পৃথক মামলায় সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বুধবার এসব আদেশ দেন।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় করা সুজন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের আজ তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় পুলিশ। বিভিন্ন থানায় এখন পর্যন্ত তাঁর মোট ৫২ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

যাত্রাবাড়ী থানায় করা ওবায়দুল ইসলাম হত্যা মামলায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে আজ চার দিন করে রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

গত ১৯ আগস্ট দীপু মনিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিভিন্ন মামলায় এখন পর্যন্ত তাঁর মোট ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গত বছরের ২২ আগস্ট গ্রেপ্তার হন রাশেদ খান মেনন। এখন পর্যন্ত তাঁর মোট ৩৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গত ২৬ আগস্ট গ্রেপ্তার হন ইনু। তাঁর এখন পর্যন্ত মোট ৪০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

যাত্রাবাড়ী থানায় করা সায়েম হোসেন হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের আজ চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আবদুল্লাহ আল-মামুন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন গত ৩ সেপ্টেম্বর। এখন পর্যন্ত তাঁর মোট ৯২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মোহাম্মদপুর থানায় করা অর্ণব হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খানের আজ তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সাদেক খানকে গত ২৪ আগস্ট গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ। বিভিন্ন মামলায় তাঁর এখন পর্যন্ত মোট ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় এ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটার পর এই আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে পৃথক মামলায় তাঁদের রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: থ ন য় কর আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ