নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় ছাত্রদলের এক নেতাকে ‘হত্যার’ হুমকি দেওয়ায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে।

সোমবার (২৪ মার্চ) গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা মো. কামরুল হাসান আকাশ। তিনি নিজেই বাদী হয়ে গত শুক্রবার (২১ মার্চ) কবিরহাট থানায় জিডিটি করেন।

ছাত্রদল নেতা আকাশ কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নবগ্রামের আব্দুল গনির ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

আরো পড়ুন:

লেডি বাইকার এশার টার্গেট ছিল বিত্তশালীর স্ত্রী-মেয়ে: পুলিশ 

হিলিতে তেলের লরি খাদে পড়ে নিহত ২

অভিযুক্তরা হলেন- একই গ্রামের আবদুল আলী ওরফে ধনু মেম্বারের ছেলে ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব আব্দুল হাকিম সুজন (৩৮), মৃত বসু মাঝির ছেলে সফি উল্যাহ হেন্জু মাঝি, আব্দুল হাসেমের ছেলে আব্দুল মালেক ও মৃত মো.

চৌধুরী মিয়ার ছেলে মো. ইউনুছ।  

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এক নম্বর বিবাদী গত বছরের ৮ আগস্ট আকাশকে হত্যার জন্য সন্ত্রাসীদের নির্দেশ দেন। বাদী গোপনসূত্রে ওই ঘটনার একটি অডিও ক্লিপ পেয়েছেন। এরপর থেকে বিবাদী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাদীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। এ কারণে বাদী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব আব্দুল হাকিম সুজন অডিও ক্লিপের ভয়েস তার বলে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “যে কথা হয়েছে, সেটা ছাত্রদল নেতা আকাশকে নিয়ে নয়।”

ছাত্রদল নেতা মো. কামরুল হাসান আকাশ বলেন, “এলাকায় সুজনের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত। এছাড়া, এলাকাতে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমাকে পছন্দ করে। এটিও একটি কারণ হতে পারে। সুজন গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে এলাকায় চলাফেলা শুরু করেন। আমি সেটিরও প্রতিবাদ করেছি। এসব নিয়ে তিনি আমার ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন।” 

তিনি আরো বলেন, “বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে অথবা চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসার পথে যে কোনো সময় আমার ওপর তিনি হামলা করতে পারেন। কল রেকর্ড পাওয়ার পর আমি থানায় জিডি করেছি। আশা করি, কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

কবিরহাট থানার ওসি মো. শাহীন মিয়া বলেন, “ছাত্রদল নেতার পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল অভ য গ ছ ত রদল ন ত ন ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষে একের পর এক অঘোষিত ভাগাড়, বর্জ্য ফেলে পরিবেশদূষণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হাড়াতলী এলাকা। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার এই এলাকায় গেলে দূর থেকেই নাকে ভেসে আসে উৎকট দুর্গন্ধ। মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের পাশে চোখে পড়ে সারি সারি ময়লার স্তূপ। মহাসড়কের পাশ যেন হয়ে উঠেছে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়ে।

শুধু হাড়াতলী এলাকাই নয়; ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের বেশ কয়েকটি স্থানে এমন অঘোষিত ভাগাড় গড়ে উঠেছে। মহাসড়কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে কুমিল্লা জেলার অংশ। এর মধ্যে অন্তত ২০টি স্থানে একইভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে। কোথাও কোথাও সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মতো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে তাদের সংগ্রহ করা ময়লা ফেলছে। এতে মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে আবর্জনার স্তূপ দিন দিন বাড়তে, মহাসড়ক পরিণত হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়ে। এভাবে পরিবেশদূষণ বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লার সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে করতে না পারে, তাহলে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কাজটা কী? মানুষ তো ট্যাক্স দেয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য। এভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা একধরনের অপরাধও। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে এসব বিষয়ে কঠোর হওয়া দরকার।

হাড়াতলী এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, প্রায় দুই বছর আগে স্থানটিতে ময়লা ফেলা শুরু করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। এরপর সেটি ধীরে ধীরে পরিণত হয় ভাগাড়ে। দিন যত গেছে, ময়লা ফেলার জায়গাটির আকার ততই দীর্ঘ হয়েছে। এ কারণে ওই স্থান দিয়ে হেঁটে চলাচল করা বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন আশপাশের বসবাসকারীরা। ভাগাড়ের আশপাশে অন্তত তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ময়লার দুর্গন্ধে নাকাল।

এভাবে পরিবেশদূষণ বন্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করছি। তবে এ বিষয়ে মূল দায়িত্বটা পালন করতে হবে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে।মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব, উপপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ময়লা ফেলতে আমরা বারবার বাধা দিয়েছি, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। সিটি করপোরেশন সবুজে ঘেরা এলাকাটির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। এখনো প্রতিদিন ময়লা বাড়ছে। সিটি করপোরেশন বলে, তারা নাকি এখন ময়লা ফেলে না। তাহলে আমাদের প্রশ্ন, ময়লা কারা ফেলছে?’

স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, শ্রেণিকক্ষে বসা যায় না দুর্গন্ধের জন্য। একটু বাতাসেই নাকে ভেসে আসে ময়লার দুর্গন্ধ। কলেজে প্রবেশের সময় নাক চেপে ধরে আসতে হয়। এ ছাড়া পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।

জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাড়াতলীতে তিন মাস ধরে তাঁরা আবর্জনা ফেলছেন না। সিটি করপোরেশনের ফেলা ময়লাগুলো ভেকু দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এখন রাতের আঁধারে আশপাশের লোকজন এবং বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলছে। যারা ময়লা ফেলছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার প্রবেশমুখ বালুজুড়ি এলাকায় ময়লার ভাগাড়

সম্পর্কিত নিবন্ধ