আদতে কী ঘটল বা কে কী বলল, এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো সে বিষয়ে আপনি কী ভাবছেন বা চিন্তা করছেন, সেটি। কে কী করল, বলল, কী ঘটল, তার ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে সেই ঘটনায় আপনার প্রতিক্রিয়া আপনার নিয়ন্ত্রণে। সবকিছু আপনার মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য নয়। সব ছোটখাটো বিষয়ে আপনার এনার্জি, চিন্তা, সময়ের অপচয় করবেন না। আপনি কীভাবে, কোন বিষয়ে, কতটা প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, সেটা আপনার সিদ্ধান্ত। তাই মস্তিষ্ককে প্রশিক্ষণ দিন। আপনার জীবনে যা কিছু আদতে গুরুত্বপূর্ণ, যা কিছু ইতিবাচক, যা কিছু সৃজনশীল, যা কিছু আপনাকে সামনে এগিয়ে নেয়, কেবল সেসবই স্থান দিন আপনার চিন্তায়।

আরও পড়ুনদুশ্চিন্তা বাড়ায় অ্যাসিডিটি১২ ডিসেম্বর ২০২০

১.

আপনি একটা ছোট্ট বিষয় নিয়ে মাথার ভেতরে যত বিশ্লেষণ করতে থাকবেন, বারবার পরিস্থিতিটা ভাবতে থাকবেন, সেটি ততই বড় আর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তাই নিজেকে প্রশ্ন করুন, যা নিয়ে ভাবছি, সেটা কি আমার নিয়ন্ত্রণে আছে? আমি এ মুহূর্তে কোন কাজে মনোযোগ দিতে পারি? এখন পর্যন্ত আজকের দিনের সবচেয়ে ইতিবাচক ঘটনা কী, অর্থাৎ আপনার মস্তিষ্ককে ভালো চিন্তার খোরাক জোগান।

২. কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ আর কোনটি নয়, বুঝতে পারেন না? নিজেকে প্রশ্ন করুন, যা নিয়ে ভাবছেন, সেটি কি ৭২ ঘণ্টা পরও প্রাসঙ্গিক? এক সপ্তাহ পরও আপনাকে প্রভাবিত করবে? যদি ‘না’ হয়, তাহলে সেটা নিয়ে ভাবনার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

৩. ‘ওভারথিঙ্কিং’ চক্রাকারে ঘুরতে থাকে মাথার ভেতর। সেই চক্র ভেঙে দিতে আপনি উঠে দাঁড়ান। খানিকটা হেঁটে আসুন। নিজেকে এক কাপ চা বানিয়ে খাওয়ান। স্ট্রেচিং করুন। হালকা ফ্রি হ্যান্ড এক্সাসাইজ করুন। গভীরভাবে শ্বাস নিন, ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এভাবে কয়েকবার করুন।

আরও পড়ুনআমি তেমন দুশ্চিন্তা করি না, তবু পালস রেট এত বেশি কেন? ০২ জুলাই ২০২২

৪. আপনার মস্তিষ্ককে কোনো একটা বিষয়ে চিন্তা করার জন্য সময় বেঁধে দিন। সুশৃঙ্খলভাবে চিন্তা করার জন্য বিষয়টি নিয়ে লিখতে বসুন। সেটি সমাধানে আপনার কী করণীয়, তা লিখে ফেলুন। আর যদি সেখানে আপনার কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকে, তাহলে সেটা নিয়ে ভাবনার কোনো মানে নেই। সম্ভাব্য সমাধান লেখা শেষ করে বিষয়টিকে চলে যেতে দিন।

৫. সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির কথা ভাবা বন্ধ করুন। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির পক্ষে জোর করে যুক্তি দাঁড় করানো বন্ধ করুন; বরং নিজেকে বলুন, যদি সবচেয়ে খারাপ কিছুও ঘটে, আপনি সেটা নিজের সেরাটা দিয়ে মোকাবিলা করবেন।

৬. যেকোনো পরিস্থিতি ‘জুম ইন’ না করে ‘জুম আউট’ করুন। পাঁচ বছর পরও কি আপনি এ অবস্থায় থাকবেন? নিশ্চয়ই না। পাঁচ বছর পরও কি আপনি একই বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন? প্রশ্নই আসে না। আপনি যখন একটু দূর থেকে দেখেন, তখন ছোটখাটো বিষয় আপনাকে দুশ্চিন্তায় ফেলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

৭. কোনো একটি সমস্যার দুটি দিক থাকে। ‘প্যানিক মুড’ আর ‘প্রবলেম সলভিং মুড’। আপনি বরং দ্বিতীয়টাতেই মনোযোগ দিন।

নিজের মানসিক শান্তির চেয়ে বড় কিছু নেই। সেটি যেকোনো মূল্যে রক্ষা করুন।

সূত্র: হ্যাবিটস অন পারপাস

আরও পড়ুনসকালে ঘুম ভাঙে দুশ্চিন্তা নিয়ে? জেনে রাখুন সমাধান২৭ নভেম্বর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত সবচ য় আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। 

শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।

২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।

এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ