আইপিএলের ইতিহাসে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জন্য মৌসুমের প্রথম ম্যাচ যেন দুঃস্বপ্ন হয়েই থাকে। ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত একবারও জয় দিয়ে আসর শুরু করতে পারেনি তারা। এবারও সেই ধারা বজায় থাকলো। রোববার (২৩ মার্চ) রাতে চীপকে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে হেরে আইপিএল ২০২৫ শুরু করলো পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।
এদিন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান তোলে। আফগানিস্তানের তরুণ স্পিনার নূর আহমেদের ঘূর্ণিতে তাদের ব্যাটিং ধসে পড়ে। জবাবে ৫ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের সহজ জয় পায় চেন্নাই সুপার কিংস।
নিউ জিল্যান্ডের তরুণ ব্যাটার রাচিন রবীন্দ্র দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। মিচেল স্যান্টনারের করা ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত করেন তিনি। ৪৫ বলে ৬৫ রানে অপরাজিত থাকেন রাচিন। তার আগে অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড় ২৬ বলে ৫৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস উপহার দেন।
এর আগে, মুম্বাইয়ের পক্ষে তিলক ভার্মা সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন (২৫ বলে)। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব করেন ২৬ বলে ২৯ রান, আর দিপক চাহার ১৫ বলে ২৮ রান যোগ করেন। তবে দলের বাকি ব্যাটাররা ছিলেন ব্যর্থ।
মুম্বাইয়ের সাবেক অধিনায়ক রোহিত শর্মার জন্য দিনটি আরও হতাশার ছিল। শূন্যরানে আউট হয়ে আইপিএলের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন তিনি। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ১৮ বার শূন্যরানে আউট হওয়ার তালিকায় এতদিন শীর্ষে ছিলেন দিনেশ কার্তিক ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এবার তাদের সঙ্গে যুক্ত হলেন রোহিতও।
চেন্নাইয়ের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন নূর আহমেদ। মাত্র ১৪ রান খরচায় ৪ উইকেট শিকার করেন এই আফগান রিস্টস্পিনার। এছাড়া পেসার খলিল আহমেদ নেন ৩ উইকেট। মুম্বাইয়ের বোলারদের মধ্যে ভিনেশ পাথুর ৩টি উইকেট তুলে নেন, তবে দলের হার এড়াতে তা যথেষ্ট ছিল না।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।