ভারতের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মরুভূমি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় অপপ্রচার বন্ধের দাবিতে এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, আপনি যদি বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসতেন, তাহলে হাসিনার মতো ফ্যাসিস্টকে আপনি কোনোদিনও সমর্থন দিতেন না। বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের ষড়যন্ত্র আর সহ্য করা হবে না। ভারতের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে বাংলাদেশকে মরুভূমি করেছে শেখ হাসিনা। এদেশের মাটিতে হাসিনার সমস্ত অপকর্মের বিচার হবে।
তিনি বলেন, “এই অর্জিত স্বাধীনতার মধ্যে দিয়ে সামনের দিনে যে সরকার আসবে, সেই সরকারও যদি হাসিনার মতো এ দেশে ফ্যাসিজম কায়েম করে, আমরা সেটি কখনোই মেনে নেব না। আমরা আবারও রাজপথে লড়াই করব।”
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, “বাংলাদেশে এখন জাতিসংঘের মহাসচিব এসেছেন। আপনি তাকে বলে দেবেন, শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদেরকে নিয়ে রাজনীতি করে টাকা কামিয়েছে। আপনি মহাসচিবকে আরো বলে দেবেন যে, তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার হারাবার কিছু নেই।”
এ সময় ধর্ষণের শিকার মাগুরার শিশুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতকালের করুণ ইতিহাস, নিষ্ঠুর কাহিনী দেশের ইতিহাসে লেখা থাকবে যুগ যুগ ধরে। আছিয়ার ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন—বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজীসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা/মামুন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ল আবদ ন ফ র ক উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।