কুষ্টিয়ায় আধিপত্য নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার খবর পাওয়া গেছে। কমিটি গঠন ও আধিপত্য নিয়ে বঞ্চিত অংশের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালানো হয় বলে জানা গেছে।

রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। এর মধ্যে ছয়জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালেও কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের সামনেই একজনকে পেটাতে দেখা যায়। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও সমন্বয়করা জানান, সদরের কমিটি গঠন ও কিছু বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। আজ রোববার সন্ধ্যার পর ৭ থেকে ৮টি ইজিবাইকে করে ৫০ থেকে ১০০ জনের মত ছেলে আসে। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। তারা কাটাইখানা মোড়ে আবরার ফাহাদ লাইব্রেরির সামনে আসে। এরপর তারা মিছিল নিয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের দিকে আসে। এ সময় তারা উস্কানিমূলক নানা স্লোগান দিতে থাকে। তাদের সবার হাতে নানা অস্ত্র ছিল।

স্থানীয়রা জানান, একটি মিছিল নিয়ে শতাধিক লোকজন আসে। তাদের বয়স অল্প। মশাল হাতে তারা মিছিল করে। এছাড়া আবরার ফাহাদ লাইব্রেরির সামনে অবস্থান নিয়ে নানা রকম বক্তব্য দেয়। এরপর তারা মিছিল নিয়ে সরকারি কলেজের দিকে চলে যায়। 

জেলা বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়ক কমিটির মুখপাত্র পারভেজ মোশাররফ জানান, সরকারি কলেজ মাঠে আমাদের সিনিয়র ভাইয়েরা ছিল। এ সময় তারা লাঠিসোটা নিয়ে কলেজ মাঠে এসে আমাদের ভাইদের ওপর হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হন ১০ থেকে ১৫ জন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে ৯ জন ভর্তি হয়েছে। জেলা বৈষম্যবিরোধী কমিটির সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান (২৪), নাগরিক কমিটির নেতা মধ্যে সুলতান মারুফ তালহা (৪৫) আলভী (২৫) ইব্রাহীম হোসেন (২৪), জুবায়ের হোসেন, আফ্রিদি (২২) নয়ন (২০) আলী আহসান মুজাহিদ (৪০), সোহান ও রেজোয়ান।  

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা.

হামিদুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকজন ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তার মাথায় চারটি আঘাত আছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে আহতদের। সেখানে বৈষম্যবিরোধী কমিটির অনেক শিক্ষার্থী জড়ো হয়েছে। তাদের মারমুখী অবস্থানে দেখা যায়। এ সময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় কয়েকজন। হামলায় বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কেউ কিছুই জানায়নি।

জেলা কমিটির আরেক সমন্বয়ক শ্রেষ্ঠ জানান, বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে আবরার ফাহাদের নামে একটি লাইব্রেরি করা হয়েছে। কিন্তু একটি উগ্রবাদী দল লাইব্রেরী ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। তারই অংশ হিসেবে একদল লোক লাঠিসোটা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। আমরা কাউকে চিনি না। 
রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে যান কুষ্টিয়া মডেল থানার (ওসি, তদন্ত) আব্দুল আলিম। এ সময় তিনি সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা হলেন। সাড়ে ৯টার দিকে সমন্বয়কদের বড় একটি অংশ হাসপাাতলে আসে। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় একজনকে বলতে শোনা যায়, মারের বদলে মার দেওয়া হবে। তারা হামলাকারীদের খুঁজতে থাকে। এ সময় রোগী ও লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত ফোর্স আনা হয়। 

কুষ্টিয়া মডেল থানার (ওসি, তদন্ত) আব্দুল আলীম বলেন, পরিস্থিতি শান্ত আছে। অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র ওপর কম ট র সরক র এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ