ধর্ষণের ঘটনায় টাকা দিয়ে ‘মীমাংসার’ চেষ্টা, অভিযুক্ত ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার
Published: 12th, March 2025 GMT
বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে মানসিক ভারসাম্যহীন এক কিশোরীকে জামাল হোসেন (৩২) নামের এক শ্রমিক ধর্ষণ করেছেন অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে থানায় মামলা না করে অভিযুক্তকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানার মাধ্যমে পাড়ার কার্বারি (পাড়াপ্রধান) বিষয়টি মীমাংসা করেছেন। এ জন্য কিশোরীর স্বজন ও গ্রামবাসীদের কেউই এ নিয়ে মামলা করতে রাজি নয়। বাধ্য হয়ে পুলিশ অভিযুক্ত জামাল হোসেনকে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে। কোনো ধর্ষণের মামলা না হলে অভিযুক্ত জামাল হোসেন আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবেন।
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নে গত সোমবার সন্ধ্যায় ১৬ বছরের মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরী পাড়ার পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। সেখানে তাঁকে একা পেয়ে নির্মাণশ্রমিক জামাল হোসেন কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। পরে কিশোরীর কান্না ও চিৎকারে পাড়াবাসী এগিয়ে গেলে জামাল পালিয়ে যান। গতকাল সকালে সড়কের কাজে এলে অন্য শ্রমিকদের সহযোগিতায় পাড়াবাসী তাঁকে আটক করেন। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনায়।
রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহ্লা অং মারমা জানিয়েছেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশসহ তাঁরা ওই পাড়ায় যান। কিন্তু কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা মামলা করতে রাজি হননি। পাড়ার কার্বারি পাইশৈ খেয়াং, আনসার ভিডিপি পাইগ্য খেয়াংসহ কয়েকজন একটি কাগজ দেখিয়ে বলেছেন, জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত ধর্ষণের অভিযোগটি তাঁরা সামাজিকভাবে বিচার করেছেন। জামাল হোসেনকে বিচারে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরিবার থেকে আর কেউ কোনো মামলা করবে না।
রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ আজ বুধবার বেলা তিনটায় জানিয়েছেন, ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় পরিবার ও পাড়াবাসী মামলা করতে রাজি হয়নি। এ জন্য জামাল হোসেনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণের কোনো মামলা না হলে আদালত থেকে তিনি জামিন নিয়ে বের হতে পারবেন।
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পর গতকাল জামাল হোসেনকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু পাড়ার কার্বারি বিষয়টি সালিসে মীমাংসা করেছেন। এটি মীমাংসার যোগ্য নয়, বলে বারবার বোঝানোর পরও তাঁরা কেউ মামলা করতে রাজি হননি। ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষাও করা যায়নি। গ্রামবাসী পুলিশের তদন্তকাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এই অবস্থায় আটক জামাল হোসেনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরে পরিবার অথবা পাড়ার প্রত্যক্ষদর্শী কেউ চাইলে মামলা করতে পারেন।
এদিকে বান্দরবানের হেডম্যান-কার্বারি কল্যাণ পরিষদের সংশ্লিষ্টরা বলছেন গুরুতর ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে কার্বারি কোনোভাবে বিচারের এখতিয়ার রাখেন না। পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মংনু মারমা বলেছেন, ধর্ষণ বা ধর্ষণের অভিযোগের মতো গুরতর ফৌজদারি অপরাধের বিচার পাড়ার কার্বারি করতে পারে না। এমনকি ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি অনুযায়ী, মৌজার হেডম্যান ও সার্কেল চিফ বা রাজারও এমন বিচারের এখতিয়ার নেই। খেয়াং কার্বারি যদি খেয়াং জনগোষ্ঠীর রীতিনীতি দেখিয়ে বিচার করেন, তাহলে তিনি আইনের এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ৫৪ ধ র য় গ র প ত র কর ছ ন পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
‘মাস্তান’কে ছাড়া রিয়ালের অ্যানফিল্ড–অভিযান এবং সালাহর রেকর্ডের হাতছানি
অ্যানফিল্ডে যাওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ দুঃসংবাদ পেল রিয়াল মাদ্রিদ। লিভারপুলের বিপক্ষে আজ রাতে খেলতে পারবেন না ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো। দলের মেডিকেল বিভাগ জানিয়েছে, আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডার ভুগছেন ‘স্পোর্টস হার্নিয়া’-তে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা লিখেছে, মাস্তানতুয়োনো কবে ফিরতে পারবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে আজকের ম্যাচে তাঁর না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত।
গতকাল অনুশীলনেও ছিলেন না মাস্তানতুয়োনো। সাধারণত প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন করে রিয়াল। কিন্তু এবার কোচ জাবি আলোনসো একটু ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। অ্যানফিল্ডে সাংবাদিকদের সামনে কৌশল প্রকাশ না করে তিনি শেষ অনুশীলন সেরেছেন ক্লাবের নিজস্ব মাঠ ভালদেবাসে। মার্কার বিশ্লেষণ, প্রতিপক্ষ যেন শেষ মুহূর্তে কিছু বুঝে না ফেলে, সে জন্যই আলোনসোর এ সিদ্ধান্ত।
রিয়ালের বর্তমান ফর্ম অবশ্য কোনোভাবেই লুকানো যাচ্ছে না। লা লিগায় গত পরশু রাতে ভ্যালেন্সিয়াকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে এটি তাদের ১৩তম জয়। একমাত্র হারের স্বাদ লিগে। ১২৬ বছরের ইতিহাসে রিয়ালের এর চেয়ে ভালো সূচনা হয়েছে মাত্র দুবার, সর্বশেষ ১৯৬১-৬২ মৌসুমে।