ইসলামী চিন্তাবিদরা বলেন, চোখে ড্রপ দিলে সরাসরি পেটে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সেক্ষেত্রে রোজা রেখে চোখে ড্রপ দিতে পারেন। তবে অনেক রোগীই মনে করেন, চোখে ড্রপ দিলে রোজা ভেঙে যায়। সেক্ষেত্রে চোখে ইনফেকশন দেখা দিলেও যারা ড্রপ ব্যবহার করতে চান না তাদের চোখে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা।

ডাঃ মোমিনুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ও কনসালটেন্ট রেটিনা ও ফ্যাকো সার্জন এবং ইউভিয়া বিশেষজ্ঞ একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘রোজার সময় আমরা অনেক রোগী পায় যারা রোজা রেখে চোখে ড্রপ ব্যবহার করতে অনীহা প্রকাশ করেন। রোগীর এই প্রশ্নের উত্তর আমরা বিভিন্নভাবে দিযে থাকি। রোগীদেরকে অনেক সময় বোঝানোর চেষ্টা করি চোখে ড্রপ দিলে রোজা ভাঙে না।’’

এই চিকিৎসক আর বলেন, ‘‘ চোখের ভেতর নেত্রনালীর যে ছিদ্রটা আছে আমাদের গলায় চলে যায়। প্রতি মুহূর্তে আমাদের চোখে যে পানি তৈরি হচ্ছে সেটা আমাদের চোখের নেত্রনালী দিয়ে গলায় পৌঁছে যাচ্ছে। এই পানিটা যখন গলায় পৌঁছে যায় তখন আমরা বুঝতে পারছি না, কারণ হচ্ছে এই পানি নিয়মিত পাচ্ছি। কিন্তু এই পানিটা যখন নেত্রনালী দিয়ে যেতে পারে না তখন চোখের বাইরে পড়ে এ জন্য অনেক সময় রোগীরা বলেন, চোখ দিয়ে পানি পড়ে। তার অর্থ নেত্রনালী দিয়ে পানি যাওয়ার রাস্তাটা বন্ধ হয়ে গেছে। সেজন্য পানিটা যেতে পারছে না, বাইরে বের হচ্ছে। এই যে পানিটা রেগুলার যাচ্ছে এইটাতে আমাদের রোজা ভাঙছে না, ঠিক তেমনি আমরা যখন চোখে ড্রপ নেই এটাও চোখের নেত্রনালী দিয়ে গলার ভেতর চলে যায় কিন্তু এতে আমাদের রোজা ভাঙছে না। কারণ হচ্ছে, আমরা যখন ওযু করি তখন চোখে পানি দেই। সেই পানিও চোখের নেত্রনালী দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়। এতেতো রোজা ভাঙে না। ওযুর পানির চেয়েও খুবই কম ড্রপ চোখ দেই।’’

আরো পড়ুন:

ফ্যাটি লিভার রোগীদের রোজা রাখার উপকারিতা

হার্টের রোগী রোজা রাখতে চাইলে করণীয়

এরপরেও যদি রোগীর অনীহা থাকে তাহলে ইফতারের পরে এবং সেহরিতে চোখে ড্রপ দিতে পারেন।

উল্লেখ্য, ডাঃ মোমিনুল ইসলামের সতর্কবার্তা হলো, যাদের চোখে ইনফেকশন দেখা দেয় সেক্ষেত্রে দুই, তিন ঘণ্টা পর পর চোখে ড্রপ দেওয়া লাগতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি যদি মনে করেন দিন শেষে চোখে ড্রপ দেবেন, সেক্ষেত্রে চোখ ভালো হবে না। বরং চোখ সারা জীবনের জন্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ