বিদেশে খেলা ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের জাতীয় দলে আনতে চায় ভারত
Published: 22nd, March 2025 GMT
বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে হামজা চৌধুরীর আগমনে। ইংল্যান্ডের যুব দলে খেলা এই মিডফিল্ডার সিনিয়র পর্যায়ে খেলতে বেছে নিয়েছেন লাল-সবুজের জার্সি। আগামী মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে তার অভিষেকের মাধ্যমে দেশের ফুটবলে এক নতুন অধ্যায় যুক্ত হচ্ছে। বিদেশে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়ার এই উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে। এবার একই পথে হাঁটার পরিকল্পনা করছে ভারতও।
সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার (এআইএফএফ) সভাপতি কল্যাণ চৌবে জানিয়েছেন, তারা ভারতীয় বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নীতিমালা তৈরি করছে। তার মতে, এই উদ্যোগ ভারতীয় ফুটবলে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
দিল্লিতে এক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে চৌবে বলেন, ‘আমরা ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওসিআই (ওভারসিজ সিটিজেন অব ইন্ডিয়া) খেলোয়াড়দের প্রতিভা কাজে লাগাতে চাই। অনেক দেশ ইতোমধ্যে এই পদ্ধতি অনুসরণ করছে। আমরা এখন নীতিমালা তৈরির প্রক্রিয়ায় আছি। নতুন গাইডলাইন না আসা পর্যন্ত বর্তমান নিয়ম মেনেই দল নির্বাচন চলবে। তবে এই উদ্যোগ বিশেষ করে নাম্বার ৯ ও ১০ পজিশনের জন্য দীর্ঘমেয়াদে কাজে দেবে।’
বর্তমানে ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, কোনো দেশের হয়ে খেলতে হলে খেলোয়াড়ের সেই দেশের স্থায়ী আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট থাকতে হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদন করে, ফলে তাদের খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সহজে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। তবে ভারত দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকার না করায় ওসিআই খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে খেলতে হলে ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে হবে।
এর আগেও এমন একটি উদাহরণ রয়েছে। ২০১৩ সালে জাপানি বংশোদ্ভূত ইজুমি আরাতা জাপানের নাগরিকত্ব ছেড়ে ভারতের হয়ে খেলেছিলেন। এবার নতুন নীতিমালা হলে আরও অনেক প্রতিভাবান ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিদেশি খেলোয়াড় জাতীয় দলে সুযোগ পেতে পারেন—এমনটাই প্রত্যাশা করছে ভারতীয় ফুটবল কর্তৃপক্ষ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জ ত য় দল ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।