জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য বিক্রির অভিযোগে নরসিংদীর রায়পুরার উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের দুই অপারেটরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দালালের মাধ্যমে ও অর্থের বিনিময়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন ও হস্তান্তর করতেন তাঁরা। গত ছয় মাসে ওই দুজনের বিকাশ নম্বরে ১৪ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের স্ক্যানিং অপারেটর আশিকুল আলম ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নাহিদুল ইসলাম। গতকাল বুধবার দিনভর তদন্ত শেষে উপজেলার নির্বাচন কার্যালয়ে রাত আটটার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কর্মকর্তা দ্বীন মোহাম্মদ রাসেল।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের দুই অপারেটরের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে ও দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য বিক্রির অভিযোগ ছিল। এ ঘটনা তদন্তে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির প্রধান করা হয় কমিশনের আইডিইএ প্রকল্পের আইটি পরিচালক সাদ ওয়ায়েজ তানভীরকে। গতকাল তদন্ত কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের থানা-পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।

সাদ ওয়ায়েজ তানভীর জানান, অভিযুক্ত আশিক ও নাহিদুল এনআইডি তথ্য বিক্রির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাঁদের বিকাশ নম্বর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ৬ মাসে ১৪ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শুধু আশিকুল আলমের বিকাশ নম্বরেই ১২ লাখ টাকা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত দুই কর্মচারী বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে এনআইডি সংশোধন ও গোপন তথ্য হস্তান্তর করে এসব অর্থ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।

জানতে চাইলে রায়পুরার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দ্বীন মোহাম্মদ রাসেল জানান, ‘তাঁরা দুজন দালালের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য বিক্রি করছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গতকাল রাতেই আমি তাঁদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ জানান, এ ঘটনায় ওই নির্বাচন কর্মকর্তার দেওয়া লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। আজই তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত উপজ ল তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

না’গঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আড়াই কোটি টাকার অনুদান ও সঞ্চয়পত্র প্রদান 

জুলাই গণঅভ্যত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় প্রদত্ত আর্থিক অনুদানের চেক ও তিন শহীদ পরিবারের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ আর্থিক অনুদানের চেক ও  সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মানিত কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আহত জুলাই যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবার, শহিদ পরিবারের সদস্যগণ, ছাত্র প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।

এ সময় ৪ জন শহিদ পরিবারের সদস্যের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়। পাশাপাশি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন যোদ্ধাকে এককালীন ১ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর সন্তানরা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। তাঁদের সাহসিকতা, আত্মত্যাগ ও অদম্য চেতনা আমাদের জাতি পুনর্গঠনের অনুপ্রেরণা। আমরা বিশ্বাস করি, এই যোদ্ধাদের সাহসিকতা দিয়েই গড়ে উঠবে একটি নতুন, উদ্ভাসিত বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন-অগ্রগতির যাত্রায় আমরা তরুণ সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী ও সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করি। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই গড়ে তুলবে একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল নারায়ণগঞ্জ।

এদিকে এ অনুষ্ঠানটি শুধু অনুদান বিতরণ নয়, বরং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান জানানোর এক অনবদ্য প্রয়াস হয়ে উঠেছিল।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচন কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশ চূড়ান্ত: ইসি সানাউল্লাহ
  • না’গঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আড়াই কোটি টাকার অনুদান ও সঞ্চয়পত্র প্রদান 
  • জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের সাবেক ডিজির এনআইডি ব্লক