড়াও পড়ুন:
৫ কোটি টাকার সেতুতে যানবাহন চলবে কবে
ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী আঞ্চলিক সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৫ কিলোমিটার। ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালে এর সংস্কার কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ অংশের কাজ সম্পন্ন হলেও অধিগ্রহণ জটিলতায় পৌর এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার এবং সোহাগী ইউনিয়নের কিছু অংশে কাজ আটকে আছে। ২০২২ সালে ইউনিয়নের বগাপুতা খালের ওপর সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ দশমিক ৮২৮ মিটার একটি সেতু নির্মাণ করা হয়।
এর পর পার হয়েছে আড়াই বছর। কিন্তু সেতুতে যানবাহন চলাচলই শুরু হয়নি। কারণ সংযোগ সড়কই যে নেই। তাহের ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে। অবকাঠামোর কাজ শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সংযোগ সড়ক নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ফলে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বগাপুতা খালের ওপর সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষ।
সংযোগ সড়কের কাজ কবে সম্পন্ন হবে, সেটিও নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহাগ বলেন, চোখের সামনে সেতু নির্মাণ হয়ে আছে, অথচ কোনো কাজেই আসছে না। তাঁর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসন হয়নি। মানুষের ভোগান্তি লাগবে দ্রুত জমির মালিকদের মূল্য বুঝিয়ে দিয়ে এটি সচল করতে হবে। পুরোনো সেতুর ওপর দিয়ে বড় যানবাহন পার হওয়ার সময় অন্যগুলোকে অপেক্ষা করতে হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, আঠারবাড়ী-ঈশ্বরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের একপাশে খালের ওপর রয়েছে নতুন সেতুটি। দুই পাশে সড়ক নেই। পাশের পুরোনো নড়বড়ে সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন ধরনের হালকা ও ভারী যানবাহন। এ সময় ট্রাকচালক ওয়াদুদ মিয়া বলেন, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন শহর থেকে নানান ধরনের পণ্য আঠারবাড়ী (রায়ের বাজার) সরবরাহে এটিই একমাত্র পথ। পুরো সড়ক ঠিকমতো এলেও পুরোনো সেতুর ওপর উঠতেই কাঁপাকাঁপি শুরু হয়। মনে হয়, ‘এই বুঝি ভেঙে ট্রাকসহ নিচে পড়ে গেলাম’। নতুন সেতু চালু হলে নির্বিঘ্নে চলাচল করা যেত।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সেতুর দুই পাশে ১০ থেকে ১২ জনের জমি রয়েছে। আড়াই বছর আগেই সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলেও অধিগ্রহণের টাকা ছাড়া জমি ছাড়তে চাইছেন না মালিকরা। ফলে সংযোগ সড়কের অভাবে অচল অবস্থায় পড়ে আছে সেতুটি। অটোরিকশার যাত্রী ইফরাত তানজীম তাবাসসুমকে বিরক্ত নিয়ে বিড় বিড় কিছু বলতে শোনা যায়। আলাপকালে তিনি বলেন, ‘মরার একটা সেতু শুধু শুধু বানিয়ে ফেলে রাখছে। মানুষের উপকারে আসবে তো দূরের কথা, আরও ভোগান্তি পোহাতে হয়।’
বগাপুতা গ্রামের বাসিন্দা ও জমির একাধিক মালিকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়। আবদুল গফুর, আবদুস ছাত্তার, লতিফ মিয়া, আবদুর রশিদ, মজিবুর রহমান ও আজিজুল হকের ভাষ্য, কর্তৃপক্ষ তাদের জমির সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না। টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তারা সংযোগ সড়ক হতে দেবেন না।
সেতুটির দুই পাশের ২৫০ থেকে ৩০০ মিটার ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সংযোগ সড়ক হচ্ছে না বলে জানান সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুস ছালাম। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জমির মালিকদের সাত ধারা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রাক্কলন তৈরির কার্যক্রম চলছে। এটি পাসের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রাক্কলন পাস হয়ে এলে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে। এ জন্য কতদিন সময় লাগবে, তা বলা যাচ্ছে না।