ধর্ম অবমাননা করে পোস্ট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দু শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ৩ দাবি
Published: 20th, March 2025 GMT
হিন্দু ধর্মকে অবমাননা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সায়েমের দেওয়া ফেসবুক পোস্ট এবং যাকি আহম্মেদ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে সংখ্যালঘুদের ‘জবাই’ করার হুমকি দিয়ে দেওয়া পোস্টের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে আবু সায়েমের ছাত্রত্ব বাতিল ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
আজ বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে তাঁরা এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশে তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটও রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সমাবেশে ‘মানি না মানব না, ধর্মের অবমাননা’; এক দুই তিন চার সায়েমের বহিষ্কার, এমন স্লোগান দেন।
উল্লেখ্য, আবু সায়েম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ বালাই বলেন, ‘আমরা কি এ দেশের নাগরিক না? তাহলে কেন আমাদের সংখ্যালঘু হিসেবে বিবেচনা করা হয়? আমরা চাই আমরা যেন নাগরিকের সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
সমাবেশে বোটানি বিভাগের শিক্ষার্থী সুমি বিশ্বাসও একই দাবি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তি হোক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটিতে আর কেউ যেন ধর্ম অবমাননা করার সাহস না করে।’
তিন দফা দাবি
সমাবেশে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিকস বিভাগের শিক্ষার্থী সুদীপ্ত প্রামাণিক। তিনি বলেন, আবু সায়েম হিন্দু ধর্ম, দেবদেবী ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অশালীন, অবমাননাকর পোস্ট, কটূক্তি করেছেন। তাঁর এই ধর্ম অবমাননাকর মন্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশের সমগ্র হিন্দুধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীকে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করেছে। ঐতিহ্যবাহী বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষার্থীর এমন আচরণ সত্যিই নিন্দাজনক ও লজ্জাকর।
সাধারণ হিন্দু শিক্ষার্থীদের পক্ষে তিনটি দাবি তুলে ধরেন তিনি। দাবিগুলো হলো ১.
সুদীপ্ত জানান, আগামীকাল শাহবাগ থানায় এ বিষয়ে একটি মামলাও করা হবে। তবে এ ঘটনায় আবু সায়েম দুপুরে ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় ক্ষমা চান। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি আসলেই ভুল করে ফেলেছি, প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।’
৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
এই ঘটনায় আজ বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা এবং পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ প্রদানের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সান্টু বড়ুয়া, সদস্যসচিব হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের অতিরিক্ত পরিচালক মোস্তাক আহমেদ। এ ছাড়া বাকি তিনজন হলেন সহকারী প্রক্টর মুহা. রফিকুল ইসলাম, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল এবং প্রাধ্যক্ষ স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ সব ক
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক সাফল্য
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্কের হার কমায় একে ঐতিহাসিক চুক্তি আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, “এটি সুস্পষ্ট এক কূটনৈতিক সাফল্য।”
শুক্রবার (১ আগস্ট) এক অভিনন্দন বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শুল্ক হার ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা আগে আরোপিত শুল্ক হারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। এর মাধ্যমে আমাদের আলোচকরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা ও সেটাকে আরো এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, আলোচকরা এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে নিরলসভাবে কাজ করে জটিল আলোচনাকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়েছেন। যেখানে শুল্ক, অশুল্ক ও জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। আলোচনার মাধ্যমে অর্জিত এই চুক্তি আমাদের তুলনামূলক সুবিধা সংরক্ষণ করেছে। পাশাপাশি, বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তাবাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি ও আমাদের মূল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ
কোন দেশে কত শুল্ক বসালেন ট্রাম্প
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আরো বলেন, এ অর্জন কেবল বাংলাদেশের বৈশ্বিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তিকে তুলে ধরে না; বরং এটি বৃহত্তর সম্ভাবনা, ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল, উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আজকের সাফল্য আমাদের জাতীয় দৃঢ়তা ও আগামী দিনের আরো শক্তিশালী অর্থনীতির সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির একটি শক্তিশালী প্রমাণ।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/রফিক