Prothomalo:
2025-05-01@04:42:54 GMT

ঢাকাসহ ১২ জেলায় তাপপ্রবাহ

Published: 16th, March 2025 GMT

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১২ জেলায় আজ রোববার মৃদু তাপপ্রবাহ বইছে। রাজধানীতে এক দিনের ব্যবধানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বেড়ে গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মধ্য মার্চে এমন তাপপ্রবাহ কিছুটা অস্বাভাবিক বলেই মনে করছেন তাঁরা। বাতাসের প্রবাহ কমে যাওয়া এবং সূর্যকিরণ দীর্ঘ হওয়ার কারণেই এবার তাপপ্রবাহ বেড়ে গেছে। আবার বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক বেশি। সে কারণে মৃদু তাপপ্রবাহ হলেও গরমের অনুভূতি খানিকটা বেশি হচ্ছে। তাপপ্রবাহের এই ধারা আগামী দু–এক দিন থাকতে পারে।

যদি কোনো এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তবে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ। তীব্র তাপপ্রবাহ তখন ধরা হয় যখন তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। তাপমাত্রা ৪২–এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য হয়।

আজ রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে, ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দেশের আর যেসব স্থানে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি পার হয়েছে, অর্থাৎ মৃদু তাপপ্রবাহ বইছে সেগুলো হলো ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা (ঈশ্বরদী), খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, পটুয়াখালী, রাঙামাটি ও চুয়াডাঙ্গা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক আজ প্রথম আলোকে বলেন, এখন সূর্য কিরণ থাকার সময় বেড়ে যাচ্ছে। এরই সঙ্গে আবার বায়ু প্রবাহের গতিও কম। পাশাপাশি বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প। তাতে গরমের অনুভূতি বাড়ছে। এমন অবস্থা দু–এক দিন থাকতে পারে।

আজ সকালে রাজধানীতে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮২ শতাংশ। আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকার কারণেই তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি থাকলেও অনুভূতি ৩৮ এর মতো মনে হচ্ছে, এমনটাই মনে করেন আবুল কালাম মল্লিক।

আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রতি মাসের শুরুতে ওই মাসের আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয়। সে অনুযায়ী এই মার্চ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি থাকতে পারে। এ মাসে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহও বয়ে যেতে পারে একাধিক দফায়। আবার এ মাসেই কালবৈশাখীও হতে পারে। ইতিমধ্যে উত্তর–পূর্বাঞ্চলের সিলেটের কয়েকটি স্থানে গত বৃহস্পতিবার রাতে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স লস য় স দশম ক ৯

এছাড়াও পড়ুন:

লবণ শ্রমিকদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়

“প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে কাজ করি। লবণ তুলি, বস্তা ভরি। কিন্তু যে মজুরি পাই, তা দিয়ে এক বেলার চাল-ডালও কেনা যায় না। লবণ চাষের কাজ করলেও আমাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়।” 

এ কথা কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার তাবলেরচর এলাকার লবণ শ্রমিক জাহেদ আলমের। হাজারো লবণ শ্রমিক দিনভর কড়া রোদে ঘাম ঝরালেও মিলছে না ন্যায্য মজুরি। নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন জাহেদ আলমের মতো শত শত লবণ শ্রমিক। 

উত্তর ধুরুংয়ের লবণ চাষি রশীদ আহমদ বলেন, “এবার সাড়ে ৫ কানি জমিতে লবণ চাষ করেছি। এই বছর আবহাওয়া ভালো ছিল, উৎপাদনও হয়েছে। কিন্তু দাম পড়ে যাওয়ায় আমরা লোকসানে যাচ্ছি। প্রতিমণ লবণের উৎপাদন খরচ পড়ে ৩৫০ টাকার মতো, অথচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৮৫ টাকায়। এই লোকসান শ্রমিকদের মজুরিতেও প্রভাব পড়েছে।”

তিনি জানান, মজুরি দিতে না পারায় একদিকে শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে চাষিরাও হতাশ হয়ে পড়ছেন।

আরমান হোসেন নামে আরেক শ্রমিক বলেন, “লবণের কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। লবণের দাম কম পেলেই চাষিরা আমাদের পারিশ্রমিকের ওপর লোকসান চাপিয়ে দেয়। এতে আমরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হই। এই অনিয়ম দূর হোক।” 

চাষিরা বলছেন, একদিকে জমির ইজারা, পলিথিন, লবণ পরিবহন, শ্রমিক মজুরি-সব খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে বাজারে সিন্ডিকেট করে দাম নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রতি মণ লবণে তারা ১৭০ টাকার মতো লোকসান গুণছেন। এই লোকসানের কারণে লবণ শ্রমিকরাও দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।

লেমশীখালীর চাষি বেলাল উদ্দিন আকাশ বলেন, ‘‘গত বছর এই সময় প্রতি মণ লবণ বিক্রি করেছি ৪৫০ টাকায়। এখন পাই ১৮৫ টাকা। এতে শ্রমিকের মজুরি দিতেও আমরা হিমশিম খাচ্ছি।” 

চাষি আবুল বশর ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘সিন্ডিকেট করেই দাম নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাতে লবণ উৎপাদন কমে যায়। পরে বিদেশ থেকে লবণ আমদানি করার সুযোগ তৈরি হয়। অথচ এতে মাঠের হাজারো শ্রমিকের জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে।”

মহেশখালী লবণ চাষি ঐক্য সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘‘মজুরি না পেয়ে অনেক শ্রমিক লবণের মাঠ ছাড়ছেন। এইভাবে চলতে থাকলে শ্রমিক সংকট হবে।”

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) কক্সবাজার লবণশিল্প উন্নয়ন প্রকল্পের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, “চাষিদের ন্যায্য দাম না পাওয়ার কারণে উৎপাদনে অনীহা দেখা দিচ্ছে। এর ফলে শ্রমিকদেরও চাহিদা কমে যাচ্ছে। বাজারে দাম কমে যাওয়ার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” 

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে কক্সবাজার জেলার সদর, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁও, টেকনাফ এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় প্রায় ৬৮ হাজার একর জমিতে লবণ চাষ হচ্ছে। গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব অঞ্চলে উৎপাদিত হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন লবণ। মৌসুম শেষে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন, যা দেশের বার্ষিক চাহিদার সমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ