পাবনা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের ২২ সদস্যের কমিটিতে ১১ জনই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ১১ নেতাকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার দুপুরে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাসির এই কমিটি অনুমোদন দেন। তবে অর্ধেকই ছাত্রলীগ নেতা থাকায় শুরু হয় সমালোচনা। এর পরিপেক্ষিতে রোববার মধ্যরাতে কমিটি স্থগিত করা হয়।

পাবনা মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের ওই কমিটি এবং ছাত্রলীগের বঙ্গবন্ধু হল শাখার আগের কমিটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শাখা ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান শুভ ছাত্রলীগের বঙ্গবন্ধু হল শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আমিমুল আহসান তনিম ছিলেন তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক, সহসভাপতি রাহুল রায় ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ আল ফায়াদ ছিলেন ছাত্রলীগের গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত ছিলেন আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম ছাত্রলীগেরও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ছিলেন সমাজসেবা সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাসরীফ আলম ছিলেন হল ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক। এ ছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বাধীন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাবিল, প্রচার সম্পাদক সামিন রাফিদ আরোহ ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

এ বিষয়ে হাসিবুল হাসান শুভ বলেন, ‘আমি কখনও ছাত্রলীগ করতাম না। কিন্তু ওই সময়ে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কলেজে যারা অ্যাকটিভ ছিল, তাদেরকেই কমিটিতে সরাসরি যুক্ত করে দিয়েছিল। আমার অনুমতি না নিয়েই তারা আমাকে ছাত্রলীগের হল কমিটিতে রেখেছিল।’

গঠনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্থগিত ছাত্রদলের কলেজ শাখা কমিটির সভাপতি সাগর মাহমুদ বলেন, ‘ওদের অজান্তেই ছাত্রলীগের হল কমিটিতে নাম ছিল। কিন্তু জুলাই আন্দোলনে তাদের অনেক ভূমিকা রয়েছে। তারা অনেক আগেই পদত্যাগ করেছে। সেগুলো নিয়ে আমাদের কাছে ক্লিয়ার ভিডিও আছে। এ নিয়ে সমস্যা নেই।’

রামেক ছাত্রদলের সভাপতি ছাত্রলীগ কর্মী
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) ছাত্রদলের ১১ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। গত রোববার ঘোষিত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে নূর ইসলামকে। তিনি রামেকের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। ২০২৩ সালে এমবিবিএস শেষ করেছেন তিনি। বর্তমানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করছেন। কমিটি ঘোষণার পর ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নূর ইসলামের অংশ নেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রামেক ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, নুরুন্নবী হল ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ছিলেন নূর। তিনি ওই হলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। ওই সময় ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মসূচিতেই অংশ নিতেন। তবে শেষ পর্যন্ত কমিটি না হওয়ায় পদ পাননি। তাঁর মতো ছাত্রলীগ কর্মীকে সভাপতি করায় আমরা হতাশ।

এ বিষয়ে নূর ইসলাম বলেন, ‘প্রথম বর্ষে থাকা অবস্থায় জোর করে ছাত্রলীগের কিছু প্রোগ্রামে আমাকে নেওয়া হয়েছিল। আমি কোনোদিনই ছাত্রলীগ করতাম না। আমি জুলাই আন্দোলনে রামেক থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। দলকে সুসংগঠিত করেছি। তাই কেন্দ্র আমাকে রামেক ছাত্রদলের সভাপতি করেছে।’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘কমিটি দেওয়ার পর ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে নূরের ছবিগুলো আমরাও পেয়েছি। রাতেই আমরা তদন্ত করে দেখেছি। তাঁকে জোর করে ছাত্রলীগের কয়েকটা প্রোগ্রামে নেওয়া হয়েছিল। পরে দীর্ঘদিন ধরেই সে আমাদের সঙ্গে ছিল।’
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন ছ ত রদল র কম ট ত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিএনপির দুই নেতাকে দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

চাঁদাবাজি, দখলদারি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই দুজনের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

বহিষ্কৃত নেতারা হলেন মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান লস্কর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। এর মধ্যে মতলব উত্তরের আবদুল মান্নান লস্করকে চাঁদাবাজির মামলায় গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবদুল মান্নান লস্কর ও আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে চাঁদাবাজি, দখলদারি ও মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইমাম হোসেন গাজীকেও দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।  

এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদের (মানিক) মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জেনেছেন। তবে এ ব্যাপারে  চিঠি এখনো পাননি। যেকোনো বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এটি অন্যান্য নেতার জন্যও একটি বার্তা ও শিক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রত্বের ভুয়া পরিচয় দেন সভাপতি, কমিটি ঘোষণার দিন শর্ট কোর্সে ভর্তি হন সম্পাদক
  • তিন বাহিনীর প্রধান ও দুই গোয়েন্দাপ্রধান নিয়োগের ক্ষমতা সরাসরি রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়ার প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের
  • ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা, নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই সভাপতি ও সম্পাদকের
  • মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার
  • প্রাথমিক পর্যায়ে ঐকমত্যের খসড়া আজকালের মধ্যে পাবে রাজনৈতিক দলগুলো: আলী রীয়াজ