আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ৯ মাস ধরে আটক থাকার পর মার্কিন নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনিতা উইলিয়ামস পৃথিবীতে ফিরছেন। বুধবার ফেরার কথা থাকলেও মঙ্গলবারই পৃথিবীতে ফিরবেন তারা। 

গত বছরের জুন মাসে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন সুনিতা এবং বুচ। আট দিন পরই তাদের পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু যে যানে চড়ে তারা গিয়েছিলেন, সেই বোয়িং স্টারলাইনারে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। মহাকাশেই তারা আটকে পড়েন। আট দিনের মহাকাশ সফর ৯ মাসে দীর্ঘায়িত হয়। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে তাদের বাহক ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের মহাকাশযান। নাসার তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫৭ মিনিটে ফ্লোরিডা উপকূলে নামবেন তারা।

উভয় মহাকাশচারীই মঙ্গলবার পৃথিবীতে ফিরে আসবেন। আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি কিছুটা বদল করা হয়েছে। মহাকাশচারীদের পৃথিবীতে ফিরে আসার সময় কিছুটা এগিয়ে আনা হয়েছে বলে নাসা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

নাসার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই প্রত্যাবর্তন অভিযান সফল করার জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এই সময় আবহাওয়ার পরিস্থিতি ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্স ক্রু-৯ সুনিতা এবং বুচের পাশাপাশি মহাকাশচারী নিক হেগ এবং আলেকজান্ডার গরবুনভকেও পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনবে। তারা উঠেও পড়েছেন পৃথিবীতে ফেরার মহাকাশযানে। 

আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে আলাদা হওয়ার পর ধীরে ধীরে কক্ষপথ ছেড়ে পৃথিবীর দিকে নামবে ক্রু-৯ মহাকাশযানটি। মহাকাশযানটি এখন পৃথিবীতে ফিরে আসার জন্য তার ১৭ ঘণ্টার যাত্রা শুরু করবে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে ধীরে ধীরে নেমে আসবে। ফ্লোরিডা উপকূলে অবতরণ করবে এটি। রয়টার্স।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ