যে কোনো বয়সে হতে পারে ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অনেক রোগী হয়তো জানেন না দিনের পর দিন রোগটি পুষছেন। শরীরে এমন কতগুলো লক্ষণ দেখা যায়, যা আগেভাগেই জানান দেয় শরীরে ডায়াবেটিস বাসা বেঁধেছে কিনা। তবে অনেকেরই অনেক বিষয়ে ভুল ধারণা আছে। বারবার মুখ ও গলা শুকিয়ে এলে অনেকে ভাবতে শুরু করেন ডায়াবেটিস হয়েছে। ডায়াবেটিস ছাড়াও নানা কারণে এমন সমস্যা হতে পারে। গরমের সময় আমরা ত্বকের মাধ্যমে প্রচুর পানি হারাই, তাই শরীরে দ্রুত পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তখন মস্তিষ্কের বিশেষ অংশ সক্রিয় হয়ে ওঠে, পিপাসা পায়। মুখ-জিভ-গলা শুকিয়ে আসে। প্রচুর পিপাসা লাগে। এটা স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া। তাই খুব গরমে বা ঘাম হলে মুখ-জিভ-গলা শুকিয়ে আসাটাই স্বাভাবিক। কারও যদি এই শুষ্কতা বাড়াবাড়ি রকমের দেখা দেয়, যথেষ্ট পানি পান করার পরও মুখ বারবার শুকায়, তাহলে প্রথমেই লক্ষ্য করুন আপনি কোনো ওষুধ খাচ্ছেন কিনা। খুবই সাধারণ কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় মুখ ও গলা শুকায়। যেমন অ্যান্টিহিস্টামিন বা অ্যালার্জির ওষুধ এবং সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া বা স্মৃতিভ্রম রোগে ব্যবহৃত ওষুধ। বারবার তৃষ্ণা পেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়েছে কিনা অবশ্যই পরীক্ষা করা উচিত। দাঁত ও মুখগহ্বরের সাধারণ কিছু সমস্যায় মুখ শুকাতে পারে। যেমন দাঁত ক্ষয়, মাড়ির প্রদাহ। যাদের নাক বন্ধ থাকে ও সব সময় মুখ দিয়ে শ্বাস নেন, তাদেরও মুখ বারবার শুকিয়ে যায়। পক্ষাঘাতের পর রোগীর এ সমস্যা হতে পারে। লালাগ্রন্থি আক্রান্ত হয়, এমন কিছু রোগ, মুখমণ্ডলে রেডিও বা কেমোথেরাপির পর মুখ শুকানোর সমস্যা হতে পারে। অতি উদ্বেগ বা মানসিক চাপের রোগীদেরও মুখ শুকায়। মোটা মানুষ ঘুমের সময় নাক নয়, মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়, এতে গলা শুকায়।
মুখের শুষ্কতার প্রতিকারের জন্য পরামর্শ
lমুখগহ্বরের সুস্থতার জন্য দিনে অন্তত দু’বার ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করবেন। ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করবেন।
lসুগার ফ্রি ক্যান্ডি বা চুইংগাম চিবাতে পারেন। এতে লালা নিঃসরণ বাড়ে।
lপর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।
l যাদের গলা শুকায়, তারা কফি পান করবেন না। ধূমপানও নয়।
l শুকনো খাবার যেমন– ক্র্যাকার্স, টোস্ট, শুকনা রুটি, মুড়ি-চিড়া ইত্যাদি খেলে গলার শুষ্কতা বাড়বে। একটু আর্দ্র ও নরম খাবার বেছে নিন।
l নাক বন্ধ থাকলে তার চিকিৎসা করুন।v
[সাবেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, মেডিসিন বিভাগ, বারডেম]
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক সাফল্য
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্কের হার কমায় একে ঐতিহাসিক চুক্তি আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, “এটি সুস্পষ্ট এক কূটনৈতিক সাফল্য।”
শুক্রবার (১ আগস্ট) এক অভিনন্দন বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শুল্ক হার ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা আগে আরোপিত শুল্ক হারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। এর মাধ্যমে আমাদের আলোচকরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা ও সেটাকে আরো এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, আলোচকরা এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে নিরলসভাবে কাজ করে জটিল আলোচনাকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়েছেন। যেখানে শুল্ক, অশুল্ক ও জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। আলোচনার মাধ্যমে অর্জিত এই চুক্তি আমাদের তুলনামূলক সুবিধা সংরক্ষণ করেছে। পাশাপাশি, বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তাবাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি ও আমাদের মূল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ
কোন দেশে কত শুল্ক বসালেন ট্রাম্প
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আরো বলেন, এ অর্জন কেবল বাংলাদেশের বৈশ্বিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তিকে তুলে ধরে না; বরং এটি বৃহত্তর সম্ভাবনা, ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল, উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আজকের সাফল্য আমাদের জাতীয় দৃঢ়তা ও আগামী দিনের আরো শক্তিশালী অর্থনীতির সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির একটি শক্তিশালী প্রমাণ।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/রফিক