রংপুরে পুলিশের সেই উপকমিশনার শিবলী প্রত্যাহার
Published: 15th, March 2025 GMT
ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ ও থানায় মামলা করতে আসা ব্যক্তিকে মারধরের ঘটনায় রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শিবলী কায়সারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শনিবার রংপুর মহানগর পুলিশ থেকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) কাজী মো. ফজলুল করিমের সই করা চিঠিতে রোববারের মধ্যে তাকে যোগদান করতে বলা হয়েছে।
শনিবার রংপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে রংপুরের স্থানীয় ব্যবসায়ী লিপি খান ভরসা উপকমিশনার শিবলীর বিরুদ্ধে মামলা করতে বৃহস্পতিবার তার ম্যানেজার পলাশ হাসানকে মহানগর কোতোয়ালি থানায় পাঠান। এ সময় পলাশকে থানাতেই পেটান পুলিশের ওই কর্মকর্তা। শনিবার সমকালে ‘রংপুরে পুলিশের উপকমিশনারের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
লিপি খান ভরসার অভিযোগ, গত ১৩ নভেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মামলায় আসামি হন তিনি। এ মামলা থেকে নাম বাদ দিতে রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক অমিত বণিকের মাধ্যমে তার কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন উপ-কমিশনার শিবলী।
গত ১১ মার্চ উপ-কমিশনার শিবলীর বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির কথা জানিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর, মহানগর পুলিশ কমিশনার ও সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন লিপি খান। এ অভিযোগে শুক্রবার সকালে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে উপকমিশনার (অপরাধ) থেকে বদলি করে উপকমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস)-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক এডিসি ইশতিয়াকের নির্যাতন নিয়ে অভিযোগ জমা দিলেন রাশেদ খান
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ইশতিয়াক আহমেদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা দিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
২০১৮ সালের ১ জুলাই ইশতিয়াক আহমেদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটে তাঁর কক্ষে রাশেদ খানের ওপর নির্যাতন চালান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগে রাশেদ খান বলেন, ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ইশতিয়াক আহমেদের কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি বুট জুতা পরা অবস্থায় তাঁর গোপন অঙ্গে লাথি মারেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে গালিগালাজ ও অনবরত চড়থাপ্পড়, লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন।আজ বুধবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এ অভিযোগ জমা দেন রাশেদ খান।
অভিযোগে রাশেদ খান বলেন, ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ইশতিয়াক আহমেদের কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি বুট জুতা পরা অবস্থায় তাঁর গোপন অঙ্গে লাথি মারেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে গালিগালাজ ও অনবরত চড়থাপ্পড়, লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন।
ওই নির্যাতনের রেশ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, ‘সেই নির্যাতনে আমার শরীরের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায়। অনেক জায়গা থেঁতলে যায়। এখন মাঝেমধ্যে প্রেশার কমে শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ব্যথায় ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না, ঘুমের মধ্যে আঁতকে উঠি।’
অত্যাচার করা হলেও পুলিশ তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি অভিযোগ করে রাশেদ খান বলেন, ‘আমাকে মাত্র কয়েকটি ব্যথার ট্যাবলেট দিয়েছিল পুলিশ।’
ইশতিয়াক আহমেদকে গ্রেপ্তারে দেরি করা হয়েছে উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, বিচার যত ধীরে শুরু হবে, অপরাধীরা তত দেশ ছেড়ে পালাবে। প্রশাসনের গাফিলতির সুযোগে অনেক অপরাধী দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। অন্য অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
ইশতিয়াক আহমেদের নির্যাতনের শিকার অন্য ভুক্তভোগীদেরও মামলা করার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি, ইশতিয়াক আহমেদ জামিন পেয়ে যেতে পারেন। তাঁকে ছাড়া হলে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে অন্যায় করা হবে।’
এর আগে গত রোববার পুলিশ সিটিটিসির সাবেক এ অতিরিক্ত উপকমিশনারকে রাঙামাটি থেকে গ্রেপ্তার করে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। গতকাল মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।