‘এলজিইডির’ নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে পাওয়া গেল ৩৭ লাখ টাকা
Published: 14th, March 2025 GMT
নাটোরের সিংড়ায় একটি প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালিয়ে গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী পরিচয়দানকারী মো. সাবিউল ইসলামের কাছ থেকে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করেছে পুলিশ। এসময় গাড়িটি জব্দ করে ওই প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় তারা।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত ২টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় পুলিশের নিয়মিত চেকপোস্টে তল্লাশির সময় টাকা ও গাড়ি জব্দ করা হয়। সিংড়া থানার ওসি মো.
এর আগে, রাত ১২টার দিকে মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। এসময় গাইবান্ধা থেকে রাজশাহীগামী একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকারকে থামার সিগন্যাল দেয় পুলিশ। পরে প্রাইভেটকার তল্লাশি করে টাকা পাওয়া যায়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. একরামুল হক, সিংড়ার ইউএনও মাজাহারুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (সিংড়া) সার্কেল সনজয় কুমার সরকার, নাটোর সদর থানার ওসি মাহাবুর রহমান, সিংড়া থানার ওসি মো. আসমাউল হক ঘটনাস্থলে যান।
আরো পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে পৃথক স্থানে দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৩ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক
আটক মো. সাবিউল ইসলাম রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে গাইবান্ধায় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত। তার আদি বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায় বলে জানা গেছে।
সিংড়া থানার ওসি মো. আসমাউল হক বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় পুলিশের নিয়মিত চেকপোস্ট বসানো হয়। এসময় সন্দেহভাজন একটি প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালিয়ে কালো ব্যাগ ভর্তি টাকা দেখতে পায় পুলিশ। গাড়ির আরোহীর পরিচয় জানতে চাইলে, তিনি নিজেকে গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বলে পরিচয় দেন। এতে সন্দেহ হলে প্রাইভেটকার, টাকাসহ আরোহী সাবিউল ইসলাম ও চালককে আটক রেখে বিষয়টি পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়িতে থাকা ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা পান। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় টাকা ও প্রাইভেটকারটি জব্দ করে ওই প্রকৌশলীকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।”
তিনি আরো বলেন, “এলজিইডির প্রকৌশলী পরিচয়দানকারী সাবিউল ইসলাম পুলিশকে প্রথম দিকে জানান, তার কাছে জমি বিক্রির ৩০ লাখ টাকা আছে। পরে গুনে আরো ৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা বেশি পাওয়া যায়। বিষয়টি উদঘাটন করার চেষ্টা চলছে।”
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. একরামুল হক বলেন, “জব্দকৃত টাকার উৎস সর্ম্পকে বৈধ কোনো প্রমাণ দেখাতে না পারলেও তিনি (সাবিউল ইসলাম) জমি কেনা বেচার টাকা বলে দাবি করেছেন। যদি বৈধ কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেন, তাহলে তাকে টাকাসহ ছেড়ে দেওয়া হবে। আর যদি দেখাতে না পারেন, সেক্ষেত্রে তদন্ত করে তার ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরো বলেন, “আদৌ তিনি গাইবান্ধা জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। এতো টাকা তিনি ব্যাংকের মাধ্যমে না নিয়ে রাতের আঁধারে গাড়িতে করে কেন বহন করছিলেন, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হবে।”
এলজিইডির প্রকৌশলী পরিচয়দানকারী সাবিউল ইসলাম জানান, জমি বিক্রির বৈধ টাকা নিয়ে গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিলেন তিনি।
ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস