বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে মানসিক ভারসাম্যহীন এক কিশোরীকে জামাল হোসেন (৩২) নামের এক শ্রমিক ধর্ষণ করেছেন অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে থানায় মামলা না করে অভিযুক্তকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানার মাধ্যমে পাড়ার কার্বারি (পাড়াপ্রধান) বিষয়টি মীমাংসা করেছেন। এ জন্য কিশোরীর স্বজন ও গ্রামবাসীদের কেউই এ নিয়ে মামলা করতে রাজি নয়। বাধ্য হয়ে পুলিশ অভিযুক্ত জামাল হোসেনকে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে। কোনো ধর্ষণের মামলা না হলে অভিযুক্ত জামাল হোসেন আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবেন।

পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নে গত সোমবার সন্ধ্যায় ১৬ বছরের মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরী পাড়ার পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। সেখানে তাঁকে একা পেয়ে নির্মাণশ্রমিক জামাল হোসেন কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। পরে কিশোরীর কান্না ও চিৎকারে পাড়াবাসী এগিয়ে গেলে জামাল পালিয়ে যান। গতকাল সকালে সড়কের কাজে এলে অন্য শ্রমিকদের সহযোগিতায় পাড়াবাসী তাঁকে আটক করেন। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনায়।

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহ্লা অং মারমা জানিয়েছেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশসহ তাঁরা ওই পাড়ায় যান। কিন্তু কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা মামলা করতে রাজি হননি। পাড়ার কার্বারি পাইশৈ খেয়াং, আনসার ভিডিপি পাইগ্য খেয়াংসহ কয়েকজন একটি কাগজ দেখিয়ে বলেছেন, জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত ধর্ষণের অভিযোগটি তাঁরা সামাজিকভাবে বিচার করেছেন। জামাল হোসেনকে বিচারে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরিবার থেকে আর কেউ কোনো মামলা করবে না।

রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ আজ বুধবার বেলা তিনটায় জানিয়েছেন, ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় পরিবার ও পাড়াবাসী মামলা করতে রাজি হয়নি। এ জন্য জামাল হোসেনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণের কোনো মামলা না হলে আদালত থেকে তিনি জামিন নিয়ে বের হতে পারবেন।

আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পর গতকাল জামাল হোসেনকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু পাড়ার কার্বারি বিষয়টি সালিসে মীমাংসা করেছেন। এটি মীমাংসার যোগ্য নয়, বলে বারবার বোঝানোর পরও তাঁরা কেউ মামলা করতে রাজি হননি। ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষাও করা যায়নি। গ্রামবাসী পুলিশের তদন্তকাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এই অবস্থায় আটক জামাল হোসেনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরে পরিবার অথবা পাড়ার প্রত্যক্ষদর্শী কেউ চাইলে মামলা করতে পারেন।

এদিকে বান্দরবানের হেডম্যান-কার্বারি কল্যাণ পরিষদের সংশ্লিষ্টরা বলছেন গুরুতর ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে কার্বারি কোনোভাবে বিচারের এখতিয়ার রাখেন না। পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মংনু মারমা বলেছেন, ধর্ষণ বা ধর্ষণের অভিযোগের মতো গুরতর ফৌজদারি অপরাধের বিচার পাড়ার কার্বারি করতে পারে না। এমনকি ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি অনুযায়ী, মৌজার হেডম্যান ও সার্কেল চিফ বা রাজারও এমন বিচারের এখতিয়ার নেই। খেয়াং কার্বারি যদি খেয়াং জনগোষ্ঠীর রীতিনীতি দেখিয়ে বিচার করেন, তাহলে তিনি আইনের এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৫৪ ধ র য় গ র প ত র কর ছ ন পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

বিবাহবিচ্ছেদের পর আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন চাহাল

এ বছরের মার্চে পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন ভারতের লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল। ইউটিউবার–অভিনেত্রী ধনশ্রী বর্মার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁর। ভারতের ইউটিউবার রাজ শামানির সঙ্গে পডকাস্টে সংসার ভাঙা নিয়ে কথা বলেছেন চাহাল।

ভারতের হয়ে ২০২৩ সালে সর্বশেষ খেলা এই লেগ স্পিনার জানিয়েছেন, কয়েক বছর ধরেই তাঁর ও ধনশ্রীর মধ্যে সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছিল না। তবু তাঁরা এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগপর্যন্ত ব্যক্তিগত জীবনের ঝামেলা সামনে নিয়ে আসেননি। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিবাহবিচ্ছেদের পর তিনি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যান এবং একপর্যায়ে আত্মহত্যা করার কথাও ভাবেন।

আরও পড়ুনকাঁধের চোটে ভারতের বিপক্ষে আর খেলতে পারবেন না ওকস১ ঘণ্টা আগে

ভারতের হয়ে ৭২ ওয়ানডে ও ৮০ টি–টোয়েন্টি খেলা চাহালের কাছে রাজ শামানি জানতে চেয়েছিলেন, ঠিক কী কারণে তাঁদের সম্পর্কটা ভেঙে গেল? ৩৫ বছর বয়সী চাহালের উত্তর, ‘বেশ কিছুদিন ধরে সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিই চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমরা ব্যাপারটা সামনে আনব না।’

২০১৬ সালের জুনে ভারতের হয়ে অভিষেক চাহালের। চার বছর পর ধনশ্রীকে বিয়ে করেন তিনি। চাহাল জানিয়েছেন, জাতীয় দলে হয়ে খেলায় তাঁর ব্যস্ত হয়ে পড়া এবং ধনশ্রীরও নিজ ক্যারিয়ার নিয়ে মনোযোগী হয়ে পড়ায় কেউ কাউকে সময় দিতে পারেননি। সাংসারিক ঝামেলার এটাই মূল কারণ বলে মনে করেন চাহাল।

যুজবেন্দ্র চাহাল ও ধনশ্রী বর্মা

সম্পর্কিত নিবন্ধ