পঞ্চগড়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মানহীন চা উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগে একটি চা প্রক্রিয়াকরণ কারখানাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার জগদল এলাকায় মলি টি ফ্যাক্টরিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই জরিমানা করেন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরানুজ্জামান।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, মানসম্পন্ন চা উৎপাদনের লক্ষ্যে নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর অংশ হিসেবে গতকাল বিকেলে সদর উপজেলার মলি টি ফ্যাক্টরিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। সেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মানহীন কাঁচা পাতা ব্যবহার করে চা উৎপাদন করা হয়। এসব চা পাতায় ফরেন পার্টিকেল (আগাছা) পাওয়া যায়। এ সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ অপরাধ স্বীকার করলে মালিক মখলেছার রহমানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে কারখানার মালিককে কঠোরভাবে সতর্ক করে তাঁর কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়।

চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ খান বলেন, অভিযান পরিচালনার সময় ওই কারখানায় শুধু চা পাতা ক্রয়ের ক্ষেত্রেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নয়, তাদের যেখানে চা উৎপাদন করা হয়, সেখানেও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ছিল। এ ছাড়া কারখানা কর্তৃপক্ষের ক্রয় করা চা পাতায় ফরেন পার্টিকেল অর্থাৎ চা পাতা ছাড়াও অন্য গাছ-গাছালির পাতা পাওয়া গেছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে সতর্ক করতে ওই কারখানাকে এর আগে অন্তত তিনবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ