সেনাবাহিনী ভরসার প্রতীক, অযাচিত মন্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান
Published: 24th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জাতির আশা ভরসার প্রতীক উল্লেখ করে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে অযাচিত মন্তব্য, বিভ্রান্তি সৃস্টি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (রওশন) মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ।
তিনি বলেন, “দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা যাবে না। দেশের ক্রান্তিকালে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সবসময় দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। সেনাপ্রধানকে বিতর্কিত করার কোনো সুযোগ নেই।”
রবিবার (২৩ মার্চ) দলটির দপ্তর সম্পাদক আবুল হাসান আহমেদ জুয়েল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বানের কথা হয়।
কাজী মামুন বলেন, “৫ আগস্ট পট-পরিবর্তনের পর সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা সকলের মনে রাখা উচিত। তারা যদি মাঠে না থাকতো তাহলে দেশ আজ কোথায় দাঁড়াতো? সবকিছু মনে রাখতে হবে।”
সেনাবাহিনীকে কোনো অবস্থাতেই জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো যাবে না মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, “সেনানিবাস ও সেনাপ্রধানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলে, সেটা জাতির জন্য ভালো হবে না। কিছু মানুষের বক্তব্য শুনলে মনে হয় সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করালেই যেনো তারা ক্ষমতার মসনদে বসতে পারবে। এসব কথাবার্তা দেশকে অনিশ্চিত পথে ধাবিত করছে। আবেগের বশর্বর্তী হয়ে যারা সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চেষ্টায় লিপ্ত, তাদের কথাবার্তায় লাগাম দেওয়া উচিত। আমাদের মনে রাখতে হবে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এদেশের মানুষের আশা ভরসার প্রতীক।”
কাজী মামুন বলেন, “সশস্ত্রবাহিনী দেশ মাতৃকার সেবায় সবসময় নিয়োজিত। দেশবাসীর প্রয়োজনে সশস্ত্রবাহিনী কখনো সেনানিবাসে বসে থাকেনি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের ডাকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে থাকে। জাতীয় পার্টি মনে করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে যারা এই অপচেষ্টায় লিপ্ত, তারা মূলত দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে নিয়ে চক্রান্ত করছে।”
স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির এ ধরনের সকল অপতৎপরতা রুখে দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান তিনি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।”
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ঢাকা/এএএম/রফিক