নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভার হাজী সোয়াদ আলী হকার্স মার্কেটের ফুটপাতে পছন্দের জামাকাপড় কিনছিলেন এক নারী। তিনি মাধবদী থানার মাঝেরচর এলাকা থেকে এসেছেন ঈদের পোশাক কিনতে। তাঁর স্বামী কৃষিকাজ করেন। তিনি বলেন, পরিবারে ছোট তিন ছেলে-মেয়ে রয়েছে। সাধ্যের মধ্যে যা কেনেন, তাতেই পরিবারের 
সবাই খুশি।
ঈদের সময় যত এগিয়ে আসছে, উপজেলার ফুটপাতের দোকানে এ নারীর মতো ক্রেতার আনাগোনা তত বাড়ছে। সেই সঙ্গে জমে উঠেছে বেচাকেনা। উপজেলার বিভিন্ন বিপণিবিতানের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকান এখন ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে জমজমাট। উপজেলার হাজী সোয়াদ আলী ও শাহজালাল মিয়া ফুটপাত মার্কেটে গিয়ে ক্রেতার ভিড় দেখা গেছে।
এক নারী উপজেলার ক্ষিরদাসাদী এলাকা থেকে এসেছেন পোশাক কিনতে। কয়েক বছর আগে তাঁর স্বামী মারা গেছেন। দুই মেয়ে এক ছেলে নিয়ে সংসার। সন্তানের কথা চিন্তা করে আর বিয়ে করেননি। কৃষিকাজ করে খরচ চালান। ফুটপাত থেকে থ্রিপিস, তিনটি লুঙ্গি, শাড়িসহ সন্তানের জন্য জামা কিনেছেন। তাঁর ভাষ্য, ‘আমাদের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার। রমজান মাসে সংসার খরচ বেড়েছে। তবুও সন্তান তো মানবে না। সাধ্যের মধ্যে কিনতে ফুটপাতে এসেছি। দামও কম।’
পরিবারসহ কেনাকাটা করতে কামরানীর চর থেকে এসেছিলেন আরেক নারী। তিনি বলেন, রোজার শেষ সময়ে ফুটপাতে অনেক ভিড় থাকে। তাই আগেই সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটা সেরে ফেলছেন। তিনি অবশ্য পোশাকের দাম বেশি বলে অভিযোগ করেন। দোকানি হাসিবুর রহমান শামীমের ভাষ্য, ক্রেতার চাহিদা মাথায় রেখে ভিন্ন ডিজাইনের পোশাক তুলেছেন। শুরুতে ভিড় কম থাকলেও রমজানের মাঝামাঝি ক্রেতা বেশি আসেন। এবার বিক্রি ভালো হবে বলে আশা তাঁর।
ফুটপাতের দোকানি মাসুম মিয়া, সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকে ফুটপাতে পোশাক কিনতে আসছেন। এর অধিকাংশই নারী। কম দামের মধ্যে ক্রেতার পছন্দ হয়, এমন বাহারি নকশা ও রঙের পোশাক রয়েছে ফুটপাতের দোকানে।
জানা গেছে, সদরের ডাকবাংলোর বিপরীতে এ বছর প্রথমবারের মতো ৫৩টি দোকান নিয়ে চালু হয়েছে শাহজালাল মিয়া ফুটপাত মার্কেট। এতে দোকানিদের ভাড়া দিতে হয় না। বেচাকেনা জমাতে ব্যবসায়ীদের বিনা ভাড়ায় দোকান বরাদ্দ দিয়েছেন মালিক। সরেজমিন দেখা গেছে, এখানে নারী ক্রেতার আনাগোনা বেশি। দোকানি ইমন মিয়া জানান, এখনও এ খবর অনেকে জানেন না। ঈদ সামনে রেখে ক্রেতার আনাগোনা বাড়ছে। বিক্রি নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। 
দোকানি আব্দুল লতিফ, আবুল কালামসহ অন্যরা এ ধরনের উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এখানে পোশাক কিনতে এসে মার্জিয়া আক্তার বলেন, ‘আমি জানতাম না এখানে ফুটপাতের মার্কেট রয়েছে। সদরে এসে জানতে পেরে সন্তানদের জন্য কিছু পোশাক কিনেছি। দামও সাধ্যের মধ্যে।’
আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, ঈদ সামনে রেখে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা যেন নির্বিঘ্নে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ আছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ প শ ক ফ টপ ত র দ ক ন প শ ক ক নত উপজ ল র পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

মাইক্রোসফটের বদলে গুগলের সার্ভার ব্যবহার করবে চ্যাটজিপিটি, কেন

চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের অন্যতম বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মাইক্রোসফট। আর তাই চ্যাটজিপিটি চালুর পর থেকেই মাইক্রোসফটের সার্ভার ব্যবহার করে আসছে ওপেনএআই। তবে এবার মাইক্রোসফটের ওপর নির্ভরতা কিছুটা কমাতে চাইছে প্রতিষ্ঠানটি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তির দৌড়ে গুগল ও ওপেনএআই দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও চ্যাটজিপিটির কার্যক্রম পরিচালনায় গুগলের ক্লাউড অবকাঠামো ও সার্ভার ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে ওপেনএআই।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চ্যাটজিপিটির মতো জেনারেটিভ এআই মডেল পরিচালনার জন্য গত মাসে গুগলের সঙ্গে চুক্তি করেছে ওপেনএআই। চুক্তির আওতায় গুগল তাদের ডেটা সেন্টার ও ক্লাউড সেবায় ‘অতিরিক্ত কম্পিউটিং সক্ষমতা’ দেবে ওপেনএআইকে। যদিও দুই প্রতিষ্ঠান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি ভবিষ্যতের এআই উন্নয়ন ও নির্ভরযোগ্য সেবা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

চ্যাটজিপিটি মূলত মাইক্রোসফটের অ্যাজুর ক্লাউড অবকাঠামোর ওপর নির্ভর করে পরিচালনা করা হয়। তাই ওপেনএআই এত দিন অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সার্ভার ব্যবহার করতে পারেনি। গত জানুয়ারি মাসে এই একচেটিয়া চুক্তির সীমাবদ্ধতা শেষ হওয়ার পর ওপেনএআই নতুন অংশীদার খুঁজতে শুরু করে। তবে চ্যাটজিপিটি পুরোপুরি গুগলের সার্ভার ব্যবহার করবে, না মাইক্রোসফট ও গুগলের সার্ভার যৌথভাবে ব্যবহার করবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।

সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে চ্যাটজিপিটি বড় ধরনের প্রযুক্তিগত বিভ্রাটের মুখে পড়েছে। আর তাই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট অবকাঠামোর ওপর পুরোপুরি নির্ভর না করে একাধিক ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করলে চ্যাটজিপিটির কার্যক্রম চালু রাখা অনেক সহজ হবে। এতে যেকোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা সিস্টেম সমস্যার ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগও মিলবে।

সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ

সম্পর্কিত নিবন্ধ